ঢাকা রবিবার, ০৬ জুলাই ২০২৫

বেগুন গাছে ধরছে টমেটো

গ্রাফটিং পদ্ধতিতে চাষ করে লাভবান হচ্ছে কৃষক

বেগুন গাছে ধরছে টমেটো

টমেটো

 কাজী কামাল হোসেন, নওগাঁ 

প্রকাশ: ২০ অক্টোবর ২০২৪ | ২৩:২১

গ্রামাঞ্চলের পথেঘাটে, আনাচে-কানাচে প্রায়ই চোখে পড়ে পরিচর্যা ছাড়াই বেড়ে ওঠা কাঁটা বেগুন বা জংলি বেগুনের গাছ। অতিরিক্ত কাঁটা থাকায় অনেকে এ গাছকে আগাছা বলেও আগে অবহেলা করত। কিন্তু এ গাছকেই এখন কাজে লাগিয়ে গ্রাফটিং (কাটিং কলম) পদ্ধতিতে টমেটো চাষ শুরু করেছেন চাষিরা। নওগাঁর বদলাগাছীর পাহাড়পুর গ্রামের কৃষক ফারুক হোসেন এ পদ্ধতিতে টমেটো চাষ শুরু করে ব্যাপক সফলতা পাওয়ায়, অন্যরাও আগ্রহী হচ্ছেন।
কৃষক ফারুক হোসেন জানান, স্থানীয় এনজিও ‘মৌসুমী’ থেকে চারা ও পরামর্শ নিয়ে সাত শতক জমিতে ১২ হাজার টাকা খরচ করে তিনি টমেটো চাষ শুরু করেছেন। মৌসুমী টমেটোর চারা দেয়, তিনি সেটা বেগুন গাছে গ্রাফটিং করে চাষ করেন। কারণ, এই জংলি বেগুন গাছ গ্রামে যেমন সহজলভ্য, তেমনি গ্রাফটিং করতেও সুবিধা। এখন পর্যন্ত বিক্রি করেছেন ১৫ হাজার টাকার টমেটো। প্রতিকেজি টমেটো পাইকারিতে বিক্রি করছেন ১৩০ টাকা। জমিতে বাকি যে টমেটো আছে, তা আরও ২০ থেকে ২২ হাজার টাকায় বিক্রি হবে বলে তিনি আশাবাদী। 
এনজিও মৌসুমীর কৃষি কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান বলেন, পিকেএসএফের আর্থিক ও কারিগরি সহায়তায় মৌসুমী বেগুন গাছে টমেটো চাষ পদ্ধতি বাস্তবায়ন করছে। সাত শতক জমিতে গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষ করতে ১২ হাজার টাকা খরচ হচ্ছে। তবে পরের বছর ব্যয় কমে যাবে। এই পদ্ধতিতে টমেটো চাষে বাঁশ, পলিথিন দিয়ে ছাউনি ও বেড়া তৈরি করতে হয়। সাধারণত শীতকালীন টমেটো চাষে এগুলো লাগে না। গাছে ফুল এলে দুই দিন পর পর হরমোন ছিটাতে হয়। এতে গাছের ঢলে পড়া রোগ হয় না এবং সার ও কীটনাশক খরচ কম লাগে। দ্বিতীয় বছর ছাউনি ও বেড়া দিতে বাঁশ কিনতে হয় না। মূলত আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি ব্যবহার করে আমরা কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করে আসছি। কৃষকরা যেন কম সময়ে, কম পরিশ্রমে ও স্বল্প খরচে বেশি লাভ করতে পারে, সে লক্ষ্যে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। 
বদলগাছী উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা সাবাব ফারহান বলেন, কয়েক বছর আগেও এলাকার কৃষকেরা বেগুন গাছে টমেটো কীভাবে চাষ করা যায়, তা জানতেন না। এই চাষ পদ্ধতি সহজ ও ফলন ভালো হয় এবং রোগবালাই কম। দাম বেশি পাওয়ায় এই পদ্ধতিতে টমেটো চাষে কৃষকদের আগ্রহ বাড়ছে। কৃষকদের কৃষি বিভাগ থেকে সার্বিক সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছে। 

আরও পড়ুন

×