ঢাকা রবিবার, ০৬ জুলাই ২০২৫

ছাত্রাবাসের ট্রাঙ্কে মিলল কিশোরের অর্ধগলিত লাশ

ছাত্রাবাসের ট্রাঙ্কে মিলল কিশোরের অর্ধগলিত লাশ

ঈশ্বরদীতে নিহত কিশোর তপুর মায়ের আহাজারি। ছবি- সমকাল

ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২৩ জুন ২০২৪ | ১২:৫৬ | আপডেট: ২৩ জুন ২০২৪ | ১৩:৩৬

পাবনার ঈশ্বরদীর একটি মেস থেকে তপু হোসেন নামে এক কিশোরের ট্রাঙ্কবন্দি অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিখোঁজের ৭ দিন পর শনিবার (২২ জুন) ঈশ্বরদী সরকারী কলেজের পেছনে মশুরিয়া পাড়ার অরণ্য ছাত্রাবাসের তিন তলার ৩০৫ নং কক্ষ থেকে তপুর মরদেহ উদ্ধার হয়। তাকে হত্যার পর লাশ একটি ট্রাঙ্কে লুকিয়ে রাখা হয়েছিল।

নিহত তপু হোসেন সরকারী কলেজ সংলগ্ন খান মঞ্জিল এলাকার রিক্সা চালক আবুল কাশেমের ছেলে। তার বড় ভাই অপু বলেন, এই মাসের ১৫ তারিখ সকাল আনুমানিক ১১টা থেকে নিখোঁজ হয় তপু। এসময় তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি বন্ধ ছিল। ওইদিন রাত ১০টার দিকে তপুর ফোন নম্বর থেকে জানানো হয় তাকে অপহরণ করা হয়েছে। বিকাশে ৩০ হাজার টাকা না দিলে তপুকে হত্যা করা হবে। তখন ৭ হাজার টাকা পাঠানো হয়। এরপর থেকে আর ওই নম্বরে যোগাযোগ করা যাচ্ছিল না। পরদিন তার মা বাদী হয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। এরপর শনিবার পুলিশ তপুর লাশের খোঁজ পায়।

অপু আরও জানান, স্থানীয়দের সঙ্গে পূর্ব শত্রুতার জেরে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে তপুকে। বন্ধুদের দিয়ে তাকে বাড়ির পাশের অরণ্য ছাত্রাবাসের তিন তলার ওই কক্ষে নিয়ে হত্যা করা হয়। এরপর মরদেহ ট্রাঙ্কে ভরে রেখে হত্যাকারীরা পালিয়ে যায়।

অরণ্য ছাত্রাবাসের ৩০৪ নং কক্ষে থাকা কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের ৩য় সেমিস্টারের শিক্ষার্থী তানভীর আহমেদ জানান, ঈদের ছুটিতে ১১ জুন বাড়িতে চলে যায় সে। শনিবার দুপুরে ছাত্রাবাসের নিজ কক্ষে ফেরে। দরজার কাছে আসলে ভেতর থেকে দুর্গন্ধ পায়। পাশের ৩০৫ নং কক্ষের ভেতর থেকে দরজা দিয়ে বের হওয়া রক্ত দেখতে পেয়ে সে মেসের আয়ার মাধ্যমে বিষয়টি মেস মালিককে জানায়। এরপর পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে কক্ষের তালা খুলে ট্রাঙ্কের ভেতরে রাখা মরদেহ দেখতে পান।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, নিহত তপু একই এলাকার কয়েকজন উঠতি বয়সী মাদকাসক্ত কিশোরের সঙ্গে চলাফেরা করতো। তারা সব সময় স্থানীয় হাসুর দোকানে বসে আড্ডা দিত। সম্প্রতি তপুও মাদক সেবন শুরু করেছিল। ঈদের আগে মাদক সেবনকে কেন্দ্র করেই হত্যার ঘটনা ঘটেছে।

ঈশ্বরদী থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) মনিরুল ইসলাম জানান, এই ঘটনায় তপুর বাবা কাশেম হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। এর আগে নিহতের মা ১৬ জুন একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। শনিবার মশুড়িয়া পাড়ার ওই মেসে ট্রাঙ্কের ভেতর থেকে তার মরদেহ উদ্ধার হয়। এই সূত্র ধরেই তদন্ত করে দু'জনকে আটক করা হয়েছে। আরেকজনকে খুঁজছে পুলিশ। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানিয়েছে, তপু মাদকসেবী ছিল। হত্যার পর তার লাশ ট্রাঙ্কে লুকিয়ে রাখা হয়।

ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম জানান, হত্যার রহস্য মোটামুটি নিশ্চিত হয়ে আটকদের নিয়ে অভিযান চালানো হচ্ছে। আশা করা যাচ্ছে বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারের পর রহস্য উন্মোচিত হবে।

আরও পড়ুন

×