জাতীয় পার্টির দুই কমিটি, বিভক্ত নেতাকর্মীরা

আমিরুল হক, নীলফামারী
প্রকাশ: ০৪ আগস্ট ২০২৩ | ১৮:০০
সৈয়দপুরে জাতীয় পার্টির (জাপার) বর্ধিত সভায় উপজেলা কমিটির আহ্বায়ক ঘোষণা করা হয়েছিল সিদ্দিকুল আলম সিদ্দিককে। সে কমিটি বিলুপ্ত না করে এক মাস পর ৫১ সদস্যবিশিষ্ট আরেকটি কমিটি অনুমোদন দেয় জেলা কমিটি। এতে আহ্বায়ক করা হয় জয়নাল আবেদীনকে। এ নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা তৈরি হয়েছে। নেতাকর্মীরা বিভক্ত হয়ে পড়েছেন দু’ভাগে। এতে দলীয় কার্যক্রমও স্থবির হয়ে পড়েছে।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, সিদ্দিকুল আলমের সঙ্গে মূল দল ও অঙ্গসংগঠনগুলোর বড় অংশের নেতাকর্মী রয়েছেন। প্রবীণ নেতা জয়নাল আবেদীনের সঙ্গেও অনেক নেতাকর্মী আছেন, যাঁরা নিজেদের ত্যাগী ও সুবিধাবঞ্চিত বলে মনে করেন। এই দু’পক্ষের দ্বন্দ্বে স্থবির হয়ে পড়েছে দলের সাংগঠনিক কার্যক্রম। শুধু দিবসভিত্তিক আলাদা কর্মসূচি পালন করছেন নেতাকর্মীরা।
জানা গেছে, শহরের শহীদ ডা. আব্দুল মজিদ সড়কে জয়নাল আবেদীনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দলীয় কার্যালয় হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। তবে সেখানে তাঁর পক্ষের নেতাকর্মী বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া যান না। গেলেও তিনি যখন থাকেন না তখন যান। অন্যদিকে সিদ্দিকুল আলমের ব্যক্তিগত খরচে শহরের শেরেবাংলা সড়কে রেলের জায়গা দখল করে জাতীয় পার্টির কার্যালয় নির্মাণ করা হয়েছিল। সম্প্রতি তা উচ্ছেদ করে দিয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ। ফলে দলটির এখন কোনো অস্থায়ী বা স্থায়ী কার্যালয় নেই।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দলের এক নেতার ভাষ্য, ‘জাতীয় পার্টি সরকারের অংশীদার একটি দল। এখানে নেতৃত্বের প্রতিযোগিতা আছে। আমরা একই মতাদর্শের অনুসারী হলেও ভেতরে ভেতরে পদ-পদবির জন্য গ্রুপিং-লবিং থাকবে। তবে জটিলতা নিরসন না করলে জাতীয় পার্টি এ আসন হারাবে।’
নেতাকর্মীরা জানান, গত বছরের ১৬ জুন শহরের আদিবা কমিউনিটি সেন্টারে বর্ধিত সভায় জেলা কমিটির সদস্য সচিব একেএম সাজ্জাদ পারভেজ সৈয়দপুর উপজেলা কমিটিতে সিদ্দিকুল আলম সিদ্দিককে আহ্বায়ক করে একটি কমিটি ঘোষণা করেন। এক মাস পর গত বছরের ২০ জুলাই জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান ও স্থানীয় সংসদ সদস্য আহসান আদেলুর রহমানের সুপারিশে ৫১ সদস্যবিশিষ্ট আরেকটি কমিটির অনুমোদন দিয়েছে জেলা কমিটি। এতে জয়নাল আবেদীনকে আহ্বায়ক ও জিএম কবীর মিঠুকে সদস্য সচিব করা হয়।
পরে সিদ্দিকুল আলমকে যুগ্ম আহ্বায়কের পদ দেওয়া হয়েছে। কমিটি হয়েছে জেলার আহ্বায়ক এন কে আলম চৌধুরী ও সদস্য সচিক এ কে এম সাজ্জাদ পারভেজের স্বাক্ষরে। ৪৫ দিনের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু বছর পেরিয়ে গেলেও তা আর পূর্ণাঙ্গ হয়নি।
সিদ্দিকুল আলম সিদ্দিকের ভাষ্য, দলের বর্ধিত সভায় তাঁকে আহ্বায়ক হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। এরপর তৃণমূলে দল গঠনে কাজ করছেন তিনি। পরে আর কোনো কমিটি জেলা থেকে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে কিনা, তাঁর জানা নেই।
জয়নাল আবেদীন বলেন, বর্ধিত সভায় সিদ্দিকুল আলমের নাম ঘোষণা করা হলেও দলের এক-তৃতীয়াংশ নেতাকর্মী তা মেনে নেননি। পরে সে কমিটি বিলুপ্ত করে তাঁকে আহ্বায়ক করে কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। অথচ সিদ্দিকুল আলম নিজেকে এখনও আহ্বায়ক দাবি করছেন।
এ বিষয়ে জেলা জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক এন কে আলম চৌধুরী বলেন, সৈয়দপুর উপজেলা কমিটি নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্ব আছেন। বিভিন্ন কারণে দল সাংগঠনিক প্রক্রিয়ায় পরিচালনা করা সম্ভব হয় না। বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানান তিনি।
- বিষয় :
- জাতীয় পার্টি
- কমিটি
- বিভক্ত
- বিভক্তি