স্বাস্থ্য সহকারীর পদ
তথ্য গোপন করে আরও একজনের চাকরি

ছবি: সংগৃহীত
ধর্মপাশা (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০১ আগস্ট ২০২৪ | ০০:১৭
সুনামগঞ্জের ধর্মপাশায় তথ্য গোপন করে স্বাস্থ্য সহকারী পদে আরও এক ব্যক্তির চাকরি লাভের তথ্য জানা গেছে। এ নিয়ে চলছে নানামুখী সমালোচনা।
ধর্মপাশা উপজেলার পাইকুরাটি ইউনিয়নের সুনই গ্রামের পলাশ মিয়া নামে এক ব্যক্তি চাকরি পেতে ব্যবহার করেছেন ভুয়া নাগরিকত্ব সনদপত্র। আবার সেই নাগরিকত্ব সনদে উপস্থাপন করেছেন মিথ্যা ও বানোয়াট তথ্য। তাই পলাশ মিয়ার সমস্ত তথ্য যাচাই-বাছাই করে চাকরি বাতিলের দাবি জানিয়েছেন মো. রবিউল্লাহ নামে চাকরিবঞ্চিত এক প্রার্থী। তিনিও একই পদে চাকরিপ্রত্যাশী ছিলেন।
এর আগে ১৯ জুলাই সমকালে ভুয়া জন্মনিবন্ধনে স্বাস্থ্য সহকারী পদে চাকরি শিরোনামে একই ইউনিয়নে রফিকুল ইসলাম নামে আরও একজনের চাকরি লাভের সংবাদ প্রকাশিত হয়।
২০২৩ সালের ৩১ আগস্ট সুনামগঞ্জ সিভিল সার্জন কার্যালয়ের অধীনে স্বাস্থ্য সহকারী পদে সংশোধিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। চলতি বছরের ১৯ এপ্রিল ওই পদে নিয়োগ পরীক্ষা ও ৭ মে ফলাফল প্রকাশিত হয়। আর পলাশ মিয়া ধর্মপাশা উপজেলার পাইকুরাটি ইউনিয়নের পুরাতন ২ নাম্বার ওয়ার্ডে স্বাস্থ্য সহকারী পদে নিয়োগ লাভ করেন। পলাশ মিয়া মূলত পুরাতন ১ নাম্বার (বর্তমান ১, ২ ও ৩ নাম্বার ওয়ার্ড) ওয়ার্ডের বাসিন্দা। তবে চাকরি লাভের জন্য তথ্য গোপন করে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের নাম ও স্মারক (২০২৪/১০৫) ব্যবহার করে নিজেকে পুরাতন ২ নাম্বার (বর্তমান ৪, ৫ ও ৬ নাম্বার ওয়ার্ড) ওয়ার্ডের স্থায়ী বাসিন্দা পরিচয় দিয়ে চাকরিতে নিয়োগপ্রাপ্ত হন তিনি।
অপরদিকে একই ইউনিয়নের সাবেক ২ নাম্বার ওয়ার্ডের থানুরা গ্রামের বাসিন্দা মো. রবিউল্লাহ বিষয়টি জানার পর গত ১২ মে সুনামগঞ্জ সিভিল সার্জনের কাছে লিখিতভাবে অভিযোগ করেন। এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সুবীর সরকার ২০ মে নাগরিকত্ব সনদপত্রের সত্যতা যাছাইয়ের জন্য সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হককে চিঠি দেন। মোজাম্মেল হক এর তিন দিন পর ডা. সুবীর সরকারকে লিখিতভাবে জানান, পলাশ মিয়া সাবেক ১ নম্বর ওয়ার্ডের স্থায়ী বাসিন্দা এবং তথ্য গোপন করে সাবেক ২ নম্বর ওয়ার্ডের নাগরিকত্ব সনদপত্র তৈরি করে এবং এতে ব্যবহৃত স্মারক নম্বরটি ভুয়া। মঙ্গলবার সকালে পাইকুরাটি ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে গিয়ে এ-সংক্রান্ত রেজিস্টার দেখে চেয়ারম্যানের দেওয়া তথ্যের সত্যতা পাওয়া যায়।
চাকরিবঞ্চিত মো. রবিউল্লাহ জানান, তথ্য গোপন করায় পলাশের নিয়োগ বাতিল করে সাবেক ২ নম্বর ওয়ার্ডের প্রকৃত স্থায়ী কাউকে নিয়োগ দেওয়া হোক। এ দাবিই উত্থাপন করেছেন তিনি।
পাইকুরাটি ইউপি চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হক জানান, ১৮ মে ১০৫ নম্বর স্মারকে পলাশ মিয়াকে কোনো নাগরিকত্ব সনদ দেওয়া হয়নি। সে সাবেক ১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা হয়েও সাবেক ২ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা পরিচয় দিয়ে চাকরিতে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়েছে। এ কাজের জন্য অভিযুক্ত পলাশ তথ্য গোপন করেছে। পলাশ মিয়া চাকরি লাভের জন্য এমনটি করেছেন বলে জানালেও নাগরিকত্ব সনদপত্রে ভুয়া স্মারক নম্বর কে লিখেছে তা বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সুবীর সরকার জানান, নাগরিকত্ব সনদপত্র যাচাইয়ের জন্য সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যানেক চিঠি দিয়েছিলেন। তিনি (চেয়ারম্যান) এ ব্যাপারে চিঠির জবাব দিয়েছেন। তবে কী জবাব দিয়েছেন তা দেখিনি। জবাবের চিঠি সিভিল সার্জনের কাছে পাঠানো হয়েছে। তিনি এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।
- বিষয় :
- সুনামগঞ্জ
- স্বাস্থ্যকর্মী