কর্ণফুলীতে সাম্পান মাঝিদের বৈঠা বর্জন

বহিরাগতদের ঘাট ইজারা দেওয়ার প্রতিবাদে সোমবার চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর মধ্যে সাম্পান রেখে ধর্মঘটে মাঝিরা সমকাল
কর্ণফুলী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২১ অক্টোবর ২০২৪ | ২৩:২৯
ঘাটের খাস আদায়ের দায়িত্ব বহিরাগতদের দেওয়ার প্রতিবাদে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর ১০ ঘাটে অনির্দিষ্টকালের জন্য বৈঠা বর্জন ও অবস্থান ধর্মঘট পালন করছে কর্ণফুলী নদী সাম্পান মাঝি কল্যাণ সমিতি ফেডারেশনের অন্তর্ভুক্ত একাধিক সংগঠন। গতকাল সোমবার ভোর থেকে সাম্পান চলাচল বন্ধ রাখেন ১২ শতাধিক মাঝি। পুরাতন ব্রিজঘাট, সদরঘাট, অভয়মিত্র, কর্ণফুলী ঘাট, বাংলাবাজার ঘাট, সল্টগোলাসহ ১০ ঘাটে দিনভর যাত্রী পারাপার বন্ধ থাকায় ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রীরা।
সাম্পান মাঝি সমিতির সংগঠক এস এম পেয়ার আলী বলেন, ২০০৩ সালের পাটনিজীবী নীতিমালার তোয়াক্কা না করে একের পর এক অবৈধভাবে মাঝিদের ঘাটছাড়া করছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক)। এতে মাঝিমাল্লাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে যাওয়ায় বাধ্য হয়ে ধর্মঘট পালন করছেন তারা।
চরপাথরঘাটা ব্রিজঘাট সাম্পান চালক সমিতি ও বাংলাবাজার ঘাটের মাঝিরা জানান, প্রতি বছর ১৯টি ঘাট থেকে রাজস্ব আদায় হতো ৬ কোটি টাকার বেশি। কিন্তু আইনি জটিলতায় এবার ঘাটগুলো ইজারা দিতে পারেনি সিটি করপোরেশন। সেই সুযোগে খাস কালেকশনের নামে করপোরেশনের একাধিক অসাধু কর্মকর্তা নিজের আখের গোছাচ্ছেন। দৈনিক আদায়কৃত টাকা ব্যাংকে জমা দেওয়া হচ্ছে না। সাদা কাগজে চসিকের সিল দিয়ে টাকা পরিশোধের সনদ দেওয়া হলেও, সেখানে টাকার পরিমাণ উল্লেখ নেই। টাকা লুটপাট করতেই চসিকের গুটিকয়েক কর্মকর্তা এমন কৌশল বেছে নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
গত রোববার চসিকের এক অফিস আদেশে অভয়মিত্র ঘাটের খাস কালেকশনের জন্য চসিক এস্টেট শাখার বাজার পরিদর্শক দূর্বাদল চৌধুরীকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। পুরাতন ব্রিজঘাটে এ কাজে লোকবল, যাত্রী পারাপারে নৌকা, সাম্পান সরবরাহসহ অন্যান্য সহযোগিতার জন্য গতকাল থেকে আবু নাসের সাজ্জাদ ও আব্দুল কাদের ফিরোজ নামে দু’জনকে নিয়োজিত করা হয়েছে, যারা বিএনপি নেতা। এ আদেশের পর বৈঠা বর্জন ও ধর্মঘটের ঘোষণা দেন মাঝিরা।
চট্টগ্রাম নগরীর ফিরিঙ্গীবাজার ওয়ার্ড বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আবু নাসের সাজ্জাদ বলেন, আমরা নিয়মতান্ত্রিকভাবে চসিক থেকে ঘাটের দায়িত্ব নিয়েছি। সাম্পান মাঝি কল্যাণ সমিতি ফেডারেশন সভাপতি এস এম পেয়ার আলী বলেন, বৈঠা যার ঘাট তার– এই দাবি না মানা পর্যন্ত আমরা আন্দোলন করব। প্রতিটি ঘাটের সব সাম্পান মাঝিকে নিয়ে গঠিত সমিতির অনুকূলে ঘাট ইজারা দিতে হবে।
- বিষয় :
- নৌকা