ঢাকা শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫

মেয়াদ শেষ, কাজ হয়নি নির্ধারিত নকশায়

মেয়াদ শেষ, কাজ হয়নি নির্ধারিত নকশায়

নির্মাণাধীন বাড়ির সামনে চুনারুঘাটের আসাম পাড়ার বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রহমান সমকাল

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ | ১৮:০০ | আপডেট: ০১ মার্চ ২০২৩ | ০৬:২৬

সুনামগঞ্জ জেলা শহরের প্রাণকেন্দ্রে মহান মুক্তিযুদ্ধসহ নানা ঐতিহাসিক ঘটনার সাক্ষী পুরাতন সার্কিট হাউসকে স্মৃতি সংরক্ষণ প্রতিষ্ঠান হিসাবে অবিকল গড়ে তোলার কাজ থমকে গেছে। অভিযোগ রয়েছে, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের গাফিলতির কারণে যেটুকু কাজ হয়েছে তাতে জনআকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটেনি।

আগের আদলে থাকা সুনামগঞ্জ পৌর এলাকার টিনশেড পুরাতন সার্কিট হাউসে ১৯৫৬ সালের ২৬ নভেম্বর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রাতযাপন করেছিলেন। এর আগে ১৯২৪ সালে ভারতের স্বনামধন্য স্বাধীনতাসংগ্রামী সরোজিনী নাইডু এখানে রাতযাপন করেন। ঐতিহাসিক এই স্থাপনাটিকে স্থায়ীভাবে সংরক্ষণের জন্য সার্কিট হাউসটিকে মেরামত করে সংরক্ষণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। টিনশেড ঘরের সামনে স্থাপন করার কথা ছিল বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল। ক্যাম্পাসের ভেতরে কিছু পায়ে চলার পথ করারও কথা ছিল।

স্থাপনাটিকে অবিকল রেখে টেকসই সংরক্ষণ কাজের নির্ধারিত মেয়াদ শেষে হলেও সেই পরিকল্পনা মতো এর কাজ সম্পন্ন করা হয়নি বলে জানা গেছে।

পাবলিক সার্ভিস কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাদিকের প্রচেষ্টায় এই ঐতিহ্যবাহী স্থাপনাটি সংরক্ষণের উদ্যোগ নিয়েছিল স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)।  ৯৮ লাখ ৬০ হাজার ২৭০ টাকায় এর কাজ দেওয়া হয় মেসার্স আতিকুর রহমান নামে এক ঠিকাদারকে। গেল বছরের জুলাই মাসে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাজের মেয়াদ শেষ হলেও এখনও নকশা অনুসারে কাজ করা হয়নি। বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালও স্থাপিত হয়নি। করা হয়নি রঙের কাজ।

সেখানে গিয়ে দেখা যায়, পুরো সার্কিট হাউসে কেউ নেই। সামনের পকেট গেটে কাজ না হওয়ায় যে কেউ অনায়াসে ভেতরে ঢুকতে পারে। মূল হাউসের দরজাও খোলা। ঘরের মেঝের টাইলসের কাজ হয়েছে, দুটি পকেট সিঁড়ি ও সামনের সিঁড়িতে কাজ বাকি। সামনের সিঁড়ি অবিকল রাখার কথা থাকলেও এর নকশা পরিবর্তন করা হয়েছে। টেনিস গ্রাউন্ডের এবং সামনের গোল চত্বরের কাজও হয়নি। তাছাড়া পুরো এলাকা ময়লা আবর্জনায় ভরা।

সার্কিট হাউসের পাশের উকিলপাড়ার বাসিন্দা কল্লোল তালুকদার চপল বলেন, ‘ঠিকাদার বা নির্মাণকারী সরকারি প্রতিষ্ঠান কেউই মানুষের আবেগের বিষয়টিকে গুরুত্ব দিচ্ছেন না। তাঁরা সামনের সিঁড়িও অবিকল করেননি। বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালও নির্মাণ করা হয়নি। প্রায় এক কোটি টাকায় কী কাজ হলো, সেটাই বুঝলাম না।’

শহীদ মুক্তিযোদ্ধা জগৎজ্যোতি পাবলিক লাইব্রেরির সাবেক সাধারণ সম্পাদক সালেহ আহমদ জানান, পুরাতন সার্কিট হাউসের নানা স্মৃতি বলে বেড়ান সুনামগঞ্জের বীর মুক্তিযোদ্ধারা। এই প্রতিষ্ঠানটি হুবহু সংরক্ষণ করার দাবি আছে। যারা এখানে কাজ করছেন তাদের অবশ্যই সুনামগঞ্জবাসীর আবেগকে গুরুত্ব দিতে হবে।

কাজের দেখভালের দায়িত্বপ্রাপ্ত এলজিইডির প্রকৌশলী হেলাল আহমদ জানান, কাজ শেষ করার জন্য ঠিকাদারকে চাপ দেওয়া হচ্ছে।

তবে ঠিকাদার আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘বেশিরভাগ কাজ শেষ, অন্য কাজও অবশ্যই শেষ করা হবে।’

এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘পুরাতন সার্কিট হাউস সংরক্ষণের বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে।

আরও পড়ুন

×