টাকা ভাগাভাগির দ্বন্দ্বে দু’দিন পর মরদের দাফন

নিজ বাড়িতে মোতাহার আলীর জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। ছবি: সমকাল
গাইবান্ধা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ | ১২:৫৪
গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতে টাকা ভাগাভাগির দ্বন্দ্বের জেরে মৃত্যুর দু’দিন পর দাফন করা হয়েছে মোতাহার আলীর (৭০) মরদেহ। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও পুলিশের সহায়তায় বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার বেতকাপা ইউনিয়নের মাঝিপাড়া গ্রামে নিজ বাড়িতে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তার মরদেহ দাফন করা হয়। মোতাহার আলী গণপূর্ত অধিদপ্তরের অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারী (হেড ক্লার্ক) ছিলেন।
এর আগে বুধবার ভোর ৫টার দিকে ঢাকার ধানমন্ডির কলাবাগান এলাকার ভাড়া বাসায় মারা যান মোতাহার আলী। তিনি দীর্ঘদিন ধরে অ্যাজমা ও ক্যান্সার রোগে ভুগছিলেন।
স্থানীয়রা জানান, মৃত্যুর পর মোতাহার আলীর মরদেহ দাফনের জন্য অ্যাম্বুলেন্সে করে গ্রামের বাড়িতে নিয়ে আসেন স্ত্রী মাসুমা বেগম। ওইদিন মরদেহ দাফনে বাধা দেন চাচাতো ভাই সেকেন্দার আলী ও ভাতিজা মানিকসহ পরিবারের লোকজন। এ সময় তারা মাসুমা বেগমের কাছে মোতাহার আলীর কাছে থাকা নগদ ও জমি বিক্রির ১ কোটি ৯০ লাখ টাকা কোথায় আছে, তা জানতে চান। এ বিরোধে মরদেহ নিজ বাড়ির উঠানে পড়ে থাকে। স্থানীয়রা চেষ্টা করেও মীমাংসা করতে পারেনি।
চাচাতো ভাই-ভাতিজাদের অভিযোগ, কিছুদিন আগে মোতাহার আলী তার নিজ নামের জমি দুই কোটি টাকা বিক্রি করেন। সেই টাকা স্ত্রী মাসুমা বেগমের নামে ব্যাংকে রাখেন তিনি। পরে মাসুমা বেগম গোপনে ব্যাংক থেকে ১ কোটি টাকা উত্তোলন করেন বলে তাদের অভিযোগ।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত মরদেহ দাফন না হওয়ার ঘটনা জানতে পারেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও পলাশবাড়ী থানা পুলিশ। পরে তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে বৈঠক করে উভয় পক্ষকে নিয়ে একটি সমঝোতার সিদ্ধান্ত নেন। এরপর তাদের উপস্থিতিতে নিজ বাড়ির উঠানে জানাজা নামাজ শেষে মোতাহার আলীর মরদেহ দাফন করা হয়।
এ বিষয়ে বেতকাপা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, নিঃসন্তান মোতাহার আলীর ভাই-ভাতিজার মরদেহ দাফনে আপত্তি জানানোর কারণে মরদেহ বাড়ির উঠানে পড়েছিল। মূলত মোতাহার আলীর দেনা-পাওনা ও সম্পদ বিক্রির টাকা নিয়ে তার স্ত্রী মাসুমা বেগমের দ্বন্দ্বে জড়ান চাচাতো ভাই সেকেন্দার আলীসহ পরিবারের লোকজন। অবশেষে উভয়কে নিয়ে পারিবারিকভাবে অর্থ সংক্রান্ত দ্বন্দ্বের বিষয়ে সমঝোতা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে পলাশবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আরজু মো. সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ওই পরিবারের দ্বন্দ্ব নিরসনের পর নিহতের মরদেহ দাফন করা হয়েছে।
- বিষয় :
- গাইবান্ধা
- দাফন
- দাফন সম্পন্ন