নারী শিক্ষার্থীকে নিপীড়ন-হেনস্থার অভিযোগ, পবিপ্রবির শিক্ষক সাময়িক বরখাস্ত

নারী শিক্ষার্থীকে হেনস্থার অভিযোগে পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পবিপ্রবি) এক শিক্ষককে সব শিক্ষা ও পরীক্ষা কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে তাকে। গত বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মো. মামুন অর রশিদ স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে এ তথ্য জানানো হয়েছে। 

সাময়িক বরখাস্ত হওয়া শিক্ষক হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অনুষদের দুর্যোগ ও ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এ.কে.এম আব্দুল আহাদ বিশ্বাস। তার বিরুদ্ধে পরিবেশ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অনুষদের ২০১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী এক শিক্ষার্থীর দেওয়া মানসিক নিপীড়ন, ব্যক্তিগত আক্রমণ, অপমানজনক আচরণ ও যৌন হেনস্থার অভিযোগ আনা হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে একটি তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে। 

তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে আনিত অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় তাকে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা ২০১৮-এর ১২(১) এবং পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী সাধারণ আচরণ ও শৃঙ্খলা বিধানের ৯(১) মোতাবেক সাময়িকভাবে চাকরি হতে বরখাস্ত করা হয়েছে। একইসঙ্গে তাকে কেন চাকরি হতে স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করা হবে না, সেই মর্মে ১০ কার্যদিবসের মধ্যে কারণ দর্শানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এছাড়া তার বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের হেনস্থা, পরীক্ষায় নাম্বার আটকে দেওয়াসহ, গ্রেড কম দেওয়া, টানা ৪-৫ ঘণ্টা অনলাইন ক্লাস নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। গত ১৮ নভেম্বর এ সংক্রান্ত একটি অভিযোগ ২০১৮-১৯ বর্ষের শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে রেজিস্ট্রার বরাবর দেওয়া হয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পরিবেশ বিজ্ঞান ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অনুষদের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘অধ্যাপক ড. আব্দুল আহাদ দীর্ঘদিন যাবৎ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে এক প্রকার ফ্যাসিবাদ চালিয়ে আসছেন। শিক্ষার্থীদের জিম্মি করে রীতিমতো তিনি বুলিং করা থেকে শুরু করে বিভিন্ন ভাবে হেনস্থা করেন। ভয়ে কেউ এ বিষয়ে কথা বলতে পারে না। আশা করছি, প্রশাসন এ বিষয়ে কার্যকর ব্যবস্থা নেবে।’

এর আগে এসব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গত ১১ ডিসেম্বর রেজিস্ট্রার কর্তৃক স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশের মাধ্যমে অধ্যাপক ড. এ. কে. এম. আব্দুল আহাদ বিশ্বাসকে দুর্যোগ ও ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা বিভাগের চেয়ারম্যান পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মামুনুর রশীদ বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। প্রাথমিক কিছু অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে সাময়িক অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। অধিকতর তদন্তের পরই এ বিষয়ে আমরা সিদ্ধান্ত নেব।’

বিষয়টি নিয়ে জানতে অধ্যাপক ড. এ.কে.এম আব্দুল আহাদ বিশ্বাসকে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তার মুঠোফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।