ঢাকা শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫

পুনর্বাসন হয়নি রিমালের গৃহহারা মানুষের

পুনর্বাসন হয়নি রিমালের গৃহহারা মানুষের

রিমালে বিধ্বস্ত পটুয়াখালীর সদর উপজেলার লাউকাঠি গ্রামের একটি ঘর সমকাল

পটুয়াখালী প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২৩ জুন ২০২৪ | ২৩:৫৬

স্বামী নেই। দুই নাতি-নাতনি নিয়ে দোতলা টিনের ঘরে থাকেন। পরিবারে অভাব-অনটন লেগেই আছে। ছেলেরা ঢাকায় কাজ করে যা পাঠায় তা দিয়ে কোনোরকমে দুই বেলা খাবার জোটে। এখন সেটিও জোটাতে কষ্ট হচ্ছে। সেখানে নতুন করে ঘর তৈরি করা একেবারেই অসম্ভব। মোবাইল ফোনে কথাগুলো বলছিলেন ঘূর্ণিঝড়ে আহত পটুয়াখালী সদর উপজেলার লাউকাঠি গ্রামের বিধবা আলেয়া বেগম।
একই অবস্থা ঘূর্ণিঝড় রিমালে ক্ষতিগ্রস্ত পটুয়াখালী জেলার  গৃহহারা অসংখ্য পরিবারের। ঘূর্ণিঝড় রিমালের এক মাস পেরিয়ে গেলেও তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হয়নি। ঘরহারা পরিবারের কেউ কেউ অন্যের বাড়িতে আবার অনেকেই খোলা জায়গায় বসবাস করছেন। 

গত ২৬, ২৭ ও ২৮ মে তিন দিনে দীর্ঘস্থায়ী ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে পটুয়াখালীর আট উপজেলায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ৮ থেকে ১০ ফুট জলোচ্ছ্বাস এবং ২২৭ মিলিমিটার বৃষ্টির পানিতেও তলিয়ে যায় ঘের-পুকুরের মাছ, ক্ষেতের ফসল, বেড়িবাঁধ, কাঁচা-পাকা সড়ক ও বনাঞ্চল। বিধ্বস্ত হয় ঘরবাড়ি। 
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন দপ্তরের তালিকা অনুযায়ী, জেলায় ৩৭ হাজার ৩৬৬টি ঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। এর মধ্যে আধাপাকা বাড়ি ৪ হাজার ৬৭৮টি ও কাঁচা ঘর ৩২ হাজার ৬৮৮টি। ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে ১৪৬ কোটি ৬৫ লাখ ২০ হাজার টাকার। 
সরেজমিন সদর উপজেলার লাউকাঠি ইউনিয়ন ঘুরে দেখা যায়, শতাধিক ঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। এর মধ্যে নদীর তীরঘেঁষা ৯ নম্বর ওয়ার্ডের লাউকাঠি গ্রামে বিধবা আলেয়া বেগমের দোতলা টিনের ঘরটি একেবারে দুমড়েমুচড়ে গেছে। ওই ঘরে তিনি দুই নাতি-নাতনি নিয়ে ছিলেন। বিধ্বস্ত ঘরের টিনের চালায় আলেয়ার পাঁজরের হাঁড় ভেঙে যায়। তাঁকে ঢাকায় নেওয়া হযেছে। তাঁর ঘরটি ভাতিজি মিনারা বেগম দেখাশোনা করছেন।  

মিনারা বেগম বলেন, ‘১৫ বছর আগে দুই ছেলে ও দুই মেয়ে রেখে ফুফা মারা যান। তার পর থেকে খেয়ে না খেয়ে অনেক কষ্টে ফুফুর জীবন চলছে। ঘূর্ণিঝড়ে ঘর ভেঙে যাওয়ায় তাঁর দুর্ভোগ আরও বাড়ল।’ ফুফুকে একটা ঘর তুলে দিতে প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ জানান তিনি।   
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা সুমন চন্দ্র দেবনাথ জানান, ঘূর্ণিঝড় রিমালের তাণ্ডবে পটুয়াখালী জেলায় ৭০০ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনে সরকারের পরিকল্পনা রয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত বরাদ্দ 
আসেনি। বরাদ্দ এলেই তাদের পুনর্বাসনের কার্যক্রম শুরু হবে।

আরও পড়ুন

×