ঢাকা শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫

আ’লীগ প্রার্থী বাদে অন্যরা সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে শঙ্কিত

আ’লীগ প্রার্থী বাদে অন্যরা সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে শঙ্কিত

গোপালদীর জালাকান্দি এলাকায় হালিম শিকদার ও তানভীর আহম্মেদ এবং নগর ডৌকাদি এলাকায় মনিরুজ্জামান ও আবুল মনসুর বৃহস্পতিবার গণসংযোগ করেন - সমকাল

সফুরউদ্দিন প্রভাত, আড়াইহাজার (নারায়ণগঞ্জ)

প্রকাশ: ১৫ জুন ২০২৩ | ১৮:০০

নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলার গোপালদী পৌরসভায় প্রথমবারের মতো ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) নির্বাচন হতে যাচ্ছে আগামী ২১ জুন। মেয়র, কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর প্রার্থীরা প্রচারে ব্যস্ত সময় পার করছেন। মেয়র পদে আওয়ামী লীগ প্রার্থী ও বর্তমান মেয়র এম এ হালিম শিকদারকে (নৌকা) প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হচ্ছে নিজ দলের তিন নেতা (স্বতন্ত্র প্রার্থী) ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের (হাতপাখা) প্রার্থীর সঙ্গে।

আওয়ামী লীগ প্রার্থী নির্বাচনী পরিবেশ নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করলেও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে শঙ্কিত অন্য প্রার্থীরা। তাঁদের অভিযোগ, ভোটের আগে প্রচার পর্বে সব প্রার্থীর জন্য সমান সুযোগ তৈরি হয়নি। সম্ভাব্য নির্বাচনী এজেন্টদের ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে। ফলে ভোটের দিনের পরিস্থিতি নিয়ে তাঁদের মধ্যে সন্দেহ ও সংশয় বাড়ছে।

রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, গোপলদী পৌরসভায় মোট ভোটার ৩৫ হাজার ৬০৬ জন। তাঁদের মধ্যে পুরুষ ১৮ হাজার ৫৬৬ জন এবং নারী ১৭ হাজার ৭২ জন। মেয়র পদে লড়ছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী এম এ হালিম শিকদার (নৌকা), স্বতন্ত্র প্রার্থী তানভীর আহম্মেদ (নারকেল গাছ), গোপালদী বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল মনসুর (জগ), গোপালদী পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনির (মোবাইল) ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের গোলাম ফারুক মোল্লা (হাতপাখা)।

এ ছাড়া মহিলা কাউন্সিলরের তিনটি পদে ১৩ জন ও সাধারণ ওয়ার্ডের ৮টি কাউন্সিলর পদে ২৩ প্রার্থী লড়ছেন। ৭ নম্বর ওয়ার্ডে ইতোমধ্যে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় কাউন্সিলর পদে বেসরকারিভাবে জয়ী ঘোষণা করা হয়েছে মো. দুলাল মিয়াকে।

গতকাল বৃহস্পতিবার পৌরসভার বিভিন্ন পয়েন্টে মেয়র প্রার্থীরা প্রচারণায় নামেন। বিকেলে স্বতন্ত্র প্রার্থী আবুল মনসুর (জগ প্রতীকের) হোগলাকান্দি, ঋষিপাড়া, লক্ষ্মীবরদী এলাকায় যান। তিনি ভোটারদের মন জয়ে পৌরসভাকে নতুন করে সাজাতে নানা প্রতিশ্রুতি দেন। এ সময় তিনি সংবাদকর্মীদের বলেন, সুষ্ঠু ভোট আয়োজন নিয়ে ভোটারদের মধ্যে শঙ্কা রয়েছে। তা দূর করার পরিবেশ সরকারকেই সৃষ্টি করতে হবে।

একই দিন ১ নম্বর ওয়ার্ডের মোল্লারচর এলাকায় প্রচারে যান স্বতন্ত্র প্রার্থী তানভীর আহম্মেদ (নারকেল গাছ প্রতীক)। তিনি অভিযোগ করেন, ১ জুন রাতে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী হালিম সিকদার ৩০০ থেকে ৫০০ সশস্ত্র লোক নিয়ে শুরুতে তাঁর কারখানায় ও পরে বাড়িতে হামলা করেন। এতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পরে তাঁর বাড়ি ও আশপাশের এলাকায় সশস্ত্র মহড়াও দেওয়া হয়। তাঁদের বাধা দিতে গিয়ে তাঁর তিন কর্মী গুরুতর আহত হন। এ ঘটনায় তিনি রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করে প্রতিকার পাননি। এর পর থেকে সরকারদলীয় প্রার্থী ও তাঁর সমর্থকরা নানা কৌশলে তাঁকে এবং তাঁর সমর্থকদের হুমকি-ধমকি দিচ্ছেন। ভোটকেন্দ্রের এজেন্ট বুথে যেন তাঁর পক্ষে কেউ না থাকেন, এমন হুঁশিয়ারিও দেওয়া হচ্ছে। তিনি সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে শঙ্কিত।

একই রকম শঙ্কা প্রকাশ করেন মনিরুজ্জামান মনির (মোবাইল প্রতীক)। তিনি বলেন, নৌকা প্রতীকের সমর্থকরা তাঁকে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াতে হুমকি দিচ্ছেন। এ ছাড়া তাঁর সমর্থকদের কেন্দ্রে যেতে দেওয়া হবে না– এমন হুমকিও দিচ্ছেন। এসব বিষয় রিটার্নিং কর্মকর্তাকে জানিয়েছেন।

তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেন আওয়ামী লীগ প্রার্থী হালিম শিকদার। তিনি বৃহস্পতিবার সকালে লক্ষ্মীবরদী এলাকায় প্রচারে যান। সেখানে গণমাধ্যমকে বলেন, গোপালদী পৌরবাসী তাঁকে ভালোবেসে ভোট দিয়ে পরপর দু’বার বিপুল ভোটে নির্বাচিত করেছেন। এলাকায় তিনি যে উন্নয়নমূলক কাজ করেছেন, এর প্রতিদান হিসেবে এবারও সবাই তাঁকে ভোট দিয়ে বিজয়ী করবেন।

নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মোহাম্মদ বশির আহমেদ বলেন, নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু করতে পুলিশ, র‍্যাব, বিজিবিসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পর্যাপ্ত সদস্য মাঠে থাকবেন। ভোট নেওয়া হবে ইভিএমে। প্রতি কেন্দ্রে একজন করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট থাকবেন। এ ছাড়া ৯টি কেন্দ্রেই নির্বাচন কমিশনের (ইসি) একজন করে পর্যবেক্ষক থাকবেন।

আরও পড়ুন

×