ঢাকা সোমবার, ০৭ জুলাই ২০২৫

বিকল্প ছাড়াই বেইলি ব্রিজ সংস্কার

বিকল্প ছাড়াই বেইলি ব্রিজ সংস্কার

সিরাজদীখানের তালতলা ডহরী খালের বেইলি সেতুতে রোববার সংস্কার কাজের দৃশ্য (বাঁয়ে) ও নিচে ট্রলারে করে খাল পার হচ্ছেন এলাকার লোকজন - সমকাল

ইমতিয়াজ বাবুল, সিরাজদীখান (মুন্সীগঞ্জ)

প্রকাশ: ২২ মে ২০২৩ | ০৩:৩৭ | আপডেট: ২২ মে ২০২৩ | ০৩:৩৭

জনসাধারণের যাতায়াতের বিকল্প ব্যবস্থা ছাড়াই গুরুত্বপূর্ণ একটি বেইলি ব্রিজ সংস্কার করছে মুন্সীগঞ্জ সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ। গত ১৬ মে সিরাজদীখানের তালতলা ও টঙ্গিবাড়ীর কুণ্ডেরবাজার এলাকায় ডহরী (গৌরগঞ্জ) খালের ওপর নির্মিত সেতুর সংস্কারের কাজ শুরু হয়, যা চলবে ১৬ জুন পর্যন্ত। ফলে সেখান দিয়ে সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ করা দেওয়া হয়েছে। এতে দুই উপজেলার হাজারো মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

ডহরী খালের ওপর নির্মিত সেতুটি পড়েছে মুন্সীগঞ্জ-বেতকা-নিমতলা সড়কে। এর এক পাশে পড়েছে সিরাজদীখানের মালখানগর ইউনিয়নের তালতলা। অন্য পাশে টঙ্গিবাড়ীর কুণ্ডেরবাজার। জনদাবির মুখে প্রায় ২ যুগ আগে ৯৮ মিটার দীর্ঘ সেতুটি নির্মাণ করা হয়। ফলে আশপাশের এলাকায় সড়ক যোগাযোগে বড় পরিবর্তন আনে। মুন্সীগঞ্জ সদরের সঙ্গে সিরাজদীখান ও শ্রীনগর উপজেলার সরাসরি সড়ক যোগাযোগ স্থাপিত হয়। স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত আলু ও অন্যান্য কৃষিপণ্য সহজে বাজারজাত করার সুবিধা পান কৃষকরা। এর ইতিবাচক প্রভাব পড়ে স্থানীয় অর্থনীতিতে।

তবে দীর্ঘদিনেও এখানে পাকা সেতু নির্মাণে উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। সওজ সূত্র জানায়, ঝুঁকি নিয়ে দিনে অন্তত দুই হাজার যানবাহন সেতুটি ব্যবহার করে। তবে সরু হওয়ায় এক পাশ দিয়ে পারাপার শুরু হলে, অন্য পাশে বন্ধ রাখতে হয়। যে কারণে এখান দিয়ে যাতায়াতে অনেক সময় বিপাকেও পড়তে হয় জনসাধারণকে।

মুন্সীগঞ্জ সওজের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী ফাহিম রহমান বলেন, চট্টগ্রামের কারখানায় এই বেইলি ব্রিজের নানা অংশ তৈরি হচ্ছে। এসব দিয়ে সেতুটি সংস্কার করে সচল করবেন। এ জন্য এক মাস সময় লাগবে।

ওই সেতু দিয়ে চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অন্যদের মতো বিপাকে পড়েছেন ইজিবাইকচালক শফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, এ সড়কে দৈনিক প্রায় ১ হাজার ২০০ টাকা আয় করতেন। তবে সেতু বন্ধ হয়ে যাওয়ায় যাত্রী তেমন পাওয়া যায় না। বর্তমান অবস্থায় ইজিবাইকের দৈনিক জমার (মালিকের ভাড়া) টাকাও ওঠে না।

পেশাগত কাজে প্রতিদিন মুন্সীগঞ্জ যেতে হয় সিরাজদীখানের অ্যাডভোকেট পলাশ মণ্ডলকে। তিনি বলেন, সেতু বন্ধ হওয়ায় বাড়তি ৩০ কিলোমিটার পথ ঘুরতে হয়।

গতকাল রোববার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সেতুর নিচ দিয়ে দুটি ট্রলারে করে যাত্রী পারাপার করতে দেখা যায়। যাত্রীপিছু ৫ টাকা ও প্রতি মোটরসাইকেলের জন্য ৩০ টাকা করে নেওয়া হচ্ছে। সিরাজদীখানের মধ্যপাড়া থেকে প্রতিদিন টঙ্গিবাড়ীর বালিগাঁও বাজারের দোকানে যেতে হয় মো. জিসানের। তিনি বলেন, মোটরসাইকেলে করে যাতায়াত করেন। এখন খাল পার হতে আসা ৩০ টাকা এবং যাওয়ায় ৩০ টাকা বাড়তি খরচ হয়।

মালখানগর ইউপি চেয়ারম্যান সানজিদা আক্তার বলেন, ‘সিরাজদীখান ও শ্রীনগর উপজেলাবাসীকে মুন্সীগঞ্জ সদরে যেতে এ সেতুটি ব্যবহার করতে হয়। এটি দিয়ে ভারী যানবাহন চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে। যে কারণে সংস্কারের কাজ চলছে। আশা করছি, দ্রুতই এটি চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে।’

জনসাধারণের চলাচলের সুবিধার্থেই সাময়িক এ দুর্ভোগ বলে মন্তব্য করেন মুন্সীগঞ্জ সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী দেওয়ান আবুল কাশেম মোহাম্মদ নাহীন রেজা। তিনি বলেন, আগে জোড়াতালি দিয়ে চালু করা সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। এতে মানুষকে বিপাকে পড়তে হতো। এখন সেতুটির মাপে বড় একটি বেইলি চট্টগ্রামে তৈরি করা হচ্ছে। খণ্ড খণ্ড করে এখানে স্থাপন করা হবে। এটি সম্পন্ন হলে বাসও চলাচল করতে পারবে।

আরও পড়ুন

×