ঢাকা রবিবার, ০৬ জুলাই ২০২৫

অবশেষে শুরু হচ্ছে ঐতিহাসিক ক্বীন ব্রিজের সংস্কার

অবশেষে শুরু হচ্ছে ঐতিহাসিক ক্বীন ব্রিজের সংস্কার

ঐতিহাসিক ক্বীন ব্রিজ

সিলেট ব্যুরো

প্রকাশ: ২৭ জুলাই ২০২৩ | ১৬:৫৬ | আপডেট: ২৭ জুলাই ২০২৩ | ১৬:৫৬

৭০০ বছরের বেশি সময় আগে সুরমা নদীর পাড়ে টিলাঘেরা বর্তমান সিলেট নগরীর গোড়াপত্তন। সেই সময় থেকেই ভারতবর্ষের এ জনপদে যাতায়াতের একমাত্র উপায় ছিল নৌপথ। পরে ১৯৩৬ সালে এই নদীর ওপর নির্মিত হয় দৃষ্টিনন্দন একটি ইস্পাতের সেতু। এর মধ্য দিয়ে সিলেট শহরের সঙ্গে অখণ্ড ভারতের অন্যান্য অঞ্চলের সড়ক যোগাযোগ সৃষ্টি হয়।

সেতুটি নির্মাণের সময় সিলেট নগরী ছিল আসাম প্রদেশের অধীনে, সেখানকার গভর্নর ছিলেন স্যার মাইকেল ক্বীন। ১ হাজার ১৫০ ফুট দীর্ঘ ও ১৮ ফুট প্রশস্ত এই সেতুটি তাঁর নামেই নামকরণ করা হয় ক্বীন ব্রিজ। তৎকালীন রেলওয়ে বিভাগের নির্মাণ করা প্রায় শতবর্ষী এ সেতুর এখন ভগ্নদশা। এটি প্রথম ক্ষতিগ্রস্ত হয় ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি বাহিনীর হাতে। বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পর সেতুটির ভেঙে ফেলা একাংশ সাময়িক এবং পরে ১৯৭৭ সালে পূর্ণাঙ্গভাবে সংস্কার করা হয়। এর পর বড় ধরনের কোনো সংস্কার বা মেরামত করা হয়নি। 

কয়েক বছর আগে সিটি করপোরেশন সেতুটিতে রং করেছিল। ঐতিহাসিক এ সেতু টিকিয়ে রাখতে বিভিন্ন সময় দাবি জানিয়ে আসছে সিলেটবাসী। রেলওয়ে বিভাগের তত্ত্বাবধানে নির্মিত এ সড়ক সেতুতে রেল, সড়ক ও জনপথ বিভাগের (সওজ) মালিকানা রয়েছে। সর্বশেষ সিটি করপোরেশনের প্রস্তাবনার পরিপেক্ষিতে ২০১৯ সালে সংস্কারের উদ্যোগ নেয় সওজ। ২০২০ সালে ২ কোটি ৮১ লাখ টাকা বরাদ্দও করা হয়। কিন্তু রেল ও সওজ বিভাগের সমন্বয়হীনতার কারণে সংস্কার কাজ শুরু করা যায়নি। সর্বশেষ ঘোষণা দিয়ে গত মঙ্গলবার কাজ শুরুর কথা ছিল। কিন্তু রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ প্রস্তুত না থাকায় সংস্কার কাজ শুরু হয়নি। 

তবে শিগগির কাজ শুরু হবে বলে জানিয়েছেন সওজ সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি সমকালকে জানান, আগামী শনিবার রেলের লোকজন পরিদর্শন করবেন। এর পর কাজ শুরু হবে। সংস্কারকালে ব্রিজটি প্রায় দুই মাস বন্ধ থাকবে। রং ছাড়াও কিছু পাটাতন ও লোহা পরিবর্তন করা হবে বলে জানান নির্বাহী প্রকৌশলী। 

সুরমা নদীতে নির্মিত ক্বীন ব্রিজটি সিলেটের ঐতিহ্য বহন করে আসছে। সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের আমলে সেতুটির পূর্ব পাশে শাহজালাল সেতু এবং পরবর্তী সময়ে পশ্চিম দিকে আরও দুটি সেতু নির্মাণ করা হয়। ক্বীন ব্রিজের পাশে ১৮৭২ সালে পৃত্থিমপাশা জমিদার আলী আমজাদের ঘড়িও নির্মাণ করা হয়। পাশাপাশি দুটি ঐহিত্য পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সেই সঙ্গে ওই এলাকায় নদীর দু’পাশে সৌন্দর্যবর্ধন করায় প্রতিদিন পর্যটকরা ভিড় করেন। 

সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী নুর আজিজুর রহমান জানান, ঝুঁকি বিবেচনায় অনেক আগে থেকেই ব্রিজটিতে ভারী যান চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। পথচারী ও হালকা যানবাহনের জন্য ব্রিজটি উন্মুক্ত রাখা হয়েছে। কাজ শুরু হলে চলাচল বন্ধ রাখা হবে। এদিকে রেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ব্রিজ সংস্কারের জন্য যাবতীয় মালপত্র সিলেটে আসতে শুরু করেছে। আগামী সপ্তাহে কাজ শুরু করা যাবে।

আরও পড়ুন

×