ধর্মপাশা
মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার চান বিএনপি নেতাকর্মীরা

দলীয় লোগো
ধর্মপাশা (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২২ আগস্ট ২০২৪ | ০৪:৫৮
উজ্জ্বল মিয়া একজন ইউপি সদস্য। দীর্ঘদিন ধরে জড়িয়ে আছেন বিএনপি রাজনীতির সঙ্গে। উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক তিনি। গত বছর ২৮ অক্টোবর তিনিসহ আরও কয়েকজন সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা থেকে বিএনপির মহাসমাবেশে যোগ দিতে যাত্রা করেছিলেন ঢাকায়। কিন্তু কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে ট্রেন থেকে নামতেই তিনিসহ ধর্মপাশার ৭ জন আটক হন পুলিশের হাতে। অন্যরা পালিয়ে যান।
উজ্জ্বল মিয়াসহ আটককৃতদের নিয়ে যাওয়া হয় শাহজাহানপুর থানায়। পরদিন সকালে তাদের নামে ভিন্ন ভিন্ন থানায় মিথ্যা মামলা করা হয়। দিনভর এক থানা থেকে অন্য থানায় ঘুরিয়ে অবশেষে কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে আটক রাখা হয়। পরে সেখান থেকে কাসিমপুর কারাগারে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে দুই মাসেরও অধিক সময় কারাভোগের পর মুক্তি মেলে উজ্জ্বল মিয়ার। গত বুধবার বিকেলে ধর্মপাশা উপজেলা বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে এ প্রতিবেদকের সঙ্গে এমন অত্যাচার ও নিপীড়নের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে চোখ ছলছল করছিল উজ্জ্বল মিয়ার। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেন তিনি। উজ্জ্বল মিয়া বলেন, তাঁর বিরুদ্ধে দায়ের করা মিথ্যা মামলাগুলো অবিলম্বে প্রত্যাহার চান তিনি।
শুধু উজ্জ্বল মিয়াই নন, আওয়ামী লীগ সরকারের দীর্ঘ শাসনামলে ধর্মপাশা উপজেলা বিএনিপ এবং অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে অসংখ্য মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। রাজনৈতিক কারণে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে অনেক নেতাকর্মী দিনের পর দিন পালিয়ে বেড়িয়েছেন।
দেশের পরিবর্তিত রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে আওয়ামী লীগ থেকে অনেকে বিএনপিতে ভেড়ার চেষ্টা করছেন। এ নিয়ে ত্যাগী নেতাকর্মীর মধ্যে বিরাজ করছে চরম ক্ষোভ। এ বিষয়ে উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব সারোয়ার হোসেন বলেন, দলের দুর্দিনে অনেকেই দূরে সরে গিয়েছিলেন। পিঠ বাঁচাতে কেউ কেউ বিএনপি থেকে আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছিলেন। অনেকে আবার দলীয় কার্যক্রম থেকে নিজেদের গুটিয়ে নিয়েছিলেন। এখন বিএনপি যখন ঘুরে দাঁড়িয়েছে, তখনই সুযোগসন্ধানী লোকেরা আবারও দলে যোগ দেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক ওবায়দুর রহমান মজুমদার বলেন, মিথ্যা মামলার কারণে কত রাত যে বাসার বাইরে নির্ঘুম কাটাতে হয়েছে, তা গুণে শেষ করতে পারবেন না। অবিলম্বে তাঁর বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান তিনি।
উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক শওকত আলী বেপারি বলেন, বিভিন্ন মামলায় আসামি হওয়ার কারণে মাঝেমধ্যে নিজের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে বসলে আওয়ামী লীগের লোকজনকে দেখলেই মনে হতো এই বুঝি পুলিশ নিয়ে আসছে তাঁকে ধরিয়ে দেওয়ার জন্য। কখনও কখনও পুলিশের ভয়ে দোকান খোলা রেখেই পালাতে হয়েছে। বিনা অপরাধে মামলায় জর্জরিত হয়ে জেল খাটতে হয়েছে।
উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক এসএম রহমত বলেন, আওয়ামী শাসনামলে গ্রাম্য সালিশও আওয়ামী লীগ লোকদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত ছিল। একের পর এক মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে কৌশলে বিএনপি পরিবারের লোকজনদের সর্বস্বান্ত করা হয়েছে। নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে দায়ের করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান তিনি।
উপজেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল মোতালিব খাঁন বলেন, শেখ হাসিনা সরকারের আমলে দলের অনেক নেতাকর্মী নানা মিথ্যা মামলায় জর্জরিত হয়েছেন। বিনা কারণে দীর্ঘদিন কারাগারে থাকতে হয়েছে। বিএনপি নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে দায়ের করা মিথ্যা মামলাগুলো দ্রুত প্রত্যাহার করা উচিত।
- বিষয় :
- ধর্মপাশা