আখাউড়ায় শিক্ষকের লাশ নিয়ে বিক্ষোভ
ইউএনওর বিরুদ্ধে মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ

শিক্ষক এরফানুল ইসলাম শরীফ। ছবি: সংগৃহীত
আখাউড়া (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ০৫:৪৫
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় এরফানুল ইসলাম শরীফ নামে এক শিক্ষকের মৃত্যু হয়েছে। পরে গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে তাঁর মরদেহ নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেন শিক্ষার্থীসহ স্থানীয়রা। সেনাসদস্যরা এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন।
শরীফ উপজেলার হীরাপুর শহীদ নোয়াব মেমোরিয়াল উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ছিলেন। পরিবার ও আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, ইউএনও গাজালা পারভীন রুহীর মানসিক নির্যাতন সইতে না পেরে হার্ট অ্যাটাকে মারা গেছেন শরীফ।
বিদ্যালয়ের জ্যেষ্ঠ শিক্ষক দেওয়ান সাজিদুল হক জানান, ১৫ বছর আগে শরীফ প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পেলেও জামায়াত ট্যাগ দিয়ে তাঁকে চেয়ারে বসতে দেননি সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ও তাঁর অনুসারীরা। এ নিয়ে তিনি মানসিক কষ্টে ছিলেন। সম্প্রতি উচ্চ আদালত তাঁর পক্ষে রায় দিয়েছেন। এতে একটি পক্ষ ক্ষুব্ধ। হয়তো তাদেরই কারও কারণে হার্ট অ্যাটাক করেছেন শরীফ।
বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ইউএনও বিদ্যালয়ে গিয়ে শরীফের সঙ্গে একান্তে কথা বলেন। এ সময় মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষ পরিদর্শনে ছিলেন। ১৫-২০ মিনিট পর ইউএনও চলে যান। এর পর একাধিক শিক্ষককে নিয়ে অফিস কক্ষে নাশতা করেন শরীফ। ইউএনওর সঙ্গে তেমন কিছু হয়নি বলেও জানান তিনি। এক পর্যায়ে অসুস্থ হয়ে পড়লে শরীফকে আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন।
খবর পেয়ে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ স্থানীয়রা ছুটে যান। তারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে শরীফের মরদেহ নিয়ে মিছিল করে উপজেলা পরিষদে আসেন। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী রিফাতুল ইসলাম তারেক জানায়, ইউএনওর মানসিক নির্যাতন স্যার সহ্য করতে না পেরে হার্ট অ্যাটাক করেছেন। তারা ইউএনওর বিচার চায়।
শরীফের ভাই আওলাদ হোসেনের অভিযোগ, ইউএনও এবং মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার মানসিক নির্যাতনে তাঁর ভাই মারা গেছেন। সকালে তারা রাধানগরে তাদের বাড়িতে গিয়ে উপজেলা কমপ্লেক্সের দিকে বাড়ির ফটক কেন, তা নিয়ে ক্ষোভ দেখান। এর পর বিদ্যালয়ে গিয়েও তাঁর সঙ্গে উচ্চবাচ্য করেন।
অভিযোগ অস্বীকার করে ইউএনও বলেন, শিক্ষক শরীফের বেতন আটকা পড়েছিল। আমি নিজে তা দেওয়ার ব্যবস্থা করেছি। আমি কেন ওনাকে মানসিক নির্যাতন করতে যাব? তিনি আরও বলেন, উপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্সের কোয়ার্টার পরিদর্শনের অংশ হিসেবে শরীফের বাড়িতে গিয়েছিলাম। বিদ্যালয়েও তাঁর সঙ্গে কোনো উচ্চবাচ্য হয়নি। শুনেছি, আমি আসার অনেক পরে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন।