কাউনিয়া রেলওয়ে স্টেশন
প্ল্যাটফর্মের টার্মিনাল নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ

ছবি: সংগৃহীত
স্বপন চৌধুরী, রংপুর
প্রকাশ: ১৮ অক্টোবর ২০২৩ | ১৭:৫১ | আপডেট: ১৮ অক্টোবর ২০২৩ | ১৭:৫১
উত্তরাঞ্চলের রেল যোগাযোগের কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত রংপুরের কাউনিয়া রেলওয়ে জংশনে স্বাধীনতার ৫২ বছরেও আধুনিকতার ছোঁয়া লাগেনি। দিন-রাতে ২৪টি ট্রেন যাতায়াত করা এই স্টেশনে বছরে প্রায় দুই কোটি টাকা আয় হলেও কমেনি যাত্রী দুর্ভোগ আর বিড়ম্বনা।
দীর্ঘদিন পর চলতি বছর কাউনিয়া রেলওয়ে জংশন স্টেশনে যাত্রীদের বহির্গমন ও গাড়ি পার্কিংয়ের জন্য অত্যাধুনিক টার্মিনাল নির্মাণকাজ শুরু হওয়ায় স্বস্তি ফিরেছিল এলাকাবাসীর মধ্যে। কিন্তু সে কাজে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী অনিয়মের বিষয়টি কর্তৃপক্ষের নজরে এনে গত ৫ অক্টোবর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাজ বন্ধ করে দেন। তবে ১৫ অক্টোবর ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আবার কাজ শুরু করেছে। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী হুমকি দিয়েছেন আন্দোলনের।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, কাউনিয়া রেলস্টেশন এলাকায় ৭৮ লাখ ৩৪ হাজার টাকা ব্যয়ে যাত্রীদের বহির্গমন ও গাড়ি পার্কিংয়ের জন্য অত্যাধুনিক টার্মিনাল নির্মাণে কাজ পেয়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সোহনা এন্টারপ্রাইজ। স্থানীয়দের অভিযোগ, কাজে ব্যাপক অনিয়ম হচ্ছে। যেখানে যে পরিমাণ পাথর, বালু, সিমেন্ট দেওয়ার কথা, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকরা তা দিচ্ছেন না। পরিমাণমতো সিমেন্ট না দিয়ে বেশি বালু, মানহীন ইট-পাথর ব্যবহারের পাশাপাশি ভিটি বালুর পরিবর্তে কাঁচামাটি ব্যবহার করা হচ্ছে। এ ছাড়া প্ল্যাটফর্মের মেঝের ঢালাইয়ের সঙ্গে নিম্নমানের রড ব্যবহার করা হয়েছে। বিছানো ইটগুলোও নিম্নমানের।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সোহনা এন্টারপ্রাইজের ব্যবস্থাপক বাবু মিয়া বলেন, আমরা আমাদের হিসাব অনুযায়ী কাজ করছি। আমাদের প্রতিষ্ঠানের মালিক প্রভাবশালী। তাই এ বিষয়ে নিউজ করে কোনো লাভ হবে না।
বিষয়টি নিয়ে সোহনা এন্টারপ্রাইজের মালিক সাজু মিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘রেলের কাজ এমনই হয়। সবাইকে ম্যানেজ করে কাজ করা লাগে।’
কাউনিয়া স্টেশন মাস্টার হোসনে মোবারক বলেন, ‘শুনেছি প্রায় ৭৮ লাখ টাকা ব্যয়ে কাজ হচ্ছে। এই কাজের দেখাশোনার দায়িত্ব আলাদা বিভাগের। কোন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ করছে বা কীভাবে করছে– এসব তথ্য আমাদের কাছে নেই। তারা আমাদের কাছে হস্তান্তর করলে তখন আমরা সবকিছুর দেখভাল করব।’
রেলওয়ে লালমনিরহাট জোনের সহকারী নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন-উর-রশিদ বলেন, অভিযোগের বিষয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে জানানো হয়েছে। শর্ত অনুযায়ী কাজ না হলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
রেলওয়ে লালমনিরহাট জোনের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসান হাবিব বলেন, ‘টার্মিনালের ঢালাইকৃত স্ল্যাবগুলো বুয়েটের ল্যাবে পরীক্ষার পর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে চূড়ান্ত বিল দেওয়া হবে।’
- বিষয় :
- উত্তরাঞ্চল
- রেল যোগাযোগ