মশায় টেকা দায়, চসিকের নেই হেলদোল
ছয় মাসে ডেঙ্গু আক্রান্ত ১৭৫, মৃত্যু ৩

প্রতীকী ছবি
আব্দুল্লাহ আল মামুন, চট্টগ্রাম
প্রকাশ: ২১ জুন ২০২৪ | ০০:৩৮ | আপডেট: ২১ জুন ২০২৪ | ০৯:৫৪
বর্ষায় চট্টগ্রামে বেড়েছে মশার উৎপাত। সঙ্গে বাড়ছে ডেঙ্গুর আক্রামণ। মশার যন্ত্রণায় টেকা দায় হলেও হেলদোল নেই চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) কর্তৃপক্ষের। ইতোমধ্যে ডেঙ্গুতে ১৭৫ জন আক্রান্ত হয়েছেন; মারা গেছেন তিনজন। মশার উপদ্রবের মধ্যে ডেঙ্গুর বাড়বাড়ন্ত নিয়ে শঙ্কিত নগরবাসী।
চসিকের কর্মকর্তারা ডেঙ্গু প্রতিরোধে ভালো প্রস্তুতির বয়ান দিলেও, বাস্তবে এখন পর্যন্ত মশক নিধনে বিশেষ কর্মসূচি শুরুই হয়নি।
নগরবাসীর অভিযোগ, মৌসুম নয়, এখন মশার উপদ্রব থাকে বছরজুড়ে। কিন্তু সিটি করপোরেশন কর্মীদের তেমন একটা মশার ওষুধ ছিটাতে দেখা যায় না। মাঝেমধ্যে এসে তারা দায় সারেন।
নগরীর জামালখানের বাসিন্দা ওমর ফারুক জানান, তুলনামূলক পরিচ্ছন্ন জামালখান। কিন্তু এখানেও সন্ধ্যার পর মশার জন্য টেকা দায়। সড়কে একটু দাঁড়ালে ঝাঁক ধরে শরীরে মশা বসে। নগরের চান্দগাঁও থানার ফরিদারপাড়ার গৃহিণী উম্মে সাদিয়া জানান, মশারির ভেতর মশারি টানিয়ে সন্তানকে রেখেও তিনি আতঙ্কে দিন পার করছেন। দিনেও মশারি খাটাতে হচ্ছে।
গত ৩০ মার্চ চসিক মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী নগরীর ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে মশক নিধন কর্মসূচি উদ্বোধন করেন। সেখানে তিনি মশা নিয়ন্ত্রণের বিজ্ঞানভিত্তিক উপায় সন্ধানে এপ্রিলের মধ্যে গবেষণাগার চালুর ঘোষণা দেন। আড়াই মাসে একটি কক্ষ বরাদ্দ ছাড়া কোনো কার্যক্রম নেই। ওষুধ স্বল্পতায় থমকে গেছে ওয়ার্ডের মশক নিধন কার্যক্রমও।
এ ছাড়া ঈদুল আজহার পর মেয়র আন্তঃবিভাগীয় সভা করে মশক নিধনে বিশেষ কর্মসূচির কথা জানিয়েছিলেন। তবে কবে নাগাদ এ ক্র্যাশ প্রোগ্রাম শুরু হবে, তা জানেন না চসিক কর্মকর্তারাও। যদিও চসিকের মশক ও ম্যালেরিয়া নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা শরফুল ইসলাম মাহী বলেছেন, সেপ্টেম্বর থেকে অক্টোবর ডেঙ্গুর পিক সিজন। তার আগেই শহরে বিশেষ কর্মসূচি শেষ করা হবে। তিনি জানান, সিটি করপোরেশনের কাছে বর্তমানে ২০ হাজার লিটার অ্যাডাল্টিসাইড, ৩ হাজার লিটার লার্ভিসাইড, ১৬ হাজার লিটার এলডিইউ (কালো তেল) ও ভেষজ মসকুবার মজুত আছে ৮০০ লিটার। ৬০টি ফগার ও ১০০টি স্প্রে মেশিন কেনা হয়েছে।
চসিকের বর্জ্য ব্যবস্থাপনাবিষয়ক স্থায়ী কমিটির সভাপতি কাউন্সিলর মোবারক আলী বলেন, ডেঙ্গু মোকাবিলায় আমরা একেবারে কাজ করছি না– এমন নয়। কোরবানির বর্জ্য অপসারণ করেছি। এটাও কিন্তু ডেঙ্গু মোকাবিলার অংশ। শিগগির বড় আঙ্গিকে মশক নিধনে ক্র্যাশ প্রোগ্রাম শুরু করব।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ওমর ফারুক রাসেল বলেন, সিটি করপোরেশনের মশা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি শুধুই শোডাউন। মশা মরে না। শুধু প্রকোপ বাড়লে ওষুধ ছিটিয়ে মৃত্যু রোধ করা যাবে না। বছরজুড়ে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে মশক নিধন কর্মসূচি চালাতে হবে।