ইবিতে র্যাগিং: পাঁচ শিক্ষার্থী জেলহাজতে, তদন্ত কমিটি

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়। ফাইল ছবি
ইবি প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৯ নভেম্বর ২০২৪ | ২২:৫১
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) র্যাগিংয়ের অভিযোগে পাঁচ শিক্ষার্থীকে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। ভুক্তভোগী এক শিক্ষার্থী বাদী হয়ে মঙ্গলবার মামলা করায় তাদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। এদিকে অভিযোগ তদন্তে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ চার সদস্যের কমিটি গঠন করেছে। কমিটিকে আগামী রোববারের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
জেলহাজতে পাঠানো শিক্ষার্থীরা হলেন– ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের সাব্বির হোসেন, শেহান শরীফ শেখ, শরিফুল ইসলাম লিমন, কান্ত বড়ুয়া এবং ল অ্যান্ড ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সঞ্চয় বড়ুয়া। মামলায় অভিযুক্ত অন্য চারজন হলেন– জিহাদ, শফিউল্লাহ, তরিকুল ও মুকুল। ভুক্তভোগীরা ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের নবীন শিক্ষার্থী। তাদের অভিযোগ, সোমবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে লালন শাহ হলের ৩৩০ নম্বর কক্ষে তাদের ডাকেন শেহান শরীফ। তাদের পর্নো তারকা সাজিয়ে অভিনয় করা, অশ্লীল কবিতা পাঠ ও গাঁজার-পট টানার ভঙ্গি করতে বাধ্য করাসহ নানাভাবে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন করা হয়।
শেহান শরীফের ডাকে সাড়া দিয়ে সাইম, রাকিবুল, শামীম, রাকিব, হামজা, তারেক, রিশান, তানভীর, মামুনসহ ১২-১৩ জন ওই কক্ষে যান। তাদের মধ্যে চারজনকে রেখে অন্যদের ছেড়ে দেওয়া হয়। চারজনের ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালানো হয়। তাদের পাঁচ রকমের হাসি দেওয়া, কল দিয়ে বাজে ভাষায় কথা বলা ও নাচতে বাধ্য করা হয়। এক পর্যায়ে হলের সিনিয়র শিক্ষার্থী হাসানুল বান্না সেখানে গিয়ে অভিযুক্তদের হাতেনাতে ধরেন। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা কর্মকর্তারা অভিযুক্তদের ইবি থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করেন। এর আগে গত ১৬ নভেম্বর রাতেও নবীন ১২ শিক্ষার্থীকে ক্যাম্পাসের পার্শ্ববর্তী সাদী অ্যান্ড হাদী ছাত্রাবাসে ডাকেন অভিযুক্তরা। তাদের রাত আড়াইটা পর্যন্ত শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হয়। এতে অভিযুক্ত শিক্ষার্থীরা হলেন– ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের সিনিয়র শিক্ষার্থী শফিউল্লাহ, তরিকুল, মুকুল, সাব্বির, সাকিব, শেহান, কান্ত বড়ুয়া এবং জিহাদ।
নবীন শিক্ষার্থী তারেক হোসাইন বলেন, তারা ক্যাম্পাসে এসেছেন ১৭ দিন হয়েছে। এই ১৭ দিনে তাদের ওপর নানাভাবে মানসিক নির্যাতন করা হয়েছে। ভুল না হলেও ভুল হয়েছে বলে বারবার পরিচয় দিতে বাধ্য করা হয়েছে। এ বিষয়ে অভিযুক্ত শরীফ শেহান বলেন, ‘হাদি অ্যান্ড সাদী মেসে জুনিয়রদের সঙ্গে আমরা বসেছিলাম। ওই দিন ভিসি, প্রক্টর স্যারসহ বিভাগের সব শিক্ষকের নাম জিজ্ঞেস করা হয়। না পারলে তাদের একটু ধমক দেওয়া হয়। তবে এ সময় কাউকে মারধর বা শারীরিক নির্যাতন করা হয়নি। বাকি অভিযোগগুলোর বিষয়ে কিছুটা সত্যতা রয়েছে।’
এ বিষয়ে লালন শাহ হলের প্রভোস্ট ড. আকতার হোসেন বলেন, তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে। ৎ
ইবি থানার ওসি শেখ ফরিদ উদ্দিন বলেন, ছয়জনকে থানায় নিরাপত্তা হেফাজতে রাখা হয়েছিল। পরে একজনকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। ভুক্তভোগীদের মধ্যে একজন বাদী হয়ে মামলা করায় বাকি পাঁচজনকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।