ঢাকা শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫

সৌদি আরবের খেজুর চাষে সফল ‘খেজুর মোতালেব’

সৌদি আরবের খেজুর চাষে সফল ‘খেজুর মোতালেব’

ভালুকার পাড়াগাঁও গ্রামে বাগানের গাছে ধরে আছে খেজুর সমকাল

এম এ মালেক খান উজ্জল  ভালুকা (ময়মনসিংহ)

প্রকাশ: ২০ আগস্ট ২০২৪ | ০০:৫৪

ভালুকার পাড়াগাঁও গ্রামের মো. আ. মোতালেব। সংসারে সচ্ছলতা ফেরাতে তিনি পাড়ি জমিয়েছিলেন সৌদি আরবে। সেখানে ১৯৯৮ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত তিন বছর খেজুর বাগানে কাজ করেছেন। তবে যে বেতন পেতেন, তাতে সংসারে সচ্ছলতা ফেরানো সম্ভব ছিল না। সে সময় তিনি দেশে ফিরে খেজুর বাগান করে ভাগ্যবদলের পরিকল্পনা করেন। পরে দেশে ফেরার সময় ৩৫ কেজি উন্নত জাতের খেজুরের বীজ নিয়ে আসেন।
মোতালেব বাড়ির আঙিনায় ৭০ শতাংশ জমিতে ২৭৫টি চারা করে বাগান শুরু করেন। এরপর বেড়েই চলেছে বাগানের আকার। বর্তমানে ৫ একর জমিতে তিনটি বাগান রয়েছে। দুটি ফলনশীল এবং একটিতে চারা উৎপাদন করা হয়। বাগানে আজওয়া, শুক্কারি ও বক্রীসহ বিভিন্ন জাতের গাছ রয়েছে, ফলনও বাড়ছে। দুই হাজার ফলনশীল গাছ ছাড়াও বাগানে প্রায় ১৫ হাজার চারা রয়েছে। প্রতিটি বিক্রি হচ্ছে এক থেকে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত। তবে কলম চারার দাম বেশি।
মোতালেবের হাত ধরে ভালুকায় এখন বাণিজ্যিকভাবে চাষ করা হচ্ছে সৌদি আরবের খেজুর। তিনি পরিচিতি পেয়েছেন খেজুর মোতালেব হিসেবে।
মোতালেব জানান, শুরুতে আত্মীয়স্বজন, প্রতিবেশী ও এলাকার মানুষ সৌদি খেজুর বাগান করার উদ্যোগকে পাগলামি বলা ছাড়াও বিরূপ মন্তব্য করেন। তবে প্রথম পর্যায়ে বীজ থেকে চারা উৎপাদন শুরুর পর তাঁকে পেছনে তাকাতে হয়নি। 
ফরিদপুর, রংপুর, ঢাকা, গাজীপুর, নাটোর, পাবনা ও টাঙ্গাইলের ঘাটাইলসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় চারার চাহিদা রয়েছে। বাগানে উৎপাদিত খেজুর প্রতি কেজি আড়াই থেকে তিন হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি করেছেন। 
মোতালেব বলেন, খেজুর বিক্রি করে নয়, তাঁর ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটেছে মূলত চারা বিক্রি করে। কারণ ফলন আসার বহু আগেই চারা বিক্রি শুরু হয়। পৃষ্ঠপোষকতা পেলে দেশজুড়ে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে সৌদি আরবের খেজুরের চাষ ছড়িয়ে দেওয়া সম্ভব। চাষিদের তিনি প্রশিক্ষণ দিতেও প্রস্তুত। ২৫ কোটি টাকার মতো বিক্রি উপযোগী চারা আছে। সব মিলিয়ে খেজুর বাগান থেকে তিনি অন্তত ৩০ কোটি টাকার মালিক হয়েছেন।
আব্দুল মোতালেব সৌদি আরবের খেজুর চাষে সফল জানিয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জেসমিন জাহান বলেন, বাগানটি তারা নিয়মিত তদারকি করছেন। এ বিষয়ে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর অবগত। তবে কর্তৃপক্ষ আলাদা কোনো প্রকল্প গ্রহণ করেনি।

আরও পড়ুন

×