ঢাকা শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫

বীরনিবাস নির্মাণেও অনিয়ম

বীরনিবাস নির্মাণেও অনিয়ম

ফাইল ছবি

শাহিনুর রহমান শাহিন, ফুলবাড়ী (কুড়িগ্রাম)

প্রকাশ: ২২ মার্চ ২০২২ | ১৮:০০

ফুলবাড়ী উপজেলার বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ঘর (বীরনিবাস) নির্মাণেও অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। নিম্নমানের ইট ও বালুর সঙ্গে অল্প পরিমাণ সিমেন্ট ব্যবহার করায় এলাকাবাসী কাজ বন্ধ করে দিয়েছে। এ নিয়ে তারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছেও অভিযোগ করেন। তবে অভিযোগের পর নতুন করে ঘর তৈরি করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস সূত্রে জানা গেছে, অসচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের আবাসন প্রকল্পের আওতায় ১০টি ঘর নির্মাণের বরাদ্দ আসে। এর বিপরীতে এক কোটি ৪০ লাখ টাকা দেওয়া হয়। প্রতিটি ঘরের জন্য ব্যয় ধরা হয় ১৪ লাখ ১০ হাজার টাকা। ২৯ ফুট দৈর্ঘ্য ও ২৩ ফুট প্রস্থের ঘরগুলোতে একটি করে রান্নাঘর, দুটি বেড রুম ও দুটি টয়লেট থাকছে। বিধি অনুযায়ী ঘর নির্মাণকাজ পেয়েছে কুড়িগ্রামের মেসার্স মোস্তফা ট্রেডার্স। তিনি গত বছর ৭ নভেম্বর কাজ শুরু করেন। এরই মধ্য ১০টি ভবনের মধ্যে চারটির কাজে অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। নিম্নমানের ইট-বালু ব্যবহার হয়েছে নির্মাণকাজে। বিষয়টি নজরে আসার পর ঘর নির্মাণকাজ বন্ধ দেন বীর মুক্তিযোদ্ধারা। এরই মধ্যে কাজ বন্ধের তিন মাস পেরিয়ে গেছে। এখনও কাজ ধরেনি সংশ্নিষ্ট ঠিকাদার। এদিকে ঘর নির্মাণের কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল ৪ ফেব্রুয়ারি। দ্রুত কাজ করার জন্য একাধিকবার চিঠি দেওয়া হয়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে।

বীর মুক্তিযোদ্ধা জকার হাটের সৈয়দ আলী জানান, বালু ফিলিং ও সলিং ছাড়াই ঢালাই করা হয়েছে। খোয়াগুলো নিম্নমানের। এ ঘর নির্মাণ হলেও ভেঙে পড়ার আশঙ্কা ছিল্‌।

একই কথা বলেন বড় ভিটার এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেন। তিনি বলেন, নতুন করে ঘর নির্মাণ করতে হবে। এ জন্য কাজ করা ভবনের গাঁথুনি তিন ফুট ভেঙে ফেলতে হবে।

উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার মজিবর রহমান বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ আলী, আনোয়ার হোসেন, আমির আলী ও শাহাজান আলীর ঘর নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ করেছেন। ঘটনাস্থলে গিয়ে অনিয়মের সত্যতা পাওয়া গেছে।

ঘর নির্মাণ কমিটির প্রতিনিধি সদস্য উপজেলা উপসহকারী প্রকৌশলী জুলফিকার আলী জুয়েল জানান, ভবনে কলাম ও নিলটেন দিয়ে কাজ করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। পরবর্তীতে ঠিকাদারের লোকজন কীভাবে কাজ করেছে তা আমার জানা নেই।

ঠিকাদার গোলাম মোস্তফা বলেন, কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তিনটি বাড়ির কাজ নতুন করা হবে। পুরোনো বাড়ির ওয়াল ভেঙে ১০ ইঞ্চি কলাম করে ছয়টি পিলার দিয়ে কাজ করা হবে। বর্তমানে রডের দাম বেশি। এর পরও শিগগিরই কজ শুরু করা হবে।

উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তা সবুজ কুমার গুপ্ত বলেন, সমস্যা চিহ্নিত করে ঠিকাদারকে কাজ শুরু করতে বলা হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুমন দাস জানান, ঠিকাদারকে সঠিকভাবে কাজ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এরপর অনিয়ম করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আরও পড়ুন

×