ঋণ পরিশোধ না করতেই দাদন ব্যবসায়ীকে হত্যা

প্রতীকী ছবি
নিজস্ব প্রতিবেদক, ময়মনসিংহ
প্রকাশ: ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | ১২:৫৩ | আপডেট: ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | ১২:৫৩
কৃষি কাজের পাশাপাশি দাদন ব্যবসাও করতেন তারাকান্দার লাল মিয়া খান (৫০)। তার কাছ থেকে টাকা নিয়ে ফেরত দিতে দেরি হয়। টাকা যাতে ফেরত দিতে না হয় তারই পরিকল্পনা করা হয়। সে অনুযায়ী তাকে হত্যা করে বস্তায় লাশ ভরে পুকুরে ডুবিয়ে রাখা হয়। গত ২৯ সেপ্টেম্বর রাত থেকে নিখোঁজ লাল মিয়ার লাশ উদ্ধার ও হত্যায় জড়িত তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শনিবার তাদের হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়।
ময়মনসিংহের তারাকান্দা উপজেলার নলদিঘী গ্রামের বাসিন্দা লাল মিয়া খান। গত ২৯ আগস্ট রাতে নিখোঁজ হন তিনি। এ ঘটনায় ৩০ আগস্ট থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন তার ছেলে রাসেল মিয়া। গত ৩১ আগস্ট দুপুরে লাল মিয়ার পরিবারের কাছে ফোন করে ৩০ লাখ টাকা মুক্তিপণ চাওয়া হয়। ওই ফোন নম্বরের সূত্র ধরে শুক্রবার তিনজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। নলদিঘী গ্রামের শাহ জাহানের ছেলে সোহেল মিয়া, আবদুল জব্বার খানের ছেলে শাহীন মিয়া ও আলী আকবরের ছেলে আবদুল বারেককে জিজ্ঞাসাবাদের পর পুলিশ। এর মধ্যে নলদিঘী মধ্যপাড়া এলাকায় মজিবুর রহমান নামে এক ব্যক্তির পুকুর থেকে বস্তাভর্তি লাশ উদ্ধার করা হয়।
পুলিশের কাছে সোহেল মিয়া, শাহীন মিয়া ও আবদুল বারেক জানায়, সোহেলের কাছে ৪ লাখ ও বারেকের কাছে সাড়ে ৪ লাখ টাকা পেতো লাল মিয়া। টাকা যেন ফেরত দিতে না হয় এবং আরও টাকা পাওয়ার লোভে লাল শিয়াকে অপহরণ ও হত্যার পরিকল্পনা করে তারা। ২৯ আগস্ট চা পানের কথা বলে নিজেদের সঙ্গে নিয়ে যায় সোহেল, শাহীন ও বারেক।
পুলিশের কাছে সোহেল মিয়া জানায়, ঘটনার ৫ থেকে ৬ দিন আগে শাহীনের ঘরে বসে লাল মিয়াকে হত্যা করে লাশ গুম এবং মোবাইলে টাকা নেওয়ার পরিকল্পনা করে তারা। পরিকল্পনা অনুযায়ী চা দোকান থেকে নিজের পুকুরের মাছ দেখার কথা বলে ডেকে নিয়ে যায় সোহেল। সেখানে সোহেল, শাহীন ও বারেক মিলে প্রথমে কাঁচি দিয়ে লাল মিয়ার গলা কেটে ও চাকু দিয়ে পেটের দুই পাশে আঘাত করে হত্যা নিশ্চিত করে। পরে শাহীন ও বারেক চলে গেলে লাশ বস্তায় ভরে সঙ্গে বালুভর্তি বস্তা বেঁধে মজিবুর রহমানের পুকুরে ফেলে দেয় সোহেল।
এ ঘটনায় তিনজনকে আসামি করে থানায় হত্যা মামলা করেছেন নিহতের ছেলে। বাদী রাসেল মিয়া বলেন, ‘আমার বাবাকে যারা নৃশংস ভাবে হত্যা করেছে তাদের ফাঁসি চাই।’
তারাকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল খায়ের জানান, হত্যায় তিনজনই অংশ নেয়। তাদের গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।