বসতবাড়ি-ফসলের ক্ষেতে হানা হনুমান দলের

একটি বাসাতে হানা দিয়েছে হনুমান দল। ছবি: সমকাল
মনিরামপুর (যশোর) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | ১৩:০৩ | আপডেট: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | ১৩:০৩
খাবারের সন্ধানে যশোরের মনিরামপুর পৌর শহরের বিভিন্ন এলাকায় বসতবাড়ি ও ফসলের ক্ষেতে হানা দিচ্ছে হনুমানের দল। অনেকের বসতবাড়িতে প্রবেশ করে রান্না করা খাবার নিয়ে যাচ্ছে ক্ষুধার্ত হনুমান। অনেকের বাড়ির ছাদে উৎপাদিত সবজি ও ফলদ গাছও তছনছ করছে এই বন্যপ্রাণীর দল। কেউ কেউ আবার আদর করে এসব হনুমানকে খাবার দিচ্ছেন।
জানা যায়, প্রায় দেড় যুগ আগে কেশবপুর পৌর শহরের পাশে হরিহর নদীর তীরে হনুমানের অভয়ারণ্য গড়ে ওঠে। সরকার এই এলাকার হনুমানদের জন্য খাদ্যও বরাদ্দ করে। অভিযোগ রয়েছে, সংশ্লিষ্টরা অভয়ারণ্যে থাকা হনুমানদের প্রতিদিন যে খাবার সরবরাহ করেন, তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। ফলে ক্ষুধার্ত হনুমানের দল আশপাশের বিভিন্ন গ্রামে হানা দিচ্ছে।
সরেজমিন দেখা যায়, কেশবপুরের পার্শ্ববর্তী মনিরামপুর উপজেলার মুজগন্নি, দুর্গাপুর, সৈয়দ মাহমুদপুর, নাগোরঘোপ, বাঙালীপুর, গোবিন্দপুর বাটবিলা, জামলাসহ বেশ কয়েকটি গ্রামে ক্ষেতে প্রবেশ করে ফসলের ক্ষতি করছে হনুমানের দল। পৌর শহরের অনেকের বসতবাড়িতেও হানা দিতে দেখা যায় তাদের।
মুজগন্নি গ্রামের কৃষক আবদুল করিম বলেন, হনুমানের দল প্রতিনিয়ত ক্ষেতে ঢুকে মিষ্টিকুমড়া, পেয়ারা, লেবু, বেগুন, পটোল, কলাসহ বিভিন্ন ফসলের ক্ষতি করছে। কৃষক আব্দুর রহিম জানান, শুধু সবজি বা গাছের ফল নয়; ঘরে ঢুকে রান্না করা হাঁড়িভর্তি খাবারও নিয়ে যাচ্ছে ক্ষুধার্ত হনুমান।
পৌর শহরের তাহেরপুর এলাকার স্কুলশিক্ষক বিপ্লব কুমার সাহা বলেন, প্রতিদিন সকালের দিকে হনুমানের দল পার্শ্ববর্তী হরিহর নদীর তীর দিয়ে তাঁর বাড়িতে আসে। এ সময় বিশেষ করে কলা, বাদাম দিলে তারা নিয়ে চলে যায়। গৃহবধূ তনামী সাহা বলেন, মঙ্গলবার সকালের দিকে হনুমানের দলটি ঘরের বারান্দায় গ্রিলে ঝুলে থাকে। এ সময় তাদের কলা খেতে দিলে তারা চলে যায়। আবার খাদ্য না দিলে হনুমানের দল ঘরে ঢুকে তছনছ করে। গৃহবধূ রজনী খাতুন জানান, হনুমানের দল প্রায়ই রান্নাঘরে হানা দিয়ে খাবার খেয়ে ফেলছে।
স্কুলশিক্ষক ইসাহাক আলী, আবুল হক জানান, হনুমানের দল তাদের ছাদে হানা দিয়ে বিভিন্ন সবজি ও ফলদ গাছ সাবাড় করছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা বন কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) আবদুল খালেক জানান, অভয়ারণ্যে বর্তমানে হনুমানের জন্য যে খাদ্য বরাদ্দ রয়েছে, প্রয়োজনের তুলনায় অত্যন্ত কম বলে ধারণা করছেন তিনি। ফলে খাদ্যাভাবে হনুমানের দল লোকালয়ে হানা দিচ্ছে।