ইভিএমে ভোটে কেউ খুশি, কেউ বেজার

হারুন অর রশীদ ও তানজীম আহমেদ, খুলনা থেকে
প্রকাশ: ১২ জুন ২০২৩ | ১৮:০০ | আপডেট: ১২ জুন ২০২৩ | ২৩:১৯
খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট দিয়ে অনেকে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন। তবে আঙুলের ছাপ না মেলা ও বোতাম বিড়ম্বনায় অনেকে হয়েছেন বিরক্ত। মেশিনে ত্রুটি থাকায় বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছে ভোটারদের।
বেশ কিছু কেন্দ্রে ভোট গ্রহণে ধীরগতিতে দুর্ভোগে পড়েন ভোটাররা। অনেককে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইসলামাবাদ কলেজিয়েট স্কুলকেন্দ্রে দেখা গেছে নারী ভোটারদের দীর্ঘ লাইন। প্রতিটি ভোট কক্ষের সামনে অপেক্ষা করছেন ভোটাররা। ওয়ার্ডটির বিসমিল্লাহ মহল্লা এলাকার বাসিন্দা জাহানারা বেগম বলেন, ‘তাড়াতাড়ি ভোট দিয়ে বাড়ি যাব বলে ৭টায় এসেছি। ৯টা বাজে, এখনও সামনে ৯ জন দাঁড়ানো। লাইন এগোচ্ছে না।’ একই মহল্লার বাসিন্দা শাহিনুর বেগম বলেন, ‘দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতে কোমর ব্যথা হয়ে গেছে। এমন অবস্থা জানলে বিকালে আসতাম।’
ইসলামাবাদ কলেজিয়েট স্কুলকেন্দ্রে মোট ভোটার ২ হাজার ৯৪। গতকাল প্রথম ঘণ্টায় সকাল ৯টা পর্যন্ত ভোট পড়েছে ৬৬টি। অন্যান্য কেন্দ্র ঘুরে ভোটদানে ধীরগতি লক্ষ্য করা গেছে। নগরীর ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের সরকারি এম এম সিটি কলেজ কেন্দ্রে ভোটার ১ হাজার ৬৩০। প্রথম ঘণ্টায় সেখানে ভোট পড়েছে মাত্র ২৭টি। খালিশপুর মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় কেন্দ্রে ১ ঘণ্টায় ভোট পড়েছে ২৪টি। সেখানে মোট ভোটার ২ হাজার ১৯ জন।
মেশিন নষ্ট, ভোটারদের ঘুরে আসতে বললেন কর্মকর্তা
সকাল ৯টা ৪০ মিনিটে হাতেম আলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোটারদের লম্বা লাইন ছিল। কিন্তু ভোটকেন্দ্রের তিনটি বুথেই ভোটার দেখা যায়নি। লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা ফুলি বেগম (৭০) বলেন, ‘ভোট দিতি গিয়ে দেখি মেশিন নষ্ট।
অনেক চিষ্টা করিও ভোট দিতি পারিনি। কর্মকর্তারা বলেছেন একটু ঘোরাঘুরি করি আসেন, মেশিন ঠিক হলি আবার ডাকা হবে।’
একই অবস্থা দেখা গেছে নগরীর ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের পল্লীমঙ্গল মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে। ভোটাররা জানান, একজনের ভোট দিতে ১০ থেকে ১২ মিনিট লাগছে। লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা অনেকেই ক্ষুব্ধ হয়ে ফিরে যাচ্ছেন। লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা তমা খাতুন বলেন, ‘ভোট দিতি এত দেরি হবে জানলে আসতাম না। আমার পায়ের সমস্যা। দাঁড়িয়ে থকতি কষ্ট হয়।’ তবে অন্য অনেকেই স্বাচ্ছন্দ্যে ভোট দিয়েছেন বলে জানান।
হাতেম আলী বিদ্যালয় কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার বিপ্লব কুমার মল্লিক বলেন, সকাল ৯টার দিকে একটি বুথে ইভিএমে সমস্যা দেখা দেয়। সেটি ঠিক করার চেষ্টা চলছে। তবে অন্য বুথগুলোতে স্বাভাবিকভাবেই ভোট চলছে। ইভিএম সমস্যার কারণে দেরি হওয়ায় বয়স্ক ভোটারদের কষ্ট হবে ভেবে তাঁদের গাছের ছায়ায় অপেক্ষা করতে বলা হয়েছে বলে জানান তিনি।
প্রথম ভোট ইভিএমে দিয়ে খুশি তরুণরা
জীবনের প্রথম ভোট ইভিএমে দিতে পেরে খুশি হয়েছেন তরুণ ভোটাররা। সকাল ১০টার দিকে নগরীর ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের খুলনা কলেজিয়েট স্কুল কেন্দ্রে ভোট দিতে আসেন মোহাম্মদ সজীব নামের নতুন ভোটার। তিনি বলেন, ‘জীবনের প্রথম ভোট ইভিএমে দিলাম। অল্প সময়ে খুব সহজেই ভোট দিতে পেরেছি। আগে বাড়ির মুরব্বিরা ভোট দিত আমরা শুধু দেখতাম, এবার নিজেই ভোট দিতে পেরে খুব ভালো লাগছে।’
সাব্বির নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘ব্যালটে ভোট হলে দিতে আসতাম না। কারণ ব্যালটের ভোট তো আগে অনেক দেখেছি। ইভিএমের ব্যাপারে আমি এবং আমার বন্ধুদের বেশ আগ্রহ আছে। তাই বন্ধুরা মিলে ভোট দিতে এসেছি।’
কেসিসি নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. আলাউদ্দিন জানান, ইভিএমে ভোট গ্রহণ যে সহজ, সেটা আবারও প্রমাণ হয়েছে।
- বিষয় :
- ইভিএমে ভোটে কেউ খুশি
- কেউ বেজার
- ইভিএমে ভোট