জ্ঞাতি সম্পর্কের ভাতিজাই তালা দিয়ে আগুন দেয় ঘরে

প্রতীকী ছবি
দোহার (ঢাকা) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২০ জানুয়ারি ২০২৪ | ১১:১৬ | আপডেট: ২০ জানুয়ারি ২০২৪ | ১১:২৫
ঢাকার দোহারে ঘরে তালা দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার ঘটনার রহস্য উন্মোচনের দাবি করেছে র্যাব-১০। বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানী থেকে দু’জনকে গ্রেপ্তারের পর গতকাল শুক্রবার সকালে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানায় সংস্থাটি। র্যাব-১০ জানায়, ভুক্তভোগী শেখ জুলহাস বাড়িতে আশ্রিত এক দূরসম্পর্কের ভাতিজাকে তাড়িয়ে দিয়েছিলেন। এর জের ধরে ভাতিজা মো. রুবেল (২১) সহযোগীদের নিয়ে এ ঘটনা ঘটায়।
মঙ্গলবার ভোররাত আনুমানিক সাড়ে ৩টার দিকে উপজেলার মুকসুদপুর ইউনিয়নের ধীৎপুর গ্রামের ওই বাড়িতে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। এতে দগ্ধ হয়ে ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ওই গ্রামের শেখ জুলহাস ও তাঁর স্ত্রী ফাহিমা বেগম। এ সময় ধোঁয়ায় অসুস্থ হয়ে পড়ে জুলহাসের মেয়ে জান্নাত আক্তার (১৩) ও ছেলে জুনায়েদ হোসেন (৮) ও ভাতিজি তাবাসসুম আক্তার (১০)। বর্তমানে চাচা শেখ মুক্তার হোসেন মুকেতের বাড়িতে আছে তিন শিশু। এ ঘটনায় বুধবার দোহার থানায় মামলা করেন শেখ মুক্তার।
ওই বাড়িতে জুলহাসের দূরসম্পর্কের চাচাতো ভাই মৃত মো. সুলতান শেখের ছেলে রুবেল মাকে নিয়ে থাকতেন। কিন্তু রুবেলের চালচলন ও কথাবার্তায় অসন্তুষ্ট ছিলেন জুলহাস। এ কারণে ঘটনার ১৩-১৪ দিন আগে রুবেলকে বাসা থেকে তাড়িয়ে দেন জুলহাস। মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার বালাসুর এলাকায় র্যাব-১০, সিপিসি-২ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে ভারপ্রাপ্ত কোম্পানি কমান্ডার এ কে এম কাউসার চৌধুরী বলেন, এতে রুবেল ক্ষুব্ধ হয়। বাড়ি ছেড়ে দেওয়ার বিষয় নিয়ে সে জুলহাসের সঙ্গে তর্কাতর্কিও করে। বাড়ি ছাড়ার সময় জুলহাসকে দেখে নেওয়ারও হুমকি দেয় রুবেল।
রুবেলকে জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে র্যাব জানায়, মঙ্গলবার শেষরাতে জুলহাস ও তাঁর পরিবারের সবাই ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন। এ সময় রুবেল তার সহযোগীদের নিয়ে পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী ঘরের বাইরে তালা দেয়। পরে রং করার মেশিন দিয়ে ঘরের মেঝে ও চালার কাঠে প্রায় ৫০ লিটার পেট্রোল ছিটায়। ঘরের সবাইকে হত্যার উদ্দেশ্যে আগুন ধরিয়ে দেয়। কিছুক্ষণের মধ্যে আগুন ছড়িয়ে পড়লে জুলহাস ও তাঁর পরিবারের আর্তচিৎকার শুরু করেন। এতে অন্যরা জেগে উঠলে রুবেল ও তার দলবল পালিয়ে যায়। তারা সেদিন থেকে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় আত্মগোপনে ছিল। পরে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে বৃহস্পতিবার রাতে রুবেল ও তার সহযোগী রানা মাহমুদকে (২৪) গ্রেপ্তার করা হয়। তারা এ ঘটনায় জড়িত আরও পাঁচজনের বিষয়ে তথ্য দিয়েছে। তাদের আটকে অভিযান চলছে।
দোহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হারুন-অর-রশিদ শুক্রবার রাতে বলেন, র্যাব সদস্যরা তাদের কাছে আসামিদের বুঝিয়ে দিয়েছেন। এ বিষয়ে অধিকতর তদন্তের জন্য তাদের রিমান্ডে নেওয়া প্রয়োজন। সেজন্য আজ শনিবার সকালে আদালতে হাজির করে রিমান্ডের আবেদন করবেন।
- বিষয় :
- অগ্নিকাণ্ড
- দোহার