ঢাকা শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫

চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

‘ভিসিবিরোধী’ আন্দোলনে জড়িত দুই শিক্ষককে অব্যাহতি

‘ভিসিবিরোধী’ আন্দোলনে জড়িত দুই শিক্ষককে অব্যাহতি

ছবি- সংগৃহীত

চাঁদপুর প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ১৩:৪১ | আপডেট: ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ১৪:১৪

চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চাঁবিপ্রবি) দুই শিক্ষককে অব্যাহতি দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। শৃঙ্খলা পরিপন্থী কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত থাকায় তাদের অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

সোমবার উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. নাছিম আখতারের অনুমোদনক্রমে এবং রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মেজর (অব.) মো. আব্দুল হাই স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এ আদেশ দেয়া হয়।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরিরত অবস্থায় চাঁবিপ্রবি আইন- ২০২০ এর ৪৩ (৪) ও ৪৩(৫) ধারার পরিপন্থী কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত থাকায় এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের নির্দেশনা অমান্য করায় এবং নিয়োগ পত্রের ৪নং শর্তানুসারে প্রবেশনারি পিরিয়ডে চাকরি সন্তোষজনক না হওয়ায় কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রভাষক প্রিন্স মাহমুদ ও ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন টেকনোলোজি বিভাগের প্রভাষক নাজিম উদ্দিনকে চাকুরি থেকে অব্যাহতি প্রদান করা হয়। এতে আরও বলা হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বার্থে এই আদেশ জারি করা হইল এবং ইহা অবিলম্বে কার্যকর হইবে।

অব্যাহতিপ্রাপ্ত শিক্ষকরা বিশ্ববিদ্যালয়টিতে চলমান ভিসিবিরোধী আন্দোলনে সম্পৃক্ত রয়েছেন। অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. নাছিম আখতার গত ৩০ জুলাই থেকে ক্যাম্পাসের বাইরে রয়েছেন। শেখ হাসিনা সরকার পতনের থেকে উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত রেখেছেন শিক্ষার্থীরা। এছাড়া শিক্ষকদের অবরুদ্ধ করে তাদের কাছ থেকে লিখিত নেওয়ার ঘটনাও ঘটিয়েছে শিক্ষার্থীরা।

ক্যাম্পাস সূত্রে জানা গেছে, শিক্ষার্থীদের চাপের মুখে শিক্ষকরা আন্দোলনে যোগদানের পর উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. নাছিম আখতার শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ হন। পরবর্তীতে নানা অভিযোগে শিক্ষকদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে থাকেন। এছাড়াও শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চলাকালে ছাত্রলীগসহ আওয়ামী নেতাদের শিক্ষার্থীদের তথ্য দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। একইসঙ্গে তিনি গোয়েন্দা বাহিনীর সদস্যদের কাছে আন্দোলনে থাকা শিক্ষার্থীদের তথ্য দিয়েছেন বলে অভিযোগ আছে।

ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন টেকনোলোজি বিভাগের অব্যাহতিপ্রাপ্ত প্রভাষক নাজিম উদ্দিন বলেন, আমরা অবরুদ্ধ হওয়ার দিন ভিসি ও রেজিস্ট্রার স্যারের সঙ্গে বারবার যোগাযোগ করি যেন আমাদের অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে মুক্ত করার ব্যবস্থা নেন। কিন্তু তারা কর্ণপাত করেননি। এখন আন্দোলন দমাতে আমাদের বরখাস্তের আদেশ দিয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, অজ্ঞাত স্থানে থেকে অবাঞ্ছিত ঘোষিত অবস্থায় তিনি কোনোভাবেই আমাদের বরখাস্ত করতে পারেন না। নিয়মবহির্ভূত এই আদেশের কোনো আইনি ভিত্তি নেই। অবৈধ এই আদেশের বিরুদ্ধে আমরা আইনি পদক্ষেপ নিব। ইউজিসি ও শিক্ষামন্ত্রণালয়কে জানাবো। ইতোমধ্যে আমরা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবকে ব্যাপারটি অবহিত করেছি।

অব্যহতির বিষয়ে চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চাঁবিপ্রবি) রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মেজর (অব.) মো. আব্দুল হাই বলেন, তাদের প্রবেশনারি পিরিয়ড চলছিল এবং তা সন্তোষজনক না হওয়ায় তাদের অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে উপাচার্য ড. নাছিম আখতার সঙ্গে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তিনি রিসিভ করেননি।

এদিকে অস্থায়ী ক্যাম্পাসে দাঁড়ানো এই পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ভিসি, রেজিস্ট্রার কেউ না থাকায় অভিভাবকহীন হয়ে পড়ে আছে। ক্লাস-পরীক্ষাও হচ্ছে না।
 

আরও পড়ুন

×