চারার হাটে সবাই খুশি অর্থযোগ কৃষকের

ভরা মৌসুমে রাজবাড়ীতে জমে উঠেছে ধানের চারার হাট সমকাল
রাজবাড়ী প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২২ আগস্ট ২০২৪ | ২৩:১৩
শ্রাবণ মাসের প্রথম দিকে এক পাকি (২৫ শতাংশ) জমিতে চিনি আতপ ও ৮৭ ধানের বীজ বপন করেছিলেন রাজবাড়ী সদরের বানিবহ ইউনিয়নের কৃষক ইদ্রিস আলী। বীজ সংগ্রহ করেছিলেন কৃষি অফিস থেকে। কিছু বাজার থেকে কিনেছেন। ক্ষেত পরিচর্যাসহ বিভিন্ন খাতে তাঁর ১৬ হাজার টাকা খরচ হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, চারা ভালো হয়েছে। এ পর্যন্ত প্রায় ৪০ হাজার টাকার বিক্রি করেছেন। প্রতি আঁটি ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। চারার চাহিদাও রয়েছে। কিছু চারা রেখেছেন নিজের জমিতে রোপণের জন্য।
ভরা মৌসুমে রাজবাড়ীতে জমে উঠেছে ধানের চারার হাট। জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ইদ্রিস আলীর মতো বিক্রেতা ও ক্রেতারা আসছেন চারা কেনাবেচা করতে। ভালো দাম পেয়ে বিক্রেতারা খুশি। মনমতো কিনতে পেরে খুশি ক্রেতাও। শহরের পাওয়ার হাউসের সামনে তিন রাস্তার মোড়ে বসছে এ চারার হাট। সপ্তাহের প্রতি বৃহস্পতি ও রোববার চলে বেচাকেনা।
বৃহস্পতিবার সরেজমিন দেখা যায়, ধানের চারা নিয়ে বসে আছেন কৃষক। কেউ এসে দামাদামি করছেন। অনেকে ভ্যান, অটোরিকশায় করে চারা নিয়ে আসছিলেন। আবার কেউ কিনে ভ্যানে করে নিয়ে যাচ্ছেন। কৃষকরা জানান, হাটে নানা ধরনের ধানের চারা পাওয়া যায়। এর মধ্যে শিশুমতি, ব্রি-৭৫, ব্রি-৩৯, সিএস, ধানিগোলা, কালিজিরা, চিনি আতপ, ব্রি৫১, ব্রি৫২ রয়েছে। অনেক জাতের চারা থাকায় কৃষকরা দূর-দূরান্ত থেকে আসেন এখানে। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে বেচাকেনা।
কৃষক কালাম মোল্লা বিনা-১৭ ধানের চারা বিক্রি করতে এসেছিলেন। চার হাজার টাকা খরচে আট শতাংশ জমিতে বপন করেছিলেন চারা। তিনি ১০০ থেকে দেড়শ’ টাকা আঁটি বিক্রি করছেন জানিয়ে বলেন, চাহিদা বেশ ভালো। বাকি যে চারা রয়েছে, সেগুলো তাঁর তিন পাকি জমিতে রোপণ করবেন। তবে বানিবহ থেকে রাজবাড়ী শহরে আনতে পরিবহন খরচ বেশিই পড়েছে।
সদর উপজেলার ব্রাহ্মণকান্দা গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল জব্বার মোল্লা পেশায় কৃষক। ১৮ শতাংশ জমির জন্য তিনি ধানের চারা খুঁজছিলেন। তাঁর ভাষ্য, এ হাটে অনেক ধরনের ধানের চারা পাওয়া যায়। নিজের পছন্দমতো চারা কিনবেন তিনি।
এ বিষয়ে সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জনি খান বলেন, আমন মৌসুমে কৃষকরা বীজ সংগ্রহ করে ধানের চারা তৈরি করেন। তাদের বিভিন্ন সময়ে নানা পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করা হয়। কখন কীভাবে পরিচর্যা করতে হবে, কীটনাশক দিতে হবে– এসব পরামর্শ দেওয়া হয়। জেলার নিচু এলাকায় বীজতলা করা যায় না। সেসব এলাকার কৃষকরা চারা সুলভ মূল্যে কিনতে পারছেন। এটি কৃষকদের ভালো উদ্যোগ।
- বিষয় :
- ধানের চারা