বিদেশি অর্থে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কার্যক্রম চালাচ্ছে আরসা

রোহিঙ্গা ক্যাম্প
কক্সবাজার প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৬ আগস্ট ২০২৩ | ১৮:০০ | আপডেট: ২৬ আগস্ট ২০২৩ | ২০:২৮
কক্সবাজারের টেকনাফ ও উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কার্যক্রম পরিচালনার জন্য মিয়ানমারের সশস্ত্র সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আরাকান স্যালভেশন আর্মির (আরসা) কাছে সৌদি আরব, মালয়েশিয়া, যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশ থেকে টাকা আসে। এই অর্থে সদস্যদের মিয়ানমারে প্রশিক্ষণ এবং কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালিত হয়– এমন তথ্য দিয়েছেন র্যাবের হাতে গ্রেপ্তার আরসার অন্যতম শীর্ষ নেতা মাওলানা মোহাম্মদ ইউনুস। র্যাব-১৫ এর কক্সবাজার কোম্পানি কমান্ডার মেজর জামিলুল হক এসব তথ্য জানিয়েছেন।
মেজর জামিল জানান, সম্প্রতি রোহিঙ্গা ক্যাম্পসহ কক্সবাজারজুড়ে হত্যা, লাশ গুম, অপহরণ, মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অপরাধ বেড়েছে। রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত একাধিক সন্ত্রাসী সংগঠন। এর মধ্যে ক্যাম্পগুলোতে ব্যাপকভাবে প্রভাব বিস্তার করেছে আরসা। বিভিন্ন সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে গোষ্ঠীটির অনেকে আটক হলেও নির্মূল হয়নি।
এর মধ্যে গত বৃহস্পতিবার গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে উখিয়ার পালংখালী ইউনিয়নের তাজনিমার খোলা এলাকা থেকে আরসার অর্থ সম্পাদক মাওলানা মোহাম্মদ ইউনুসকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর কাছ থেকে ছয়টি গুলিসহ একটি বিদেশি রিভলবার জব্দ করা হয়েছে।
র্যাব জানিয়েছে, মিয়ানমারে থাকার সময় ২০১৬ সালে মৌলভী আরিফুল্লাহর মাধ্যমে আরসায় যোগ দেন ইউনুস। ২০১৭ সালে অবৈধভাবে বাংলাদেশে ঢুকে শরণার্থী হিসেবে রোহিঙ্গা ক্যাম্প-১৯ এ থাকেন তিনি। রোহিঙ্গা ক্যাম্প এলাকায় আরসার অর্থ সম্পাদকের দায়িত্বে রয়েছেন ইউনুস। সংগঠনটির প্রধান আতাউল্লাহ আবু আম্মার জুনুনী, ওস্তাদ খালেদ, সমিউদ্দিনের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগের মাধ্যমে ক্যাম্পে সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করেন তিনি।
আরসার অর্থের উৎস সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদে ইউনুস র্যাবকে জানিয়েছেন, তার কাছে প্রতি মাসে সৌদি আরব থেকে আবুল বশর এক লাখ, মৌলভী ইসমাইল এক লাখ, মো. ইসলাম এক লাখ, পারভেজ ১৫ হাজার, যুক্তরাষ্ট্র থেকে জহুর আলম এক লাখ, মালয়েশিয়া থেকে হারুন এক লাখ, থাইল্যান্ড থেকে হারুন ৬৫ হাজার টাকা পাঠান। এ ছাড়া অস্ট্রেলিয়া থেকে অজ্ঞাতপরিচয় রোহিঙ্গারা টাকা পাঠান। সবমিলিয়ে মাসে বিভিন্ন দেশ থেকে ১০-১৫ লাখ টাকা আরসার ক্যাম্প জিম্মাদারদের কাছে আসে। এই অর্থ দিয়ে অস্ত্র কেনা এবং দলের সদস্যদের বেতন ও আর্থিক সহযোগিতা দেন। এ ছাড়া মিয়ানমারের আরাকানে রোহিঙ্গাদের গ্রাম থেকেও চাঁদা তোলা হয়।
ইউনুসের বরাত দিয়ে র্যাব কমান্ডার মেজর জামিল জানান, গত এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত তিন মাসে আরসা সমর্থিত বিভিন্ন গ্রুপ, ব্যক্তি ও সংগঠন থেকে প্রায় ১৩ লাখ ৮১ হাজার ৬৯৫ টাকা নিয়েছেন ইউনুস। এই গ্রুপে ২০০-২৫০ সদস্য রয়েছে। তাদের কাছে বিভিন্ন অস্ত্র রয়েছে। এ অংশটি সংগঠনের অন্যতম সদস্য সমিউদ্দিন (ক্যাম্প-৬) এবং হোসেন (ক্যাম্প-১৭) নিয়ন্ত্রণ করে।