ফরিদপুরে ১১ বছরের শিশু ধর্ষণ ও হত্যার দায়ে এক যুবকের মৃত্যুদণ্ড

ফরিদপুরের বোয়ালামারী থানার ইছাডাঙ্গা গ্রামের ১১ বছর বয়সী এক শিশুকে ধর্ষণ এবং হত্যার দায়ে রাসেল সিকদার (২৩) নামে এক যুবকের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার দুপুর দেড়টায় ফরিদপুর জেলা ও দায়রা জজ, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. হাফিজুর রহমান এ আদেশ দেন। একই সঙ্গে তাকে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ২০০০ আইনের ১৯(৪)(খ) ধারায় ৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং ২০ হাজার টাকা জরিমানা এবং ৩০২ ধারায় আরও ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

রাসেল সিকদার বোয়ালমারী থানার ইছাডাঙ্গা গ্রামের মনোয়ার সিকদারের ছেলে। রায় ঘোষণার সময় আসামি আদালতে হাজির ছিল। পরে তাকে জেল হাজতে পাঠানো হয়।

আদালত সূত্রে জানা যায়, শিশুটি আসামি রাসেল সিকদারের দূর সম্পর্কের চাচাতো বোন হয়। শিশুটি তখন একটি বিদ্যালয়ৈ ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। তারা একে অন্যের প্রতিবেশী। শিশুটির মায়ের বাড়ির পাশে রাস্তায় মুদি দোকান রয়েছে। দোকানে রাসেলের কিছু টাকা বাকি ছিল। ঘটনার দিন ২০২২ সালের ২২ অক্টোবর সন্ধ্যায় রাসেল শিশুটিকে তার বাড়ি থেকে পাওনা দেড়শ টাকা নিয়ে আসতে বলে। রাসেল তখন বাড়িতে একাই ছিল। শিশুটি রাসেলের বাড়িতে টাকা আনতে গেলে সে পাশের গোসল খানায় নিয়ে গিয়ে শিশুটিকে প্রথমে ধর্ষণ করে। পরে ধর্ষণের কথা জানাজানির ভয়ে শিশুটিকে হাত পা বেঁধে, গলায় ওড়না পেঁচিয়ে হত্যা করে।

এদিকে, একই সময়ে শিশুটির পরিবার শিশুটিকে খোঁজাখুজি ও মসজিদে মাইকিং করতে থাকে এবং ৯৯৯-এ কল করে পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। রাসেল তখন পালানোর চেষ্টা করলে তাকে কৌশলে আটক করা হয়। পরে রাসেলের দেখানো মতো গোসল খানার ভেরত শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। রাসেলকে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করলে রাসেল নিজেই হত্যার বর্ণনা দিয়ে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয়।

এ ঘটনায় নিহত শিশুর বাবা মো. মোক্তার হোসেন পরের দিন বাদী হয়ে বোয়ালমারী থানায় একটি ধর্ষণ ও ধর্ষণ পরবর্তী হত্যা মামলা করেন। বোয়ালমারী থানার পুলিশ পরিদর্শক মো. আজাদ হোসেন ২০২৩ সালের ৩০ এপ্রিল আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন।

আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী স্বপন পাল বলেন, এ রায়ে আমরা অত্যান্ত খুশি। এ রায়ের ফলে সমাজে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা হবে।