ঢাকা শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫

ফরিদপুরে কর্মবিরতিতে বঙ্গবন্ধু মেডিকেলের ইন্টার্ন চিকিৎসকরা

ফরিদপুরে কর্মবিরতিতে বঙ্গবন্ধু মেডিকেলের ইন্টার্ন চিকিৎসকরা

ছবি: সমকাল

ফরিদপুর অফিস

প্রকাশ: ২৫ মার্চ ২০২৪ | ১৫:৩০

৩০ হাজার টাকা ভাতা এবং কর্মস্থলে নিরাপত্তা নিশ্চিতসহ বিভিন্ন দাবিতে একযোগে সারাদেশের প্রায় সব সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৪৮ ঘণ্টার কর্মবিরতি পালন করছে ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদ (ইচিপ)। রোববার (২৪ মার্চ) সকাল ৮টা থেকে মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালগুলোতে এই কর্মবিরতি পালন করছেন চিকিৎসকরা। এর আগে শনিবার (২৩ মার্চ) আলাদা আলাদা বিজ্ঞপ্তিতে এ কর্মবিরতি ঘোষণা করা হয়।

এরই ধারাবাহিকতায় ফরিদপুরেও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও কলেজের ইন্টার্ন চিকিৎসকেরা কর্মবিরতি পালন করছেন। সরেজমিনে দেখা যায়, জরুরি বিভাগে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা দায়িত্ব পালন করছেন। তবে তাদের রেগুলার ডিউটিতে প্রতি ওয়ার্ডে ৪৫ জন করে ইন্টার্ন চিকিৎসক পর্যায়ক্রমে ডিউটি পালন করা কথা থাকলেও সেখানে ৮-১০ জন চিকিৎসক ডিউটি পালন করছেন। এতে রোগী সেবায় কিছুটা ধীরগতি লক্ষ্য করা যায়। তবে রোগীদের কোনো ভোগান্তি দেখা যায়নি।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (ভারপ্রাপ্ত) পরিচালক ডা. দীপক কুমার বিশ্বাস জানান, ফরিদপুরে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা কেন্দ্রীয় কর্মসূচিতে স্বাগত জানিয়ে প্রতিকি কর্মবিরতি পালন করছে। হাসপাতালে রোগীদের ভোগান্তি এড়াতে তারা সব ধরনেরই সেবা প্রধান করছে। তিনি তাদের দাবির সম্পর্কে বলেন, বর্তমান বাজারে তাদের যে বেতন ১৫ হাজার টাকা তা আমার কাছেও যৌক্তিক মনে হয় না। সরকারের উচ্চ পর্যায়ে তাদের বৈঠক হচ্ছে, স্বল্প সময়েই এটা ঠিক হয়ে যাবে।

ইন্টার্ন চিকিৎসক নাঈম আল ফুয়াদ বলেন, শনিবার রাতে ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদ (ইচিপ) থেকে ৪৮ ঘণ্টার ধর্মঘট পালনে আমাদের নির্দেশ আসলে রোববার সকাল ৮টা থেকে থেকে আমরা কর্ম বিরতিতে গেছি এবং পরিচালক বরাবর লিখিত আবেদন জানিয়েছি। তিনি বলেন, ২০১৩ সাল থেকে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের ১৫ হাজার টাকা বেতন দেওয়া হচ্ছে। আজ বর্তমান বাজারের কি অবস্থা, সেই বিবেচনা করে আমরা বার বার মন্ত্রণালয় বরাবর আবেদন করলেও কোনো ফল পাইনি। তাই আমরা বাধ্য হয়ে আন্দোলনে নেমেছি। কেন্দ্রীয় নেতারা স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দফায় দফায় কথা বলছেন। আমরা চাই এ আন্দোলন যেন কঠোর রুপ না নেয়।

তিনি আরও বলেন, আমরা আন্দোলনে কর্মবিরতীতে গেলেও ইমারজেন্সি এবং অনকল চালু রেখেছি। যাতে চিকিৎসাসেবা ব্যাহত না হয়। আমাদের ১৩৪ জন ইন্টার্ন চিকিৎসক এই কলেজ ও হাসপাতালে আছে। স্বাভাবিকভাবে সবাই ডিউটি পালন করলেও আন্দোলনে যাতে চিকিৎসাসেবা ব্যাহত না হয় সেজন্য প্রায় ৫০ জন ডাক্তার অনকলে কাজ করছেন। বাকিরা হোস্টেলে আছেন।

নাঈম আল ফুয়াদ বলেন, বেতন বৃদ্ধির সঙ্গে আমাদের নিরাপদ কর্মপরিবেশ খুবই জরুরি। মাঝেমধ্যেই হাসপাতালে রোগী ও তার স্বজনদের সঙ্গে নানা কারণে আমরা লাঞ্চিত হই। এটা আমরা আর চাই না।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি ও ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদ সভাপতি মাশতুরা মোশাররফ ঐষিকা বলেন, কেন্দ্রীয় কর্মসূচির আন্দোলকে বেগবান করতে আমরাও কর্মবিরতিতে আছি। তবে জরুরি বিভাগ ও যে কোনো প্রয়োজনে যে কেউ ডিউটি পালন করতে সম্মত আছেন। যাতে হাসপাতালে চিকিৎসা সেবার কোনো ভোগান্তি না হয়। মন্ত্রণালয়ে আমাদের নেতাদের সঙ্গে কথা হচ্ছে, স্বল্প সময়ে আমাদের দাবির যৌতিক সমাধান হবে।

ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ইন্টার্নি চিকিৎসকদের ভাতা ৩০ হাজার এবং কর্মস্থলে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবিতে সারাদেশের সব ইন্টার্ন চিকিৎসক একটি যৌক্তিক দাবি উত্থাপন করে আন্দোলনে সম্মিলিত হয়েছেন। যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এমন পারিশ্রমিকে চিকিৎসা সেবা প্রদান করতে গিয়ে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা মানবেতর জীবনযাপন করছেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে দেশের সব সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের সিদ্ধান্ত মোতাবেক ২৪ ও ২৫ মার্চ দুই দিনের কর্মবিরতি ঘোষণা করা হচ্ছে।

আরও পড়ুন

×