এই সরকার ব্যর্থ হলে ফের ভারতীয় কর্তৃত্ববাদ প্রতিষ্ঠিত হবে: মাহমুদুর রহমান

আমার দেশ পত্রিকার সাবেক ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমান বলেছেন, বর্তমান অন্তর্বতীকালীন সরকার ব্যর্থ হলে বাংলাদেশে আবারও ভারতীয় কর্তৃত্ববাদ প্রতিষ্ঠিত হবে। তাই, সরকারকে টিকিয়ে রাখতে সবাইকে একতাবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে।

আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১২টায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ কথা বলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিসির করিডোরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এই মতবিনিময় সভার আয়োজন করে।

সভায় মাহমুদুর রহমান বলেন, দুটো লক্ষ্যে ছাত্র-জনতার আন্দোলন হয়েছিলো। প্রথমটা ছিলো ফ্যাসিবাদী সরকারের পতন ঘটানো। দ্বিতীয়ত ভারতীয় আধিপত্যবাদকে নির্মূল করা। আমাদের প্রথম লক্ষ্য অর্জিত হয়েছে। কিন্তু দ্বিতীয়টা আমরা এখনও অর্জন করতে পারিনি। সুযোগ এসেছে, ভারতীয় আধিপত্যবাদকে চিরতরে উৎখাত করার। এজন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে টিকিয়ে রাখতে সব চেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। কারণ, এই সরকার না টিকলে ভারতীয় সাম্রাজ্যবাদ আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে। সরকারকে টিকিয়ে রাখতে সীসাঢালা ঐক্য লাগবে। ১৮ কোটি জনগণ যদি এক থাকে, তাহলেই ভারতীয় আধিপত্যবাদের উৎখাত সম্ভব।

তিনি বলেন, সরকারের দিকেও আমাদের নজর রাখতে হবে, যাতে তারা বিপথগামী না হয়। সবাইকে এই দায়িত্ব নিতে হবে। ভারতীয় আধিপত্যের বিরুদ্ধে লড়তে গিয়ে আবরার শহীদ হয়েছে। আমাদের এ লড়াইকে অব্যাহত রাখতে হবে৷ অর্জিত বিপ্লবকে কোনোভাবেই বিপথগামী করা যাবে না।

এছাড়া সরকারের সমালোচনা করে সাবেক ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক বলেন, সরকার এখন পর্যন্ত তাদের শক্তি দেখাতে পারেনি। সরকার খুব স্লো। তারা আওয়ামী লীগ এবং ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে এখনও কোনো অর্থবহ অ্যাকশন নিতে পারেনি। শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে আনার জন্য কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। কোন আইনে সে ভারতে বসে আছে। সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে আছে।

শেখ হাসিনাকে দিল্লির ঘৃণ্য এজেন্ট উল্লেখ করে মাহমুদুর রহমান বলেন, ১৬ বছর ধরে বাংলাদেশে যে ফ্যাসিস্ট ও ইসলামবিরোধী সরকার ছিলো সেটি সরাসরি দিল্লি থেকে পরিচালিত হয়েছে। ১৯৮১ সালে ইসলাম এবং বাংলাদেশকে ধংস করার জন্য তিনি দিল্লি থেকে এসেছিলেন। পতনের পর এখন আবার প্রভুর কাছেই তিনি আশ্রয় নিয়েছেন। দিল্লি ছাড়া তার আর যাওয়ার যায়গা নেই। তিনি যে দিল্লির ঘৃণ্য এজেন্ট ছিলেন, এটাই তার দৃষ্টান্ত বা প্রমাণ।

এদিকে আগামী রোববারের মধ্যে জঙ্গী সংগঠন হিসেবে ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করা না হলে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের আহ্বান জানান মাহমুদুর রহমান। তিনি বলেন, ছাত্রলীগকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে নিষিদ্ধ করার জন্য আমি সাত দিনের সময় দিয়েছিলাম। রোববার সেই সময় শেষ হবে৷ রোববারের মধ্যে যদি ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করা না হয়, তাহলে সোমবার থেকে আমার দাবির সমর্থনে আপনারা এখানে আন্দোলন শুরু করবেন। নিষিদ্ধ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। আমি ঢাকায় মাঠে থাকবো। আপনারা এখানে থাকবেন। বাংলাদেশের একমাত্র জঙ্গি সংগঠন এই ছাত্রলীগ। আওয়ামী লীগ থেকে মুক্তি পেতে হলে আগে ছাত্রলীগ নামক সন্ত্রাসীদের থেকে মুক্তি পেতে হবে। আগে ছাত্রলীগকে দিয়ে শুরু করি, পরে আওয়ামী লীগকে ধরবো।