দুর্ভোগ থেকে মুক্তি মিলছে পাগলা পাড়ের মানুষের

৩৫ বছরের পুরনো ঝুঁকিপূর্ণ জরাজীর্ণ বেইলি ব্রিজ
চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৪ অক্টোবর ২০২৩ | ১০:৩৩ | আপডেট: ১৪ অক্টোবর ২০২৩ | ১০:৩৩
চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ-মনাকষা সড়কের পাগলা নদীর ওপর ৩৫ বছরের পুরনো ঝুঁকিপূর্ণ জরাজীর্ণ বেইলি ব্রিজটি অবশেষে ভেঙে ফেলা হচ্ছে। স্থাপন করা হয়েছে নতুন সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর। শনিবার বিকেলে স্থানীয় সংসদ সদস্য সামিল উদ্দিন আহমেদ শিমুল ৩২ কোটি ৭৫ লাখ টাকা ব্যয়ে সেতুটি নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
এর আগে গত বছরের মার্চে শিবগঞ্জে তিনটি সেতু নির্মাণের অনুমোদন দেয় একনেক। এর মধ্যে একটি উপজেলার শিবগঞ্জ-খাসের হাট ও মনাকষা হাট সড়কের পাগলা নদীর ওপর এক হাজার ৫২৫ মিটারের বহুল প্রত্যাশিত সেতুটি। আগের বেইলি ব্রিজের স্টিলের পাটাতন সরে গেছে, দেবে গেছে কয়েকটি।
দুর্লভপুর এলাকার বাসিন্দা শাহিন আলী জানান, সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় ভারী যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। এক বছরে দুই দফায় নদীতে পাটাতন পড়ে কয়েকজন আহতও হয়েছে। সেতু দিয়ে মনাকষা, বিনোদপুর, শ্যামপুর, পাকা ও দুর্লভপুরসহ কয়েকটি ইউনিয়নের প্রায় সাড়ে তিন লাখ মানুষ দুর্ভোগ নিয়ে যাতায়াত করেন। নতুন সেতু চালু হলে এর থেকে মুক্তি মিলবে।
আদিনা ফজলুল হক সরকারি কলেজসহ আটটি কলেজ ও ২০টি উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং মাদ্রাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করেন বলে জানান উজিরপুর কলেজের সহকারী অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, যানজটের কারণে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকতে হয়। সেতুটি চালু হলে এ দুর্ভোগ লাঘব হবে।
পাঁকার কৃষক লাল মোহাম্মদ সেতু উদ্বোধনের খবর জেনে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে বলেন, ‘হাঁরা (আমরা) তো ফসল এক বছর থেকে ১৬ কিলোমিটার দূর বিনোদপুর ঘুর্যা শিবগঞ্জ বেচতে যাতুন। এতে পরিবহন খরচ বাড়ত। সেতু হলে হাঁরঘে মেলা উপকার হবে।’
এলজিইডির জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী মোজাহার আলী প্রামাণিক বলেন, কয়েকদিন আগে ঢাকা থেকে কর্মকর্তারা এসে পরিস্থিত পর্যবেক্ষণ করে গেছেন। ইতোমধ্যেই টেন্ডার ডেকে ঠিকাদার নিয়োগ সম্পন্ন হয়েছে। সবকিছু ঠিক থাকলে চলতি মাসেই নির্মাণকাজ শুরু হবে।
এ বিষয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ-১ (শিবগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য সামিল উদ্দিন আহমেদ শিমুল জানান, জনগণের দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে ১৯৮৬ সালে তাঁর বাবা তৎকালীন সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রয়াত মইন উদ্দিন আহম্মেদের উদ্যোগে পাগলা নদীর ওপর বেইলি ব্রিজ নির্মাণ শুরু হয়। ১৯৮৮ সালে নির্মাণকাজ শেষ হয়।
সামিল উদ্দিন আহমেদ বলেন, ১৫০ মিটার দীর্ঘ ও ১২ ফুট প্রস্থের ব্রিজটি ৩৫ বছরে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে গেছে। নদীপাড়ের প্রায় তিন লাখ মানুষের কথা চিন্তা করে নতুন সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এতে এ অঞ্চলের আর্থসামাজিক, কৃষি, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যখাতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসবে।