সাভারে হাসিনা-কাদেরসহ ১২৬ জনের বিরুদ্ধে আরও এক হত্যা মামলা

ছবি: সংগৃহীত
নিজস্ব প্রতিবেদক, সাভার
প্রকাশ: ২৩ আগস্ট ২০২৪ | ২৩:৪৬
সাভারে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শিক্ষার্থী মো. আব্দুল আহাদ সৈকত (১৭) নিহতের ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ এ আরাফাতসহ ১২৬ জনের নামে আরও একটি হত্যা মামলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে নিহত সৈকতের বাবা নজরুল ইসলাম বাদী হয়ে সাভার মডেল থানায় এ মামলাটি করেন।
নিহত সৈকত বগুড়া জেলার সোনাতলা থানার উত্তর দিগলকান্দি গ্রামের নজরুল ইসলামের ছেলে। সৈকত পরিবারের সঙ্গে সাভারের শাহীবাগ এলাকায় থেকে ঢাকা কমার্স কলেজের একাদশ শ্রেণিতে পড়াশুনা করতেন।
মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, গত ৫ আগস্ট মো. আব্দুল আহাদ সৈকত সন্ধ্যায় সাভারের থানা রোডের মুক্তিরমোড় (আক্কেল আলী মোড়) এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন যোগ দেন। একপর্যায়ে ১ নম্বর থেকে ১০ নম্বর ক্রমিকের আসামিদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ হুকুমে এবং প্ররোচনায় উল্লিখিত আসামিরা ও আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরাসহ আওয়ামী অঙ্গ সংগঠনের অজ্ঞাতনামা আরও আসামিরা হামলা চালায়। তাদের হাতে থাকা আগ্নেয়াস্ত্র ও দেশীয় অস্ত্রসহ ধাওয়া করে যাকে পায় তাকেই এলোপাতাড়ি পিটায় এবং আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে উপর্যুপরি গুলি বর্ষণ করলে সৈকতের মাথার বিভিন্ন অংশে গুলিবিদ্ধ হয়ে রাস্তায় লুটিয়ে পড়ে। পরে আন্দোলনরতরা তাকে গুরুতর অবস্থায় সাভারের এনাম মেডিকেলে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন- সাবেক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান (৭২), সাবেক সাভার উপজেলা চেয়ারম্যান মঞ্জুরুল আলম রাজিব (৫৫), সাবেক মেয়র হাজী আব্দুল গণি (৭২), ২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম মানিক মোল্লা (৬৫), তেঁতুলজোড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ফখরুল আলম সমর (৫০), বিরুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান সুজন (৪৫), সাবেক চেয়ারম্যান সেলিম মন্ডল (৪৭), সাভার সদর ইউনিয়ন সাবেক চেয়ারম্যান সোহেল রানা (৪২), ভাকুর্তা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান লিয়াকত হোসেন (৫৫), আশুলিয়া থানা আওয়ামী লীগ সভাপতি ফারুক হাসান তুহিন (৪৮), মাজহারুল ইসলাম রুবেল (৩৭), সাবেক ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমানের এপিএস শামীম আহমেদ (৫০), সাভার উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি আতিকুর রহমান আতিক (৩৫), রাজু আহমেদ (৩৫), মোবারক হোসেন খান পলক (২৮), মো. আব্দুল কুদ্দুস (৩৬), কামরুল হাসান শাহীন (৪৮), মেহেদী হাসান তুষার (৪৫) সায়েম মোল্লা (৪৭), আব্দুর রব (৪৪), রাজু মোল্লা (৩২), জাকির হোসেন ওরফে মামা জাকির (৩৮), মো. ইসরাফিল, রায়হান ইসলাম রিপন (২৮), মাসুম দেওয়ান @ মুরগী মাসুম (২৫), হাসান আলী (৪৮), হৃদয় সরকার, জীবন সরকার, আহমেদ ফয়সাল নাঈম তূর্য্য (৩০), পাভেল ওরফে তোতলা পাভেল (৩৫), আব্দুর রাজ্জাক (৫০), প্রবাল (৪৫), হাজী মো. আব্বাস আলী (৬০), মো. হাবিজ উদ্দিন (৫৫), হান্নান মিয়া (৪৫), মো. রাজা মিয়া (৪০), মো. গিয়াস উদ্দিন (৫৫), ফজলুল হক ওরফে ফজা (৫৫), আব্দুর রব (৪০), শরিফুল ইসলাম শরীফ, রুবায়েত ইসলাম শান্ত, মমতাজুল হক জনি, আমজাদ হোসেন (৬০), সোহাগ (৩০), রমজান মিয়া (৩২), রুবেল (৩৫), উজ্জল (৪০), আব্দুল মতিন (৫৫), মহিদুল ইসলাম রুবেল ওরফে গিট্টু রুবেল, আসিফ (২৫), মোহাম্মাদ হোসেন (৫৩), মো. রমজান আলী (৫২), সাইফুল ইসলাম (৪২), কিরণ (৪৫), ইউনুছ পারভেজ (৪৫), সিদ্দিক (৫৭), হামিদ (৫৫), মামুন (৪২), লতিফ (১৯), নুরুল আমীন রানা ওরফে ব্যস্ত রানা (৫২), মুকুল (৫২), সেলিম আহমেদ ওরফে জুট সেলিম (৫০), কাউন্সিলর হাজী সেলিম মিয়া (৫০), রফিক (৩৫) সহ আরও অজ্ঞাতনামা ২৫০-৩০০ জন আসামির বিরুদ্ধে মামলাটি করা হয়।
মামলার বাদী নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আমার একটি মাত্র ছেলে ছিল। যারা তাকে মেরে ফেলেছে, আমি তাদের বিচার চাই।’
সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলমান রয়েছে।