জলাবদ্ধতার এক সপ্তাহ পর সুর পাল্টালেন চসিক মেয়র

সিটি মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী
চট্টগ্রাম ব্যুরো
প্রকাশ: ১৪ আগস্ট ২০২৩ | ১৪:৫১ | আপডেট: ১৪ আগস্ট ২০২৩ | ১৪:৫১
চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা নিরসনে ১১ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে চারটি প্রকল্পের কাজ চলছে। এরমধ্যে ব্যয় হয়েছে সাড়ে পাঁচ হাজার কোটি টাকা। তবুও বৃষ্টি হলে ডুবছে চট্টগ্রাম নগরী। এরমধ্যে জলাবদ্ধতার জন্য একে অপরকে দায়ী করে দোষারোপ করেছে সিডিএ-সিটি করপোরেশন।
এর মধ্যে এবার সুর পাল্টেছেন সিটি মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী। তিনি বললেন, বেশি বৃষ্টিই জলাবদ্ধতার একমাত্র কারণ। চট্টগ্রাম নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে আন্তঃদপ্তর সমন্বয় সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ মন্তব্য করেন তিনি।
সোমবার বিকেলে চট্টগ্রাম নগরীর টাইগারপাসে সিটি করপোরেশনের অস্থায়ী প্রধান কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে এ সভা হয়। সভায় চট্টগ্রামের সেবাসংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
তবে জলাবদ্ধতা নিরসনে সবচেয়ে বড় প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) চেয়ারম্যান এম জহিরুল আলম দোভাষ সভায় উপস্থিত ছিলেন না। অবশ্য গত বছরের ২২ জুন অনুষ্ঠিত সভায় তিনি উপস্থিত ছিলেন। এবারের সভায় সাংবাদিকদের প্রবেশাধিকার ছিল না।
সভা শেষে মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, চট্টগ্রামে এক সময় ৭২টি খাল ছিল। অনেকগুলো বিলুপ্ত হয়ে গেছে। এখন ৫৭টি খাল আছে। তার মধ্যে ৩৬টিতে খনন, প্রতিরোধ দেয়ালের নির্মাণ কাজ চলছে। এগুলোর কাজ এখনো শেষ হয়নি। আরও ২১টি খাল এই প্রকল্পের বাইরে রয়ে গেছে। এগুলোর মধ্যে অনেক খালের অস্তিত্ব বিলীন হয়ে গেছে। প্রভাবশালীরা দখল করে রেখেছে। ভরাট হয়ে গেছে। এগুলো সংস্কার ও পুনঃখননের জন্য প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।
তিনি বলেন, বর্তমানে যে প্রকল্পের কাজ চলছে, তার পর্যালোচনা করেছি। প্রকল্পের কাজ এগিয়ে চলছে। কাজ কিন্তু পুরোপুরি শেষ হয়নি। এবার যে পানি, সেটি জলজট বা জলাবদ্ধতা যেটিই বলেন, এটা হওয়ার একমাত্র কারণ হলো, বিগত ৩০ বছরে এই ধরনের প্রবল বৃষ্টিপাত এই অঞ্চলে হয়নি। দক্ষিণ চট্টগ্রামে ভয়াবহ বন্যা হয়েছে।
সিটি মেয়র বলেন, যেহেতু প্রকল্পের কাজ চলছে। অনেক খালের মাটি পুরোপুরি উত্তোলিত হয়নি। রেগুলেটরের কাজ পুরোপুরি চালু হয়নি। পাম্প হাউসের কাজ সম্পন্ন হয়নি। রেগুলেটরের কাজ সম্পন্ন না হওয়ায় জোয়ারের পানি নগরীতে ঢুকে পড়েছে। যদি এগুলো সম্পন্ন হতো, তাহলে প্রবল জোয়ারও শহরে পানি ঢুকতে পারত না। আগামী এক বছরের, মধ্যে এই কাজগুলো শেষ হবে। এই সমস্ত কাজ শেষ হলে জলাবদ্ধতা থেকে হয়ত মুক্তি লাভ করতে পারবো।
চসিক মেয়র বলেন, এককভাবে কোনো সংস্থা এই সমস্যার সমাধান করতে পারবে না। সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে। সিটি করপোরেশন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি থাকায়, মানুষের দৃষ্টি থাকে। আঙ্গুল উঁচু করে তোলে। পানি উঠছে মানুষ কষ্ট পাচ্ছে। স্বাভাবিকভাবে মানুষ আঙ্গুল সিটি করপোরেশনের দিকে তুলবে।
প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলামের সঞ্চালনায় সভায় বক্তব্য দেন সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র গিয়াস উদ্দিন, কাউন্সিলর মোবারক আলী, শৈবাল দাস সুমন, আবদুল মান্নান ও মো. এসরারুল হক, অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মু. আনোয়ার পাশা, চট্টগ্রাম ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ কে এম ফজলুল্লাহ, সিডিএর প্রধান প্রকৌশলী মাহমুদুল হোসেন খান, সচিব মো. মিনহাজুর রহমান, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটনের অতিরিক্ত কমিশনার এম এ মাসুদ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আবু রায়হান দোলন, সিডিএর ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী হাবিবুর রহমান, সিডিএর জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. শাহ আলী, চসিকের সচিব খালেদ মাহমুদ ও চসিকের প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম মানিক।
- বিষয় :
- চট্টগ্রাম
- জলাবদ্ধতা নিরসন
- সিডিএ
- সিটি করপোরেশন