পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল
বরাদ্দের অভাবে বন্ধ কিডনি ডায়ালাইসিস প্রকল্পের কাজ
কাজের অগ্রগতি ৬০ ভাগ, সময় বাড়ানো হয়েছে দু’বার

নির্মাণাধীন পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কিডনি ডায়ালাইসিস সেন্টার
মুফতী সালাহউদ্দিন, পটুয়াখালী
প্রকাশ: ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ১৯:৫২
প্রকল্প নেওয়া হয়েছে ২০২২ সালে। কার্যাদেশও পেয়েছেন ঠিকাদার। কাজের মেয়াদও বাড়ানো হয়েছে দু’বার। তার পরও কাজের অগ্রগতি ৬০ ভাগ। এ অবস্থা পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কিডনি ডায়ালাইসিস সেন্টার নির্মাণ প্রকল্পের। কর্মকর্তারা বলছেন, বরাদ্দের অভাবে এখনও কাজ শেষ করা যায়নি।
মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মশিউর রহমান জানান, জেলায় কিডনি রোগীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। এ হাসপাতালে এই ধরনের রোগীর প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া গেলেও ডায়ালাইসিসের ব্যবস্থা নেই। রোগীকে বরিশালে যেতে হয়। তাদের কথা চিন্তা করে ১০ শয্যার ডায়ালাইসিস সেন্টার স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। কাজও শুরু হয়েছে। কিন্তু বরাদ্দ না থাকায় বাকি কাজ শেষ করা যাচ্ছে না।
২০১৪ সালের ১০ জানুয়ারি পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়। ২০২১ সালের অক্টোবরে হাসপাতালটি আড়াইশ শয্যায় উন্নীত করা হয়। এদিকে দিন দিন কিডনি রোগীর সংখ্যা বাড়লেও জেলায় সরকারিভাবে ডায়ালাইসিস সেন্টার নেই। এ অবস্থায় সাধারণ রোগীকে বেসরকারি হাসপাতালে যেতে হচ্ছে। সেখানে খরচ এত বেশি যে, সাধারণ রোগীর পক্ষে ব্যয় মেটাতে হিমশিম খেতে হয়।
বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কিডনি বিভাগের প্রধান ডা. মোহাম্মদ আলী রুমী বলেন, এ হাসপাতালে প্রতিদিন ৫০ জন কিডনি রোগীকে ডায়ালাইসিস করা হয়। তাদের ১০ থেকে ১৫ জনই পটুয়াখালীর। বরিশালের বেসরকারি তিনটি প্রতিষ্ঠানেও পটুয়াখালীর একাধিক রোগী আসেন ডায়ালাইসিস করাতে। এসব রোগীর সুবিধার্থে দ্রুত পটুয়াখালীতে ডায়ালাইসিস সেন্টার চালুর উদ্যোগ নেওয়া দরকার। এ কাজে সব ধরনের সহায়তা দিতে আমরা প্রস্তুত।
পটুয়াখালী শহরের একজন রোগী জানান, তিনি দীর্ঘদিন ধরে কিডনি রোগে ভুগছেন। প্রতি সপ্তাহে বরিশাল গিয়ে তাঁকে ডায়ালাইসিস করাতে হয়। এতে শারীরিক সমস্যার পাশাপাশি আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে। জেলায় ডায়ালাইসিস সেন্টার থাকলে এ দুর্ভোগ পোহাতে হতো না তাঁকে।
সাধারণ রোগীর দুর্ভোগের কথা চিন্তা করেই জেলা হাসপাতালে তৃতীয় তলায় ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে কিডনি ডায়ালাইসিস সেন্টার নির্মাণ প্রকল্প নেওয়া হয়। ২০২৩ সালের জুনে ১৭ লাখ ১৬ হাজার টাকায় ১০ শয্যার সেন্টারের জন্য কার্যাদেশ দেওয়া হয়। এরই মধ্যে ৬০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। কিন্তু প্রয়োজনীয় বরাদ্দ না থাকায় ছয় মাস ধরে কাজ বন্ধ। দেয়াল ও টাইলসের কাজ শেষ হয়নি। বরাদ্দের অভাবে কার্যক্রমও শুরু করতে পারছে না হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
এদিকে কিছুদিনের মধ্যেই ডায়ালাইসিস সেন্টারের যন্ত্রপাতি চলে আসবে। অবকাঠামো তৈরি না হওয়ায় এসব যন্ত্রপাতি রাখা নিয়ে আরেক সমস্যার সৃষ্টি হবে বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. দিলরুবা ইয়াসমিন লিজা জানান, বরাদ্দ না থাকায় হাসপাতালের কিডনি ডায়ালাইসিস সেন্টারের অবকাঠামোর নির্মাণকাজ ছয় মাস ধরে বন্ধ রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে গণপূর্ত বিভাগকে একাধিকবার চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে। কিন্তু কোনো সমাধান হচ্ছে না।
প্রকল্প পরিচালক ডা. রতন দাস জানান, অবকাঠামো নির্মাণকাজ শেষ পর্যায়ে। কিডনি ডায়ালাইসিসের প্রয়োজনীয় সরবরাহের প্রক্রিয়া চলছে। সব ঠিকঠাক থাকলে ২০২৫ জুনের মধ্যে কার্যক্রম সম্পন্ন করা যাবে।
এ বিষয়ে কথা বলতে গণপূর্ত বিভাগের পটুয়াখালীর নির্বাহী প্রকৌশলী হারুন অর রশিদের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দেওয়া হয়। কিন্তু তিনি সাড়া দেননি।
- বিষয় :
- কিডনি ডায়ালাইসিস
- হাসপাতাল
- পটুয়াখালী