পাবনায় এক রাতে দুই প্রসূতির মৃত্যু, ক্লিনিক সিলগালা

পাবনা আইডিয়াল হাসপাতাল। ছবি: সংগৃহীত
পাবনা অফিস
প্রকাশ: ১৫ এপ্রিল ২০২৪ | ২২:১২
পাবনায় বেসরকারি আইডিয়াল হাসপাতালে রোববার রাতে কয়েক ঘণ্টা ব্যবধানে দুই প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে। পৃথক চিকিৎসকের অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে (সিজার) সন্তান প্রসবের কয়েক ঘণ্টা পর তাদের মৃত্যু হয় বলে অভিযোগ করেছে পরিবার। তবে দু’জনের সন্তানই সুস্থ রয়েছে।
খবর পেয়ে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সরেজমিন পরিদর্শন করে হাসপাতালটি সিলগালা ও ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি করেছে।
মারা যাওয়া দুই প্রসূতি হলেন পাবনার আটঘরিয়া উপজেলার খিদিরপুরের স্বপ্না খাতুন ও কুষ্টিয়ার শিলাইদহের মাহবুব বিশ্বাসের স্ত্রী ইনসানা খাতুন। প্রসব বেদনা উঠলে স্বজনরা রোববার দুপুরে তাদের এ হাসপাতালে ভর্তি করেন।
চতুর্থ সন্তানের আশায় থাকা ইনসানা খাতুনের সিজার হয় ডা. জাহিদা জহুরা লীজার নেতৃত্বে। আর স্বপ্না খাতুনের অস্ত্রোপচার করেন ডা. কাজী নাহিদা আক্তার লিপি। ভুল অস্ত্রোপচার ও মেয়াদোত্তীর্ণ স্যালাইন শরীরে দেওয়ার কারণে মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন দুই প্রসূতির স্বজন।
ডা. লিপি পাবনার বিশিষ্ট অর্থপেডিক কনসালট্যান্ট ও স্বাচিপের সাধারণ সম্পাদক ডা. জাহেদী হাসান রুমীর স্ত্রী।
এ বিষয়ে ডা. রুমী সমকালকে বলেন, লিবরা কোম্পানির স্যালাইন প্রসূতির শরীরে দেওয়ার পর তাদের মৃত্যু হয়েছে। স্যালাইন মেয়াদোত্তীর্ণ ছিল। অস্ত্রোপচারের আগে দেওয়া ইনজেকশনেও ত্রুটি ছিল। চিকিৎসকদের কোনো গাফিলতি ছিল না। তবে পাবনায় লিবরা কোম্পানির প্রতিনিধির সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত চিকিৎসকরা গা-ঢাকা দিয়েছেন। তবে সূত্রের দাবি, মৃতদের পরিবারের সঙ্গে চিকিৎসকরা অর্থের বিনিময়ে বিষয়টি মীমাংসা করেছেন। এ জন্য থানায় কোনো অভিযোগ দেওয়া হয়নি।
অভিযোগ অস্বীকার করে পাবনা আইডিয়াল হাসপাতালের অংশীদার আবদুল্লাহ আরিফ বলেন, ‘আমরা সব সময় রোগীকে উন্নতমানের চিকিৎসা ও ওষুধ দিয়ে থাকি। একটি ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা এসেছিলেন। তারা তদন্ত করছেন। তদন্তে প্রকৃত ঘটনা বেরিয়ে আসবে।’
পাবনার সিভিল সার্জন ডা. দেওয়ান শহীদুল্লাহ জানান, হাসপাতালটি সিলগালা করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন পাওয়ার পর জানা যাবে, স্যালাইন বা ইনজেকশনে ত্রুটি নাকি চিকিৎসকের গাফিলতিতে প্রসূতিদের মৃত্যু হয়েছে। এরপর পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাসুদ আলম জানান, তাদের কাছে কেউ অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
- বিষয় :
- পাবনা
- প্রসূতির মৃত্যু
- হাসপাতালে
- সিলগালা