জমে উঠেছে চারার হাট জাত বাছাইয়ে দুশ্চিন্তা

রৌমারী উপজেলার কর্তিমারী বাজারে হাটে আমন ধানের চারা বেচাকেনা করছেন স্থানীয়রা সমকাল
রৌমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ০০:২৪
রৌমারীতে জমে উঠেছে রোপা আমন ধানের চারার হাট। মৌসুমি চারার হাটে বিনা-৭, বিনা-১৭, ব্রি-ধান-৫২, এ-জেটসহ বিক্রি করা হচ্ছে নানা জাতের ধানের চারা। জাত চেনার ক্ষেত্রে বিক্রেতাদের কথার ওপরই ভরসা করতে হচ্ছে কৃষকের। তবে বাজার থেকে চারা কেনার সময় জাত বাছাইয়ে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছে কৃষি দপ্তর।
সরেজমিন কর্তিমারী বাজারে চারার হাট ঘুরে দেখা যায়, হাটে নানা জাতের ধানের চারার পসরা সাজিয়ে বসে আছেন বিক্রেতারা। ঘুরে ঘুরে তাদের পছন্দসই ধানের চারা কিনছেন ক্রেতারা। চারার প্রকারভেদে দাম চাচ্ছেন বিক্রেতারাও। এ হাটে পণ (৮০ আটি চারা) হিসেবে চারা বিক্রি করা হয়। জাতভেদে প্রতি পণ চারা বিক্রি হচ্ছে ৫০০-৮০০ টাকায়।
হাটে ধানের চারা কিনতে আসা কৃষক আকাব্বর আলী জানান, এ মৌসুমে ধানের চারার এই হাট বেশ জমাট থাকে। চারার দরকার হলে এখান থেকেই ক্রয় করেন। বিনা-৭ জাতের সাড়ে তিন পণ ধানের চারা কিনেছেন তিনি। এ চারা দিয়ে ৩০ শতক জমি রোপণ করতে পারবেন।
রাজীবপুর উপজেলার শীবের ডাঙ্গী এলাকা থেকে বিনা-৭ ধানের চারা বিক্রি করতে এসেছেন কৃষক মোজাম্মেল হক। তিনি বলেন, ‘গাইরা (রোপণ করে) কিছু চারা বাচ্ছে, হেডি বিক্রি করার নিগা হাডে আনছি। প্রতি পণের দাম ৪০০ টাকা উঠছে।’
যাদুরচর ইউনিয়নের কোমরভাঙ্গী এলাকার কৃষক আছর উদ্দিন
বিনা-৭ ধানের চারার প্রতি পণ দাম হাঁকছেন ৬০০ টাকা। তাঁর দাবি, তাঁর চারায় ভেজাল নেই।
ব্রি-ধান-৫২ জাতের ৩ পণ চারা বিক্রি করতে এনেছেন বন্দবেড় ইউনিয়নের কৃষক আলম মিয়া। তিনি প্রতি পণ ধানের চারার দাম হাঁকছেন ৮০০ টাকা। আলম মিয়া জানান, কেউ ৬০০ টাকা, কেউ বা সাড়ে ৬০০ টাকা পণ দাম বলছেন। তাঁর আশা, ৭০০ টাকা হলে বেঁচে দেবেন।
অনেকের কম দামে এ জাতের চারা বিক্রি করা প্রসঙ্গে আলম মিয়া জানান, কেউ কেউ বীজতলা তৈরি করে এক জাতের, বাজারে বিক্রি করতে এসে বলে আরেক জাতের কথা। এ কথাই বিশ্বাস করে চারা ক্রয় করেন কৃষক। পরে দেখেন, আবাদ ভালো হয়নি।
এ-জেট জাতের ধানের চারা বিক্রি করতে চারার হাটে আসেন একই এলাকার কৃষক মজনু মিয়া। তিনি বলেন, বাজারে এ জাতের ধানের চারার চাহিদা বেশি। এ জাতের ধান পানিতে ৮-১০ দিন তলিয়ে থাকলেও নষ্ট হয় না।
রৌমারী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কাইয়ুম চৌধুরীর ভাষ্য, বিভিন্ন হাট থেকে চারা কিনছেন কৃষক। তবে বাজার থেকে চারা না কেনার পরামর্শ তাঁর। তিনি বলেন, বাজারে নানা জাতের চারা বিক্রি করা হচ্ছে। কোনটা কোন জাতের, সেটা বাছাই করা ও চেনা মুশকিল। এতে কৃষকের ঠকার সম্ভাবনা বেশি। এ জন্য কৃষককে বীজ কিনে চারা উৎপাদন করে রোপণ করার পরামর্শ দিয়েছেন।
অন্য এক প্রশ্নের জবাবে কৃষি কর্মকর্তা কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, এবার উপজেলায় ৮ হাজার ৫৫১ হেক্টর রোপা আমান ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
- বিষয় :
- ধানের চারা