আইনজীবী সাইফুল হত্যা
বাবার করা মামলায় ৯ আসামিকে গ্রেপ্তার দেখালেন আদালত

আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ। ছবি: সংগৃহীত
চট্টগ্রাম ব্যুরো
প্রকাশ: ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪ | ০৬:০৫
চট্টগ্রামে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যার ঘটনায় নিহতের বাবার করা মামলায় ৯ জনকে গ্রেপ্তার দেখিয়েছেন আদালত। গতকাল সোমবার বিকেলে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কাজী শরীফুল ইসলাম শুনানি শেষে এই আদেশ দেন। এ ছাড়া পুলিশের ওপর হামলা ও ভাঙচুরের পৃথক মামলায় আট আসামিকে সাত দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন বিচারক আবু বক্কর সিদ্দিক।
এদিকে দুই আসামির পক্ষে জামিন চেয়ে ওকালতনামা জমা দেওয়ায় আইনজীবীদের বিক্ষোভের মুখে রাষ্ট্রপক্ষের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর নেজাম উদ্দিন পদত্যাগ করেছেন। তবে তাঁর দাবি, চাপের মুখে পদত্যাগপত্রে সই করতে বাধ্য হন তিনি।
আইনজীবী সাইফুল হত্যায় পাঁচটি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে সাইফুলের বাবার করা একটি হত্যা মামলা রয়েছে। অন্য মামলাগুলো করা হয় পুলিশ ও আইনজীবীদের ওপর হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায়।
গ্রেপ্তার দেখানো ৯ আসামি হলেন– আমান দাস, সুমিত দাস, নয়ন দাস, গগন দাস, বিশাল দাস, রাজীব ভট্টাচার্য্য, সনু দাস মেথর, রুমিত দাস ও দুর্লভ দাস। পুলিশের ওপর হামলা ও ভাঙচুরের মামলায় রিমান্ড মঞ্জুর হওয়া আটজন হলেন– পার্থ চক্রবর্তী, অপূর্ব শীল, উজ্জ্বল দাস ওরফে জনি দাস, অপু চন্দ্র সাহা, নিলয় দাস, ধ্রুব দাস, দেলোয়ার হোসেন ও মো. নুরু।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নগর পুলিশের কোতোয়ালি জোনের সহকারী কমিশনার মাহফুজুর রহমান সমকালকে বলেন, সাইফুল হত্যাকাণ্ডে গ্রেপ্তার ৯ আসামিকে সাইফুলের বাবার করা হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখাতে আবেদন করলে আদালত তা মঞ্জুর করেন। নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (প্রসিকিউশন) মফিজুর রহমান বলেন, পুলিশের ওপর হামলা ও ভাঙচুরের মামলায় গ্রেপ্তার আট আসামিকে সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করলে তা আদালতে মঞ্জুর হয়।
আদালত সূত্র জানায়, আইনজীবী হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার ১৭ জনকে গতকাল কারাগার থেকে আদালতে আনা হয়। এ সময় কঠোর নিরাপত্তা বলয় তৈরি করে পুলিশ। পরে শুনানি শেষে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে পুলিশের ওপর হামলা ও ভাঙচুর মামলায় গ্রেপ্তার দেলোয়ার হোসেন ও মো. নুরুর পক্ষে আদালতে জামিন চেয়ে ওকালতনামা জমা দেওয়ায় অতিরিক্ত পিপি নেজাম উদ্দিনের বিরুদ্ধে গতকাল বিক্ষোভ করেন আইনজীবীরা। এ বিষয়ে নেজাম উদ্দিন সমকালকে বলেন, ‘আমার জুনিয়র আইনজীবী সানজিদা গফুর দুই আসামির পক্ষে আমার নামে ওকালতনামা আদালতে জমা দেন। বিষয়টি আমি জানতাম না। তাতে আমার সই নেই। আইনজীবীদের ক্ষোভের মুখে একটি সাদা কাগজে সই করেছি। আমি নিজেই সাইফুল হত্যার বিচারের দাবিতে আন্দোলনে যুক্ত। সেখানে আসামিদের পক্ষে দাঁড়ানোর প্রশ্নই আসে না।’
গত ২৬ নভেম্বর পুলিশ ও আইনজীবীদের সঙ্গে বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময়কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর অনুসারীদের সংঘর্ষ হয়। এ সময় পরিকল্পিতভাবে আইনজীবী সাইফুলকে হত্যা করা হয়। ঘটনার দিন ও পরদিন ভিডিও ফুটেজ দেখে ওই ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তবে তখন পর্যন্ত হত্যা মামলা না হওয়ায় পুলিশের করা মামলায় প্রথমে তাদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছিল।
- বিষয় :
- আইনজীবী সাইফুল
- আদালত
- গ্রেপ্তার