ফরিদপুরে যুবককে গাছে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে

ছবি: সমকাল
ফরিদপুর অফিস
প্রকাশ: ১৫ জুন ২০২৪ | ২৩:৫৮
ফরিদপুরে এক যুবককে রাতে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন চালানোর অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে। গুরুতর আহত ওই যুবককে পুলিশ উদ্ধার করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ট্রমা সেন্টারে ভর্তি করেছে। তবে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান বলছেন, ওই যুবকের চুরি করার অভ্যাস রয়েছে, তাই তাকে স্থানীয়রা মারপিট করেছে।
জানা যায়, গত ১২ জুন (বৃহস্পতিবার) রাতে ফরিদপুর সদর উপজেলার কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের বড় মাধবপুর গ্রামের আনোয়ার খাঁনের ছেলে দেলোয়ার খাঁনকে (৩৬) বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যান স্থানীয় ইউপি সদস্য মনিরুজ্জামান আবেদ, শাহীনসহ তাদের সহযোগীরা। দেলোয়ারকে নিয়ে যাওয়া হয় মাজেদ মল্লিকের বাড়িতে। সেখানে নিয়ে গাছের সঙ্গে দেলোয়ারকে বেঁধে নির্মমভাবে মারপিট করা হয়। পরে দেলোয়ারের পরিবারের সদস্যরা ৯৯৯ নম্বারে ফোন দিলে পুলিশ গিয়ে তাকে উদ্ধার করে বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ট্রমা সেন্টারে ভর্তি করে।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন দেলোয়ার খাঁন বলেন, সৌদি প্রবাসীর স্ত্রীর সঙ্গে শাহীন নামের এক যুবকের প্রেমের সম্পর্কের কথা জেনে প্রতিবাদ করি। এরই জেরে রাতে আমার বাড়িতে এসে হাজির হয় ইউপি সদস্য মনিরুজ্জামান আবেদ, শাহিনসহ তাদের সহযোগীরা। বাইরে থেকে আমাকে ডাকতে থাকে এবং দরজা খুলতে বলে। আমি বলি, যে কথা আছে সকালে শুনবো।
তিনি আরো বলেন, একপর্যায়ে আমি দরজা খুললে মেম্বারসহ সকলে আমাকে জোরপূর্বক ধরে নিয়ে যায় মাজেদ মল্লিকের বাড়িতে। এরপর ওই বাড়ির একটি গাছের সঙ্গে আমাকে বেঁধে বেদম মারপিট করে। আমার দুই পা ও বাম হাত ভেঙে ফেলা হয়, মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানেও আঘাত করা হয়েছে। পরে পরিবারের সদস্যরা ৯৯৯ নম্বরে ফোন দিলে পুলিশ গিয়ে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে।
দেলোয়ার খাঁন বলেন, এঘটনায় শুক্রবার ইউপি সদস্য মনিরুজ্জামান আবেদকে প্রধান আসামি করে ৯ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত ১২ জনের বিরুদ্ধে ফরিদপুর কোতয়ালী থানায় অভিযোগ দিয়েছি।
এদিকে স্থানীয় ইউপি সদস্য মনিরুজ্জামান আবেদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া সম্ভব হয়নি। তবে কৃষ্ণনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এ কে এম বাশারুল আলম বাদশা সমকালকে জানান, দেলোয়ারের চুরি করার অভ্যাস আছে। দীর্ঘদিন যাবত সে স্থানীয়দের মালামাল চুরি করে। ঘটনার রাতেও সে চুরি করতে গিয়ে ধরা পড়ে এলাকাবাসীর হাতে, এরপর তাকে মারপিট করে স্থানীয়রা।
এ বিষয়ে কথা বলতে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. হুমায়ূন কবীরের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি ছুটিতে আছেন জানিয়ে উপ-পরিচালকের সঙ্গে কথা বলতে বলেন। উপ-পরিচালক ডা. দীপক কুমার বিশ্বাসের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি।
ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) শৈলেন চাকমা জানান, এ ঘটনায় ইউপি সদস্য মনিরুজ্জামান আবেদকে প্রধান আসামি করে ৯ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত ১২ জনের বিরুদ্ধে ফরিদপুর কোতয়ালী থানায় অভিযোগ দিয়েছেন দেলোয়ার খাঁন। মারপিটের ঘটনায় অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হবে।
- বিষয় :
- ফরিদপুর
- মারপিট
- নির্যাতন
- গাছে বেঁধে নির্যাতন