চাকরি ছেড়ে কানাডায় পাড়ি বিতর্কিত এএসপি জন রানার

জন রানার
সমকাল প্রতিবেদক ও সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৬ নভেম্বর ২০২৪ | ০০:৫১
স্বেচ্ছায় চাকরি ছেড়েছেন সিরাজগঞ্জের বিতর্কিত সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) জন রানা। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ আবেদন গ্রহণ করে তাঁকে অব্যাহতি দিয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার জননিরাপত্তা বিভাগ পুলিশ-১ শাখার উপসচিব আবু সাঈদ স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এই তথ্য জানানো হয়েছে। তবে রানা কী কারণে অব্যাহতি নিয়েছেন, তা জানা যায়নি।
রাজশাহীর বাসিন্দা রানা ২০১৮ সালে ৩৬তম বিসিএসের মাধ্যমে পুলিশ ক্যাডারে যোগ দেন। তিনি সর্বশেষ সিরাজগঞ্জের বেলকুচি সার্কেল এএসপি ছিলেন। এখানে ২০২৩ সালের ৭ নভেম্বর যোগদান করেছিলেন রানা।
জানা যায়, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের তিন দিন আগে চাকরিতে ইস্তফা দিয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে আবেদন করেন জন রানা। আবেদন গ্রহণের বেশ আগেই তিনি স্ত্রীসহ কানাডায় পাড়ি জমিয়েছেন।
রানার নম্বরে কল দিয়ে পাওয়া যায়নি। হোয়াটসঅ্যাপে বার্তা পাঠিয়েও তাঁর সাড়া মেলেনি। জানতে চাইলে বেলকুচি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবদুল বারেক বলেন, ‘২ আগস্ট জন রানা স্যার ইস্তফা দেন। সরকারিভাবেই তাঁকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। আমরা যতটুকু জানি, স্ত্রীকে নিয়ে কানাডায় যেতে তিনি চাকরি ছেড়েছেন।’
সিরাজগঞ্জের সাবেক পুলিশ সুপার আরিফুল ইসলাম মণ্ডল বলেন, ‘আমার সময়ে রানা ইস্তফা দেন। শুনেছি তাঁর পরিবার বিদেশে থাকে।’
বেলকুচি সার্কেলে যোগদানের পর নানা বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন রানা। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে ১৯ ডিসেম্বর বেলকুচির সুবর্ণ সারা গ্রামে সাবেক এমপি আব্দুল মমিন মণ্ডলের ঘনিষ্ঠ শ্রমিক লীগ নেতা মোতালেবের বাড়িতে বোমার বিস্ফোরণে মারা যান কুষ্টিয়া সদরের চরমপন্থি নেতা মো. ফজলু। শুরু থেকেই জন রানা ও বেলকুচির সাবেক ওসি আনিসুর রহমান ঘটনাটি আড়ালের চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এমনকি মামলার পর প্রায় ১০ মাস পার হলেও শ্রমিক লীগ নেতা মোতালেবকে ধরতে পারেনি পুলিশ। গতকাল বেলকুচি থানার বর্তমান ওসি জাকারিয়া হোসেন জানান, মোতালেবকে ধরতে তাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
এদিকে গত ১ মে উপজেলা নির্বাচন-উত্তর সহিংসতার ঘটনার জেরে বেলকুচির সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান প্রকৌশলী আমিনুল ইসলামের নেতৃত্বে থানা ঘেরাও হয়। এ সময় নির্বাচনে পরাজিত প্রার্থী বদিউজ্জামান বদিকে পুলিশের সামনে বেধড়ক পেটানো হয়। ওই ঘটনায় মামলা হলেও সার্কেল এএসপি রানার মদদে আমিনুলকে ধরা হয়নি বলে অভিযোগ করেছিলেন বদিউজ্জামান।
ঘটনাটি আওয়ামী লীগের দু’পক্ষের
মধ্যে হলেও, হয়রানি করা হয় বিএনপি নেতাকর্মীকে। স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীরা জানান, আওয়ামী লীগ আমলে নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের হোতা জন রানার নির্দেশে তাদের নানাভাবে হয়রানি করেছে পুলিশ।
- বিষয় :
- পলাতক আসামি