কর ও পানির বিল বকেয়া, হাসপাতালের ময়লা নিচ্ছে না পৌরসভা

হাসপাতালের সামনে আবর্জনার স্তূপ। ছবি-সমকাল
ফরিদপুর অফিস
প্রকাশ: ২৭ মার্চ ২০২৪ | ২১:১৬ | আপডেট: ২৭ মার্চ ২০২৪ | ২১:৪৭
ফরিদপুরের সরকারি দুই হাসপাতালের কর্মকর্তাদের সঙ্গে সদর আসনের সংসদ সদস্যের মতবিনিময় সভায় উঠে এলো হাসপাতাল দুটির নানা সমস্যার কথা। সভায় বলা হয়, ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালে দীর্ঘদিন যাবৎ ময়লার স্তূপ। পৌর কর ও পানির বিল বকেয়া থাকায় ওই ময়লা অপসারণ করছে না পৌর কর্তৃপক্ষ। বকেয়া বিলের জন্য সিভিল সার্জনকে হুমকি-ধমকি দেওয়ার কথাও উঠে আসে সভায়।
বুধবার ফরিদপুর জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ওই মতবিনিময় করেন ফরিদপুর-৩ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য এ. কে. আজাদ। জেলা প্রশাসক মো. কামরুল আহসান তালুকদারের সভাপতিত্বে সভায় সিভিল সার্জন ডা. মো. ছিদ্দীকুর রহমান ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালের বিভিন্ন সমস্যার কথা তুলে ধরেন।
তিনি জানান, এই হাসপাতালে চিকিৎসক সংকট রয়েছে। সীমানাপ্রাচীর নিচু; রয়েছে নেশাখোরদের দৌরাত্ম্য। তা ছাড়া চোরের উপদ্রব চলে; দালালরা ঘোরাফেরা করে। তবে সব কিছু ছাপিয়ে উঠে আসে হাসপাতালটির কাছে পৌরসভার পাওনার প্রসঙ্গ। যে কারণে পৌর কর্তৃপক্ষ দীর্ঘদিন বর্জ্য অপসারণ না করায় হাসপাতাল চত্বরে জমেছে ময়লার স্তূপ।
সিভিল সার্জন জানান, ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালের পৌর কর বকেয়া ২ কোটি ২৪ লাখ টাকার বেশি। পানির বিল বকেয়া ১৮ লাখ ৫৩ হাজার টাকার বেশি। তিনি বলেন, ‘বকেয়া বাদ দিয়ে চলতি অর্থবছরের পৌর কর ও পানির বিল নিতে অপারগতা জানিয়ে আসছেন পৌর মেয়র।’ সভায় সিভিল সার্জন জানান, আজও জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে পৌর মেয়র অমিতাভ বোস তাঁকে বকেয়া বিলের জন্য গালাগাল করেন। লোকজন নিয়ে সিভিল সার্জন অফিস ঘেরাও করার হুমকি দেন। চেষ্টা করেও এ বিষয়ে পৌর মেয়র অমিতাভ বোসের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
সভায় একাধিক বক্তা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে লোকবল সংকটের কথা উল্লেখ করেন। সংসদ সদস্য এ. কে. আজাদ হাসপাতাল দুটির সম্পদ, সক্ষমতা ও দায়বদ্ধতা নিরূপণে একজন কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দিতে জেলা প্রশাসকের প্রতি আহ্বান জানান। একই সঙ্গে তিনি চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট নিয়োগ দিয়ে এ ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট সুপারিশমালা প্রণয়নে একটি কমিটি করার সুপারিশ করেন। জেলা প্রশাসক তাঁর প্রস্তাবে সম্মতি জানান।
সভায় আরও বক্তব্য দেন জেলা বিএমএ সভাপতি ডা. আ স ম জাহাঙ্গীর চৌধুরী টিটো, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল ফয়েজ শাহনেওয়াজ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক দীপক কুমার বিশ্বাস, ফরিদপুর সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক মোল্লা, ফরিদপুর পৌরসভার প্যানেল মেয়র আফরোজা সুলতানা, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শওকত আলী জাহিদ, সদস্য আবুল বাতিন, ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার গণেশ আগরওয়ালা প্রমুখ।
মাদক সরবরাহকারী ও বিক্রেতা ধরার নির্দেশ
ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে মাদকমুক্ত রাখতে মাদক সরবরাহকারী ও বিক্রেতাদের ধরার নির্দেশ দিলেন ফরিদপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য এ. কে. আজাদ। বুধবার সদর উপজেলা পরিষদের হলরুমে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তামান্না তাসনীমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মাসিক আইনশৃঙ্খলা সভায় তিনি এ নির্দেশ দেন।
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ. কে. আজাদ বলেন, ‘মাদক যে খায়, তাকে ধরে তো লাভ নেই। যারা মাদক সরবরাহ ও বিক্রি করছে তাদের ধরতে হবে। তা হলেই ভবিষ্যৎ প্রজন্ম মাদকমুক্ত হবে।’ যুবসমাজকে মাদকমুক্ত করতে স্বল্প, মধ্যম ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণের পরামর্শ দেন তিনি।
সভায় আরও বক্তব্য দেন সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক মোল্লা, উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ফরিদা ইয়াসমিন, কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. হাসানুজ্জামান ও সদর উপজেলার সব ইউনিয়নের চেয়ারম্যান।
- বিষয় :
- পৌরসভা
- টাকা
- বকেয়া বিল
- হাসপাতাল
- ময়লার স্তুপ