ঢাকা শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫

উদ্যোগ নেই সরকারের, ড্রেন নির্মাণ স্থানীয়দের টাকায়

উদ্যোগ নেই সরকারের, ড্রেন নির্মাণ স্থানীয়দের টাকায়

কক্সবাজারে স্থানীয়দের আর্থিক সহায়তায় ড্রেন ও ফুটপাত নির্মাণ করছে ব্যবসায়ী সংগঠন রামু চৌমুহনী বণিক সমবায় সমিতি - সমকাল

 ইব্রাহিম খলিল মামুন, কক্সবাজার

প্রকাশ: ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪ | ২৩:১৫

কক্সবাজারের রামু উপজেলার ব্যস্ততম বাণিজ্যিক এলাকা রামু চৌমুহনী। তবে বৃষ্টি হলেই এই এলাকা পরিণত হয় ছোটখাটো ‘সমুদ্রে’। ডুবে যায় দোকানপাটসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। তবে গত ১৫ বছরেও এ সংকট নিরসনে কোনো 
উদ্যোগ নেয়নি সরকার। শেষ পর্যন্ত স্থানীয়দের আর্থিক সহায়তায় ড্রেন ও ফুটপাত নির্মাণ করছে ব্যবসায়ী সংগঠন রামু চৌমুহনী বণিক সমবায় সমিতি।
রামু চৌমুহনী বণিক সমবায় সমিতির সভাপতি রুহুল আমিন রকি বলেন, প্রতিবছর বৃষ্টি হলেই রামু চৌমুহনীর অধিকাংশ দোকান পানির নিচে তলিয়ে যায়। ময়লা-আবর্জনার স্তূপে পরিণত হতো পুরো এলাকা। দুর্গন্ধে হাঁটাও কঠিন হয়ে যেত। কিন্তু প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে ঘুরেও কোনো সহযোগিতা পাওয়া যায়নি।
ব্যবসায়ীরা জানান, রামু চৌমুহনী ঘিরে গড়ে উঠেছে ছোট-বড় তিন হাজারের বেশি দোকান। রয়েছে বিভিন্ন যানবাহনের স্টেশন। এখান দিয়ে প্রতিদিন লক্ষাধিক মানুষ যাতায়াত করে। তবে সরকারের অবহেলা এবং স্থানীয় দুই আওয়ামী লীগ নেতার ঠেলাঠেলির কারণে জলাবদ্ধতা নিরসনে কোনো উদ্যোগই নেওয়া হয়নি। 
শেষে রামু চৌমুহনী বণিক সমবায় সমিতির উদ্যোগে স্থানীয়দের আর্থিক সহযোগিতায় জলাবদ্ধতা নিরসনে কাজ শুরু হয়। গত দুই মাসের কাজেই ৭ কিলোমিটার ড্রেন নির্মাণ হয়েছে। এখন ফুটপাত নির্মাণ এবং এর পাশে বিভিন্ন প্রজাতির ঔষধি ও ফুলের গাছ রোপণ করা হচ্ছে।
সরেজমিন দেখা যায়, রামু চৌমুহনীর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে খিজারী উচ্চ বিদ্যালয় পর্যন্ত দুই কিলোমিটার, পুলিশ বক্স থেকে স্বপ্নপুরী গেট পর্যন্ত তিন কিলোমিটার এবং চেরাংগারা বৌদ্ধমন্দির থেকে এভারেস্ট টিচিং স্কুল পর্যন্ত দুই কিলোমিটার ড্রেন নির্মাণ শেষ। অধিকাংশ স্থানে ফুটপাতও হয়ে গেছে। চলছে বিভিন্ন প্রজাতির গাছ রোপণ।
রামু এলাকার প্রবীণ ব্যবসায়ী আবদুল করিম সওদাগর বলেন, দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে চালের ব্যবসা করে আসছি। চৌমুহনীর জলাবদ্ধতা নিরসনে গত ১৫ বছরে কোনো কাজ হয়নি। তাই সরকারের অপেক্ষা না করে নিজেরাই উদ্যোগ নিয়েছি সমাধানের।
বণিক সমিতির সভাপতি রুহুল আমিন রকি জানান, জলাবদ্ধতা নিরসনে যেসব প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে, তা শেষ করতে অন্তত ৫০ 
লাখ টাকা দরকার। এখন পর্যন্ত ২৮ লাখ টাকা অনুদান পাওয়া গেছে। আশা করি বাকিটাও স্থানীয়রা দেবেন।
রামু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাশেদুল ইসলাম বলেন, রামু চৌমুহনী বণিক সমবায় সমিতির উদ্যোগে যে কাজটি হচ্ছে, তা পুরো উপজেলার জন্য দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। প্রতিটি জায়গায় সরকারের সহযোগিতার জন্য বসে না থেকে এভাবে সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে সংকট নিরসন করলে কোনো সমস্যা থাকবে না।

আরও পড়ুন

×