ঢাকা বৃহস্পতিবার, ০৩ জুলাই ২০২৫

রাকিব-অর্জুনদের চোখে নতুন স্বপ্ন

রাকিব-অর্জুনদের চোখে নতুন স্বপ্ন

রাজবাড়ীর বিনোদপুর লোকোশেড এলাকায় নিজ দোকানের সামনে রাকিব শেখ - সমকাল

রাজবাড়ী প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২৭ জুন ২০২৩ | ১৮:০০

হতদরিদ্র পরিবারের সন্তান ২২ বছরের তরুণ রাকিব শেখ। চলাফেরা করতে পারেন না। বাড়ির সামনে একটি টং দোকানে অল্প কিছু বিস্কুট, চানাচুর, সিগারেট বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করেন। তিনি রাজবাড়ী শহরের বিনোদপুর লোকোশেড এলাকার মৃত মোস্তফা শেখের ছেলে। রাকিবের পাশে দাঁড়িয়েছে টিম রাজবাড়ী ফাউন্ডেশন। রাকিবের চলাফেরা করার জন্য দিয়েছে একটি হুইলচেয়ার। ব্যবসা করার জন্য দোকানে তুলে দিয়েছে ছয় হাজার টাকার বিভিন্ন পণ্য। রাকিবের তাই আনন্দের শেষ নেই। যেন সে নতুন করে জীবন পেয়েছে। আনন্দাশ্রু তাঁর মা তৈয়বা বেগমের চোখেও।

এ ছাড়া সংগঠনটির উদ্যোগে একই এলাকার রাজকুমার সাহার শারীরিক প্রতিবন্ধী শিশু অর্জুনকেও দেওয়া হয়েছে একটি হুইলচেয়ার। তার মা ঝর্ণা সাহা ছেলেকে লেখাপড়া শিখিয়ে মানুষ করার স্বপ্ন দেখছেন। গতকাল মঙ্গলবার আনুষ্ঠানিকভাবে এসব তাঁদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।

রাকিব শেখ জানান, তাঁর বাবা নেই। চার ভাই, দুই বোন তাঁরা। চলাফেরা করতে পারেন না। ইচ্ছা থাকলেও লেখাপাড়া করতে পারেননি। বাড়িতে সব সময় শুয়ে-বসে থাকতে হয়। এক বছর আগে তাঁর মা তাঁকে দোকানটি করে দেন। বাড়ি থেকে দোকানে আসেন বহু কষ্টে। দিনভর দোকানেই থাকেন। কিছু বেচাকেনা হয়।

হুইলচেয়ারটি পাওয়ায় তাঁকে আর কষ্ট করে কষ্ট করে দোকানে আসতে হবে না। দোকানে যে পণ্য দিয়েছে তাতে তার খুবই আনন্দ হচ্ছে।

অন্য প্রতিবন্ধী শিশু অর্জুন সাহার মা ঝর্ণা সাহা জানান, তাঁর ছেলের বয়স ১০ বছর। ছোটকাল থেকে সে চলাফেরা করতে পারে না। এ কারণে ছেলেটাকে স্কুলেও ভর্তি করাতে পারেননি। তাঁর স্বামী ভাড়ায় অটোরিকশা চালিয়ে যা আয় করেন, তা দিয়ে কেনোমতে সংসার চলে। ছেলের চিকিৎসা করানোর সামর্থ্য তাঁর নেই। হুইলচেয়ার পাওয়ায় এখন স্কুলে ভর্তি করাবেন।

তিনি জানান, তাঁরা রেলের জায়গায় ঘর তুলে বসবাস করছেন। শুনেছেন এখান থেকে তাঁদের তুলে দেওয়া হবে। তাহলে আর যাওয়ার জায়গা থাকবে না। এ আরেক দুশ্চিন্তা।

টিম রাজবাড়ী ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবীব জানান, রাকিব ও অর্জুন সম্পর্কে জানতে পেরে তাঁরা উদ্যোগী হয়ে পাশে দাঁড়িয়েছেন। রাকিবের দোকানে কোনো মালপত্র ছিল না। তার দোকানে পর্যাপ্ত মালপত্র তুলে দিয়েছেন। দোকান থেকে যা আয় হবে তা দিয়ে তার সংসার ভালোভাবে পরিচালনা করতে পারবে বলে মনে করেন তিনি।

আরও পড়ুন

×