চাকরি হারালেন মানবিক পুলিশ ইউনিটের সেই শওকত

শওকত হোসেন
চট্টগ্রাম ব্যুরো
প্রকাশ: ২৭ এপ্রিল ২০২৩ | ১৩:২০ | আপডেট: ২৭ এপ্রিল ২০২৩ | ১৫:১৬
গত ১৬ এপ্রিল সিএমপির বন্দর বিভাগের উপকমিশনার (বন্দর) শাকিলা সোলতানা তাঁর চাকরিচ্যুতির আদেশে সই করেন। বিষয়টি আজ বৃহস্পতিবার জানাজানি হয়। তবে শওকতের দাবি, মানবিক কাজ করতে স্বেচ্ছায় পুলিশের চাকরি ছেড়ে দিয়েছেন তিনি।
শওকত হোসেন নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলার বাসিন্দা। তিনি ২০০৫ সালে কনস্টেবল হিসেবে বাংলাদেশ পুলিশে যোগ দেন। স্বজনহীন অসুস্থ মানুষের সেবা দিয়ে আলোচিত হন তিনি। রাষ্ট্রপতি পুলিশ পদকও (পিপিএম) পান শওকত।
শওকতের চাকরিচ্যুতির আদেশে বলা হয়, তার বিরুদ্ধে টানা ৭১ দিন কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকার অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে। এ ছাড়াও অভিযুক্ত (শওকত হোসেন) শারীরিক ও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত, পারিবারিক ও ব্যক্তিগত সমস্যা থাকায় এবং বেওয়ারিশ মানুষ নিয়া মানবিক কার্যক্রমে ব্যস্ত থাকায় পুলিশ কনস্টেবল পদে চাকরি করা তার পক্ষে সম্ভব নয় এমন বক্তব্য লিখিতভাবে কর্তৃপক্ষকে জানানোর পর তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়।
শাকিলা সোলতানা বলেন, শওকত ৭১ দিন কর্মস্থলে অনুপস্থিত ছিলেন। এ কারণে তাঁকে বারবার নোটিশ দেওয়া হয়। কিন্তু তিনি কোনো জবাব দেননি। পরে তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হয়েছে। সেখানেও কোনো শুনানিতে অংশ নেননি তিনি। বিভাগীয় মামলার তদন্ত শেষে তদন্ত কর্মকর্তা তাঁকে চাকরিচ্যুতির সুপারিশ করেছেন। নিয়ম অনুযায়ী শওকতকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। তিনি সব সময় কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকতেন। চট্টগ্রাম রেঞ্জে বদলির পর তাঁকে কুমিল্লায় পোস্টিং দেওয়া হয়। সেখানেও তিনি ৩৭২ দিন অনুপস্থিত ছিলেন।
নগর পুলিশের সহকারী কমিশনার (কোতোয়ালি জোন) অতনু চক্রবর্তী বলেন, বিভাগীয় মামলার তদন্ত পাওয়ার পর শওকতের বক্তব্য জানতে দফায় দফায় নোটিশ পাঠানো হয়েছে। কিন্তু তিনি হাজির হননি। মামলা শেষ করতে পরে স্থানীয় থানা ও চট্টগ্রাম রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজির মাধ্যমে তাঁকে অনেক কষ্ট করে হাজির করা হয়েছে। সর্বশেষ মার্চে তিনি সহকারী কমিশনারের কার্যালয়ে যান। সেখানে ৭১ দিন অনুপস্থিতির কোনো যৌক্তিক কারণ দেখাতে পারেননি। শওকত স্বীকার করেছেন, তাঁর পরিচালিত বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের কারণে তিনি কর্মস্থলে হাজির হতে পারেননি। তাঁর বিরুদ্ধে কর্মস্থলে অনুপস্থিতির অভিযোগ প্রমাণ হওয়ায় সে অনুযায়ী ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রতিবেদন দাখিল করা হয়।
এ বিষয়ে শওকত হোসেন সমকালকে বলেন, ‘চাকরিতে থেকে মানবিক কাজ করতে সমস্যা হচ্ছে। এ কারণে আমি নিজ থেকেই চাকরি ছেড়ে দিয়েছি। তাছাড়া আমাকে কুমিল্লা জেলায় বদলি করা হয়। সেখানে আমি যাইনি। আমাকে চট্টগ্রামে রাখতে বলেছিলাম।’