ঢাকা বৃহস্পতিবার, ০৩ জুলাই ২০২৫

আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় গ্রামে গ্রামে নিরাপত্তা কমিটি

আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় গ্রামে গ্রামে নিরাপত্তা কমিটি

আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সেনাবাহিনীকে নিয়ে পথসভায় চারঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা

চারঘাট (রাজশাহী) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১১ আগস্ট ২০২৪ | ১৮:৪৩

ডাকাতের আতঙ্কে কয়েক দিন নির্ঘুম রাত পার করার পর স্বস্তি ফিরেছে চারঘাট উপজেলার গ্রামগুলোতে। প্রতিটি বাজার ও গ্রামে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার তত্ত্বাবধানে গঠন করা হয়েছে নিরাপত্তা কমিটি।

বেশ কয়েকটি গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে, কমিটির সদস্যরা এলাকাবাসীকে সঙ্গে নিয়ে পাহারা দিচ্ছেন। একঘেয়েমি কাটাতে তারা খেলা ও পিকনিকের আয়োজন করছেন। এতে সামাজিক সম্প্রীতির পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিও নিয়ন্ত্রণে এসেছে। গত সোমবার দুপুরে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। এর পর চারঘাটের বিভিন্ন এলাকায় সরকারদলীয় নেতাকর্মীর স্থাপনা ও বাড়িতে হামলা-লুটপাটের ঘটনা ঘটে। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে গৌরশহরপুর গ্রামের সাবিনা ইয়াসমিনের চারটি গরু লুট করে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। বিকেলে সরদহ বাজারের পাইকারি মুদি ব্যবসায়ী সাহাবুদ্দিন স্টোরের মালপত্র লুট করা হয়। এতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। 

সোমবার সারাদেশের মতো এ উপজেলাতেও ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমি সারদা ও রাজশাহী ক্যাডেট কলেজ চারঘাট উপজেলায় অবস্থিত। এই দুই প্রতিষ্ঠানেও হামলার শঙ্কা তৈরি হয়। এ অবস্থায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইদা খানম বিএনপি-জামায়াতের নেতাদের সঙ্গে তাৎক্ষণিক যোগাযোগ করেন। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে সব পক্ষকে এক হয়ে কাজ করার আহ্বান জানান। 

রোববার উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক দেখা গেছে। মাঠে সেনাবাহিনী ও বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্যাডেট কোরের (বিএনসিসি) সদস্যদের দেখা গেছে। তবে পুলিশ দায়িত্ব পালন না করায় সাধারণ মানুষের মধ্যে উদ্বেগ ছিল। 

প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, বিএনসিসির সদস্যদের নিয়ে উপজেলার ছয়টি ইউনিয়ন ও পৌরসভায় সাতটি কমিটি করা হয়েছে। তারা মাঠে থেকে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ, স্থাপনা পাহারা, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ করছে। প্রতিটি হাটবাজারে কমিটি করা হয়েছে। উপজেলা মডেল মসজিদের ইমাম ও ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে মসজিদভিত্তিক কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ ছাড়া রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী, সুশীল সমাজ, পেশাজীবী ও সাংবাদিকদের নিয়েও আলাদা কমিটি করা হয়েছে। এসব কমিটির সহায়তায় তিনটি গরু ও মুদি দোকানির মালপত্র উদ্ধার করা হয়। এ ছাড়া শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীন উপজেলার পাদুকা পল্লীর কমন ফ্যাসিলিটি সেন্টারের লুট হওয়া মালপত্রও উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।

উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মুরাদ পাশা বলেন, সরকার পতনের পর কিছু অতি উৎসাহী মানুষ ভাঙচুর ও লুটপাট শুরু করে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে পরামর্শ করে কমিটি করে গ্রাম ও বাজারগুলো পাহারা দিচ্ছি। এতে পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইদা খানম বলেন, রাষ্ট্রীয় সম্পদ নষ্ট করলে জনগণের পয়সাতেই আবার গড়তে হবে। তাই নিজেদের স্বার্থে এসব সম্পদ রক্ষা করতে হবে। আশা করছি, খুব দ্রুত পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে।


 

আরও পড়ুন

×