ঢাকা রবিবার, ০৬ জুলাই ২০২৫

ছড়া আর খালই কাল হলো লােহাগাড়ায়

ছড়া আর খালই কাল  হলো লােহাগাড়ায়

বন্যায় বিধ্বস্ত লোহাগাড়ার আমিরাবাদ পুরোনো বিওসি সড়ক সমকাল

কাইছার হামিদ, লোহাগাড়া (চট্টগ্রাম)

প্রকাশ: ১২ আগস্ট ২০২৩ | ১৮:০০ | আপডেট: ১৩ আগস্ট ২০২৩ | ০৭:১১

চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলায় বড় নদী নেই। ডলু খালের ঢল দুই কূল প্লাবিত করলেও অতীতে তেমন বড় বন্যা হয়নি। অথচ এবার ভয়াবহ বন্যায় ডুবেছে উপজেলার অধিকাংশ সমতল এলাকা। মূলত রেললাইনের কারণে পানির স্বাভাবিক প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হওয়ায় এই বন্যা বলে স্থানীয়দের ধারণা। ভারী বর্ষণে উপজেলার ডলু, টংকাবতী, হাঙ্গর, হাতিয়া, কুলপাগলি, বোয়ালিয়া খালসহ বিভিন্ন ছড়ার পানিতে প্লাবিত হয়েছে আশপাশের এলাকা।

জেলার দুর্গত মানুষের জন্য ১০ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, ‘আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি মানুষকে সহায়তা করতে। উপজেলা প্রশাসন থেকে সহযোগিতা করা হচ্ছে। জনপ্রতিনিধিদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’

জানা যায়, উপজেলার ৯ ইউনিয়নের মধ্যে ৮ ইউনিয়নের চিত্র ভয়াবহ। খালের বাঁধ ভেঙে লোকালয়ে ঢুকে পড়েছে পানি। দুর্গত মানুষের মাঝে খাবার সংকট দেখা দিয়েছে। গ্রামীণ সড়কগুলো ক্ষতবিক্ষত হয়ে গেছে। জানা গেছে, পদুয়া ইউনিয়নের হাঙ্গর খালের ভাঙনে এলাকায় অনেক ঘরবাড়ী বিলীন হয়ে যাচ্ছে। পদুয়ার সওদাগরপাড়া, শাহপাড়া, ইয়াছিনপাড়া, বাড়ইপাড়া, দরগাহ মুড়া এলাকায় ভাঙন তীব্র হয়েছে। হাঙ্গর খালের দুই পাড়ের ৫০ ঘর বিলীন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। জঙ্গল পদুয়ায় মুফতি আবুল হোসেনের বাড়ি সংলগ্ন সেতু ধসে পড়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। অবৈধ ও অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলনের ফলে হাঙ্গর খালের এই সেতু ঝুঁকিতে পড়েছে।

চুনতি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জয়নুল আবেদীন জানান, চুনতি এলাকায় হাতিয়া খালের বিভিন্ন স্থানে ভাঙন তীব্র। এলাকার খয়রাতি খালে একটি সেতু ভেঙে গেছে। সাতগড় ছড়ায়ও ঘরবাড়ি তলিয়ে যাচ্ছে। বন্যায় কাইজবিলা রোডের (কাঁচা সড়ক) ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সাতগড় ছড়া খালের পাড়, সাতগড় ছড়া মরাডলুর খালের তীর ভেঙে যাচ্ছে। পারাঙ্গা লামা সড়ক, মীরকিল সড়ক, হিন্দুপাড়া প্লাবিত হয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

আধুনগর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান  মো. নাজিম উদ্দিন গত ৫০ বছরে এমন পানি দেখেননি বলে জানান তিনি। ঘাটিয়া পাড়া, চৌধুরী পাড়া, মিয়া পাড়া, মেহের আলী সিকদার পাড়া, ছেন্দের পুনি বড়ুয়া পাড়ায় পানিবন্দী রয়েছে স্থানীয়রা। তিনি শুকনো খাবার বিতরণ করছেন এলাকায়।

লোহাগাড়া ও সাতকানিয়া সীমানার আমিরাবাদ এলাকায় ডলু, টংকাবতী ও বাইরখালের সংযোগস্থলে ভাঙছে বলে এলাকাবাসী জানিয়েছেন। আমিরাবাদ ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইউনূছ জানিয়েছেন, পার্বত্য অঞ্চল থেকে নেমে আসা টংকাবতী খাল বিভিন্নস্থানে ভাঙছে। বিলীন হচ্ছে মানুষের চলাচল পথ ও বসতভিটা। রহমানিয়া সুখছড়ী এলাকায় ২০ ঘর পানির নিচে রয়েছে বলে জানান।

একইভাবে বড়হাতিয়া ইউনিয়নের নিুাঞ্চলের মানুষ অধিক পানির কারণে চরম দূর্ভোগ পোহাচ্ছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছে। পুটিবিলা ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর হোসেন মানিক জানিয়েছেন, ডলু খাল ও সরই খালের বিভিন্নস্থানে ভাঙছে। কলাউজান ইউপি চেয়ারম্যান এম এ ওয়াহেদ জানিয়েছেন, টংকাবতী খালের ভাঙনে বিলীন হচ্ছে মানুষের চলাচলের রাস্তা ও বসতভিটা।

এছাড়া আধুনগর ইউনিয়নে জুড়ি খালের উপর নির্মিত ১৫ মিটার দীর্ঘ সেতু উদ্বোধনের আগেই ধসে পড়ার ঝুঁকিতে রয়েছে।

আরও পড়ুন

×