টাকার ‘খেলনা’ সাবেক রেলমন্ত্রীর বিছানায়

টাকার ‘খেলনা’ সাবেক রেলমন্ত্রীর বিছানায়
কুমিল্লা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ২৩:৫৪
খাটের ওপর বিছানায় বসে আছে তিন শিশু। তাদের সামনে ৫০০ ও ১ হাজার টাকার নোটের অসংখ্য বান্ডিল পড়ে আছে। এক শিশু একটি শপিং ব্যাগে থাকা টাকার বান্ডিল নিয়ে খেলা করছে। আর এক সন্তানকে কোলে নিতে যাচ্ছেন মুজিবুল হক। তাঁর পাশে দাঁড়িয়ে আছেন স্ত্রী অ্যাডভোকেট হনুফা আক্তার রিক্তা। সাবেক এই রেলমন্ত্রীর স্ত্রী-সন্তানদের এমনই একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।
ধারণা করা হচ্ছে, ছবিটি তাঁর এক সন্তানের জন্মদিনে তোলা। তবে ভাইরাল এই ছবিটি ঠিক কবে তোলা, তা জানা যায়নি। এটি মুজিবুল হকের রাজধানীর বাসার বলে তাঁর ঘনিষ্ঠরা নিশ্চিত করেছেন। তিনি কুমিল্লা-১১ (চৌদ্দগ্রাম) আসন থেকে পাঁচবারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য।
মুজিবুল হক ৬৭ বছর বয়সে দীর্ঘ কুমার জীবনের ইতি টেনে আলোচিত হন। তিনি ২০১৪ সালের ৩১ অক্টোবর জেলার চান্দিনা উপজেলার মিরাখলা গ্রামের হনুফা আক্তার রিক্তাকে বিয়ে করেন। ২০১৬ সালের মে মাসে ৬৯ বছর বয়সে তিনি প্রথম কন্যাসন্তানের বাবা হন। ২০১৮ সালের ১৫ মে তাঁর যমজ সন্তানের জন্ম হয়। বর্তমানে তিনি তিন শিশুর জনক। মুজিবুল হক কুমিল্লা-১১ (চৌদ্দগ্রাম) আসন থেকে ১৯৯৬ সালে প্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। চলতি বছরের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যন্ত তিনি ৫ বার নির্বাচিত হন। ১৯৯৮ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত তিনি জাতীয় সংসদের হুইপ ছিলেন। ২০১৪ সালের ৬ জানুয়ারি থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত সরকারের রেলপথ মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সংসদ সদস্য ও মন্ত্রী থাকাকালীন সময়ে তিনি নিজেকে কৃষকের ছেলে বলে গর্ববোধ করতেন।
মুজিবুল হকের ঘনিষ্ঠরা বলেন, ছবিটি তাঁর ঢাকার বাসার। এটি তাঁর ছেলের জন্মদিনে তোলা। তবে ছবিটি ঠিক কবে তোলা তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। সন্তানের জন্মদিন উৎসবকে আরও আনন্দিত করতে সন্তানদের সামনে বান্ডিলে বান্ডিলে টাকা ছড়িয়ে দেন। এ সময় মুজিবুল হকের খুব কাছের কেউ সেই ছবিটি তুলেছেন। রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর ছবিটি সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হয়। কেউ কেউ বলছেন, এসব টাকার বান্ডিল তিনি উপহার হিসেবেও পেতে পারেন। ফেসবুকে অনেকে ছবিটি পোস্ট করে নানা কথা লিখেছেন। আবার অনেকে সেই পোস্টের কমেন্টে বিভিন্ন মন্তব্য করেছেন।
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার তীব্র আন্দোলনের মুখে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ছাড়ার পর সপরিবারে আত্মগোপনে চলে যান মুজিবুল হক। তিনি দেশেই আছেন, নাকি বিদেশে চলে গেছেন– তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এরই মধ্যে তাঁর বিরুদ্ধে ঢাকা ও কুমিল্লায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুলি ও হত্যার ঘটনায় একাধিক মামলা হয়েছে। তাঁর স্ত্রী হনুফা আক্তার রিক্তাও কুমিল্লার কোতোয়ালি থানায় দায়ের করা একটি মামলার আসামি। মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় এ বিষয়ে মুজিবুল হকের বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।
- বিষয় :
- টাকা লুট