রূপগঞ্জে দগ্ধ তিন ভাইবোনের মৃত্যু
চিকিৎসাধীন আরও তিনজন সংকটাপন্ন

ফাইল ছবি
সমকাল প্রতিবেদক
প্রকাশ: ৩০ অক্টোবর ২০২৪ | ০৪:৫০
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলায় গ্যাস লাইনের লিকেজ থেকে বাসায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় দগ্ধ তিন ভাইবোন মারা গেছেন। রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল মঙ্গলবার তাদের মৃত্যু হয়। একই ঘটনায় দগ্ধ তাদের পরিবারের তিনজন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।
মৃত তিনজন হলেন– হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার বাউসা ইউনিয়নের সুজাপুর গ্রামের বাবুল মিয়ার ছেলে সোহেল মিয়া (২০), ইসমাইল হোসেন (১১) ও মেয়ে তাসলিমা (৯)। সোহেল রূপগঞ্জের ডহরগাঁও এলাকার একটি পোশাক কারখানায় শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। একই ঘটনায় অগ্নিদগ্ধ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন বাবুল (৪৫), তাঁর স্ত্রী শেলি (৩৫) ও মেয়ে মুন্নী (১৮)।
বাবুলের চাচাতো ভাই এনামুল হক বলেন, রূপগঞ্জের গোলাকান্দাইল ইউনিয়নের ডহরগাঁও এলাকায় ভাড়া বাড়িতে থাকত বাবুল ও তার পরিবার। সাপ্লাই লাইনে গ্যাসের চাপ কম থাকায় বাবুলের ঘরে গ্যাস টেনে আনার জন্য কম্প্রেসার মেশিন লাগানো ছিল। অনেক সময় লাইনে গ্যাসের চাপ বেড়ে যায়। তখন গ্যাসের কম্প্রেসার দিয়ে গ্যাস লিক করত। নতুন মেশিন কেনার কথা ভাবলেও টাকার জন্য তা হয়ে ওঠেনি। গত শুক্রবার রাতে গ্যাসের চাপ বেড়ে যাওয়ায় এবং কয়েলের আগুনের সংস্পর্শে আশায় হঠাৎ কম্প্রেসার মেশিন বিকট শব্দে বিস্ফোরিত হয়। এতে ছয়জন দগ্ধ হয়।
সোহেল ও ইসমাইলের চাচা মঙ্গল মিয়া বলেন, ‘গতকাল সকালে আমার দুই ভাতিজার মৃত্যু হয়। পরে রাতে মারা যায় ভাতিজি তাসলিমা। দগ্ধ অন্যদের অবস্থাও সংকটাপন্ন। তিনজনের মরদেহ গ্রামের বাড়িতে নিয়ে দাফন করা হবে।’
শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন তরিকুল ইসলাম জানান, বাবুলের শরীরের ৬৬ শতাংশ, শেলির ৩০ ও মুন্নির ২০ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে। তাদের অবস্থা আশঙ্কাজনক। গতকাল মারা যাওয়া সোহেলের ৭০, ইসমাইলের ৫৫ ও তাসলিমার শরীরের ৬৩ শতাংশ দগ্ধ হয়েছিল।
শ্যামপুরে বাসায় গ্যাস বিস্ফোরণে দগ্ধ ৩
রাজধানীর শ্যামপুরের একটি বাসায় গ্যাস বিস্ফোরণে তিনজন দগ্ধ হয়েছেন। তারা হলেন– জামাল উদ্দিন, জামিল হোসেন ও মোহাম্মদ তুষার। গত সোমবার রাত ৩টার দিকে বাসায় জমে থাকা গ্যাস আগুনের সংস্পর্শে এলে এ বিস্ফোরণ ঘটে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তাদের শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়েছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তিনজনের অবস্থাই সংকটাপন্ন।
জামিলের বাবা ইকবাল হোসেন জানান, শ্যামপুরে ‘সাততলা নীল বিল্ডিং’ নামে পরিচিত ভবনের সপ্তম তলার একটি ঘরে তারা তিনজন গল্প করছিলেন। তাদের মধ্যে একজন সিগারেট জ্বালানোর জন্য লাইটার জ্বালালে বিস্ফোরণ ঘটে এবং আগুন ধরে যায়।
তুষারের ভাই মো. দিপু জানান, ভবনের সপ্তম তলায় তুষার এবং ষষ্ঠ তলায় জামাল থাকেন। জামিল থাকেন জুরাইনের বাগানবাড়ি এলাকায়। ঘটনার রাতে অপর দু’জন তুষারের বাসায় গিয়েছিলেন।
বার্ন ইনস্টিটিউটের চিকিৎসকরা জানান, তুষারের শরীরের ১০০ শতাংশ এবং জামালের ৭৫ ও জামিলের ৫৫ শতাংশ পুড়ে গেছে।
[প্রতিবেদনে তথ্য দিয়েছেন রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) ও নবীগঞ্জ (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি]