টানা বৃষ্টিতে ২০ গ্রামে জলজট

সীতাকুণ্ড (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৬ আগস্ট ২০২৩ | ১৮:০০ | আপডেট: ০৭ আগস্ট ২০২৩ | ০০:২৮
সীতাকুণ্ডে চার দিন ধরে টানা বৃষ্টি হচ্ছে। ভারী বর্ষণে অন্তত ২০টি গ্রাম জলাবদ্ধ হয়ে পড়েছে। পয়োনিষ্কাশনের নালা ভরাট করে স্থাপনা গড়ে তোলায় এ বছর সবচেয়ে বেশি জলজট সৃষ্টি হয়েছে। এতে ভোগান্তিতে রয়েছে বহু মানুষ। বৃষ্টিপাতে পাহাড় ধসে প্রাণহানির আশঙ্কা রয়েছে। এ কারণে পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসকারী লোকজনকে আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে বলছেন স্থানীয় চেয়ারম্যানরা।
গতকাল রোববার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ১৩৪ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। বাঁধের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বৃষ্টির পানি। জঙ্গলভাটিয়ারী আশ্রয়ণের কিছু স্থানে জলজট তৈরি হয়েছে।
ভাটিয়ারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নাজিম উদ্দিন জানান, পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসকারী হাজারো পরিবারকে ভাটিয়ারী হাই স্কুলে আশ্রয় নিতে বলা হয়েছে। তাঁর ইউনিয়নের অধিকাংশ গ্রামে জলজট তৈরি হয়েছে।
জানা গেছে, উপজেলার সব ইউনিয়নের অধিকাংশ গ্রামে জলাবদ্ধতা। সবচেয়ে বেশি জলজট পৌর শহরে। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে পানি চলাচলে নালা ছিল। এই নালা ভরাটের কারণে জলজট তৈরি হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞ চিকিসৎক টি কে নাথ বলেন, পয়োনিষ্কাশনের নালা ভরাট করে দিয়েছে সিকিউরসিটিসহ কয়েকটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। ফলে সামান্য বৃষ্টিতেও জলাবদ্ধতা দেখা দেয়।
ঢাকা আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ শাহিনুল ইসলাম বলেন, রোববার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সীতাকুণ্ডে ১৩৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে; যা দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত। এর আগে গত শনিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় ১৪১ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছিল; যা দেশের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত।
কুমিরা ইউপি চেয়ারম্যান মোরশেদ হোসেন চৌধুরীর ভাষ্য, তাঁর ইউনিয়নের পাঁচটি গ্রামে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। এসব গ্রামে পানি নিষ্কাশনের নালা বন্ধ করে নতুন নতুন বাড়ি নির্মাণ করা হয়েছে। ফলে পানি নিষ্কাশিত হতে না পেরে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে।
ইউপি চেয়ারম্যান এম রেজাউল করিম বাহার জানান, তাঁর ইউনিয়নের প্রায় সব রাস্তা পানির নিচে। পাঁচটি গ্রামে অপরিকল্পিত বাড়িঘর নির্মাণের কারণে জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে।
বারৈয়ারঢালা ইউপি চেয়ারম্যান রেহান উদ্দিন বলেন, সহস্রধারা প্রকল্পের পানি বাঁধের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সেখানে থাকা ঘেরের অনেক মাছ ভেসে গেছে। ইউনিয়নের একাধিক স্থানে জলজট তৈরি হয়েছে।
ইউএনও শাহাদাত হোসেনের ভাষ্য, পৌর শহরের অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নালা ভরাট করে স্থাপনা নির্মাণ করেছে। সেগুলো এক সপ্তাহের মধ্যে ভেঙে দিতে বলা হয়েছে। যেগুলো বৃষ্টি থামলে পানি নেমে যাবে। তবে দুই-একটি গ্রামে জলাবদ্ধতা হতে পারে।