ঢাকা শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫

করোনার রেড জোন নওগাঁয় খুলে দেওয়া হয়েছে বিনোদন পার্ক শখের পল্লী

করোনার রেড জোন নওগাঁয় খুলে দেওয়া হয়েছে বিনোদন পার্ক শখের পল্লী

ছবি: সমকাল

নওগাঁ প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৮ জুন ২০২০ | ১২:৪৮

সারা বিশ্বে মহামারি করোনাভাইরাসের আতঙ্ক বিরাজ করছে। এ ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। সরকার করোনা ভাইরাস বিস্তার রোধে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করেছে। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখাসহ বিভিন্ন ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। বন্ধ করা হয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ সকল প্রকার বিনোদন পার্ক। সেই সঙ্গে সারা দেশে রেড জোন হিসাবে বিভিন্ন জেলাকে চিহ্নিত করা হয়। সেই তালিকায় নওগাঁ ও বগুড়া রয়েছে এক ও দুই নম্বরে। ঠিক সেই সময় নওগাঁ ও বগুড়ার সীমান্ত এলাকা সান্তাহার শহরের শখের পল্লী নামে বিনোদন পার্ক জনসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে।

দেশের কোথাও কোনো বিনোদন পার্ক এমন কি পর্যটন স্পট খোলার কোন অনুমতি না থাকলেও এ পার্কটি গত ৪ জুন খুলে দেওয়া হয়েছে। পার্কটি খুলে দেওয়ার কারণে শত শত লোক বিভিন্ন এলাকা থেকে সেখানে আসা যাওয়া করছেন। সেখানে কতটুকু স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব মানা হবে তা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে এলাকাবাসী শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন।

সোমবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিনোদন পার্ক শখের পল্লীর সদর গেটে স্বাস্থ্য বিধি অনুসারে সামাজিক দূরত্ব মেনে শরীরের তাপমাত্রা নির্ণয় ও হাত ধোয়ার পরে ভিতরে প্রবেশ করানো হচ্ছে। তবে ভিতরে প্রবেশ করে দেখা গেলো অন্যকিছু। ছেলে-মেয়ে একত্রে বসে সময় কাটাচ্ছেন। তাদের কেউ সামাজিক দূরত্ব মানছেন না। গেটের বাইরে স্বাস্থ্য বিধি মেনে চললেও ভিতরে কোনো স্বাস্থ্য বিধি মানা হচ্ছে না।

বিনোদন পার্ক শখের পল্লীর স্বত্বাধিকারী ইঞ্জিনিয়ার নজরুল ইসলাম বলেন, কারিগরি স্বাস্থ্য দপ্তরের পরিপত্র অনুযায়ী পার্কটি খোলা হয়েছে। এ বিষয়ে নেটে সার্চ দিয়ে দেখতে পারেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসকের কাছ থেকে কোন অনুমতি নেওয়া আছে কি না- প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, তাদের নিকট থেকে অনুমতি নেওয়ার কোন দরকার নেই। তা ছাড়া আমি সরকারি পরিপত্র অনুযায়ী স্বাস্থ্য বিধি মেনেই পার্ক পরিচালনা করছি।

সান্তাহার পৌর মেয়র তোফাজ্জল হোসেন ভুট্টু বলেন, সরকার স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলতে বললেও বিনোদন পার্ক খুলতে বলেছে কি-না তা আমার জানা নেই। তবে তিনি বলেন, এই সময়ে পার্কটি খোলা যুক্তিসঙ্গত হয়নি। তা ছাড়া পৌর এলাকার মধ্যে হলেও আমাদের কাছ থেকে কোন অনুমতি নেয়নি।

আদমদীঘি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও পৌরসভার প্যানেল মেয়র জার্জিস আলম রতন পার্ক খোলার বিষয়ে দ্বিমত পোষণ করে বলেন, তিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছ থেকে কোন অনুমতি নিয়েছেন কি-না জানি না।

সান্তাহার নাগরিক কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রবিউল ইসলাম রবিন বলেন, এই করোনা ভাইরাসের মধ্যে পার্ক খোলা ঠিক হয়নি। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে চলতে পারবে না। বাচ্চারা পার্কে গিয়ে যে বিনোদন উপভোগ করবে সরকারি স্বাস্থ্য বিধি তা কখনো নিয়ন্ত্রণ হবে না। ফলে আক্রান্ত সংখ্যা বেড়ে যাবে।

এ ব্যাপারে আদমদীঘি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা একেএম আব্দুল্লাহ বিন রশিদের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভড করেননি।

বগুড়া জেলা প্রশাসক ফয়েজ আহাম্মদ বলেন, এ সময়ে পার্ক খোলার কোন অনুমতি নেই। সান্তাহারে বিনোদন পার্ক শখের পল্লী খোলা হয়েছে তিনি জানেন না। তবে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। 

আরও পড়ুন

×