৩ দিন হাসপাতালে এসে চিকিৎসা নিল অসুস্থ বানর

সীতাকুণ্ড (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | ১৪:৫৬ | আপডেট: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | ১৫:০৪
প্রায় এক মাস আগে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার বন থেকে লোকালয়ে চলে আসে একটি বানর। এর পর থেকে মাঝে মধ্যেই সেটিকে বিভিন্ন এলাকায় দেখা যায়। শনিবার বানরটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে বসেছিল। স্বাস্থ্য কর্মকর্তা নূর উদ্দিন রাশেদ দেখেন, তার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ক্ষত; যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে। তিনি দ্রুত বানরটির ক্ষতস্থানে ড্রেসিং করে দেন। পরে বিষয়টি প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর ও বন বিভাগকে জানান ডা. নূর। কিন্তু তারা ব্যবস্থা নেননি।
এরপর রোববার ও সোমবারও হাসপাতালের সামনে আসে বানরটি। এই দু’দিনও সেটিকে চিকিৎসা দেওয়া হয়। অবশেষে আজ দুপুরে বানরটি উদ্ধার করে চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও অ্যানিম্যাল সায়েন্স বিশ্ববিদ্যালয়ে (সিভাসু) পাঠান প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তারা।
সীতাকুণ্ড উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ কর্মকর্তা ডা. নূর উদ্দিন বলেন, প্রথম দিন বানরটির সারা শরীরে ক্ষত ছিল। তাৎক্ষণিক জরুরি বিভাগে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দিই এবং ক্ষতস্থানে ব্যান্ডেজ করে দিই। এ ক্ষেত্রে একজন পশুচিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা দেওয়া ভালো। তাই আমি উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ও বন বিভাগের কর্মকর্তাদের বিষয়টি জানাই। কিন্তু সেদিন তারা আসেননি।
পরদিন সকালেও বানরটি হাসপাতালে হাজির হয়। ডা. নূর ক্ষতস্থানে ড্রেসিং করে দেন এবং উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ও বন বিভাগের কর্মকর্তাদের অবগত করেন। এর পর গতকালও বানরটি এলে অবস্থা গুরুতর বিবেচনায় উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ কর্মকর্তাদের জরুরি ভিত্তিতে হাসপাতালে যেতে বলা হয়। এর পর তারা গিয়ে বানরটি উদ্ধার করেন।
ডা. নূর বলেন, ওই বানরের পেছনের অংশে খুব সম্ভবত বৈদ্যুতিক শক লেগেছে। এ কারণে ক্ষত সৃষ্টি হয়ে পচন ধরেছে। তবে বানরটি শান্ত প্রকৃতির। নিজে নিজে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এসে প্রধান ফটকে বসে থাকত। চিকিৎসার পর ধীরে ধীরে হাসপাতালের পাশের বাগানে বনে চলে যেত।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা তাহমিনা আরজু বলেন, গতকাল তিনিসহ বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ বিভাগের কর্মকর্তারা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে বানরটি উদ্ধার করেন। উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ে নিয়ে ব্যান্ডেজ খুলে দেখা যায়, ক্ষত এত বেশি, প্রাথমিক চিকিৎসায় বানরটি সুস্থ করে তোলা সম্ভব নয়। এর পর সিভাসুতে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন তিনি।
এই কর্মকর্তা আরও বলেন, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে বিষয়টি জানানোর পর বানরটিকে ধরিয়ে দেওয়ার জন্য বন বিভাগের কর্মকর্তাদের অনুরোধ করা হয়। কিন্তু বন বিভাগের কর্মকর্তারা ধরে দেননি। বানরটি ধরে দিলে ওইদিনই চিকিৎসার ব্যবস্থা করতেন বলে জানান তাহমিনা আরজু।