পরিত্যক্ত কোয়ার্টারে মাদকের আড্ডা

সুন্দরগঞ্জের ছাপড়হাটী ইউনিয়নে পরিত্যক্ত বিএস কোয়ার্টারের জানালা-দরজাও নেই সমকাল
সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২১ ডিসেম্বর ২০২৪ | ২২:৪১
‘৩০ বছর ধরে কৃষি অধিদপ্তরের বিএস কোয়ার্টারগুলো পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। দিনের পর দিন পড়ে থাকায় জঙ্গলে ভরে গেছে। সন্ধ্যার পর স্থানীয় এবং দূর থেকে আসা উঠতি বয়সের যুবকদের আড্ডাখানায় পরিণত হয়েছে এগুলো।’ কথাগুলো সুন্দরগঞ্জের ছাপড়হাটী ইউনিয়নের মণ্ডলেরহাট গ্রামের আব্দুল আহাদ বকুলের। তাঁর ভাষ্য, তারা পরিত্যক্ত কোয়ার্টারে বসে নেশা করে। প্রতিবাদ করার কেউ নেই। এতে সামাজিক পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। কোয়ার্টারগুলো সংরক্ষণের ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।
একই ধরনের তথ্য জানালেন শ্রীপুর ইউনিয়নের ধর্মপুর গ্রামের সাজ্জাদ হোসেন। কৃষি বিভাগ থেকে জানা গেছে, দেশ স্বাধীনের পর কৃষকদের পরামর্শ দিতে এবং বীজ সংরক্ষণের জন্য প্রতিটি ইউনিয়নে কৃষি কর্মকর্তাদের জন্য বিএস কোয়ার্টার নির্মাণ করা হয়। নিজ এলাকার কোয়ার্টারের বিষয়ে সাজ্জাদ বলছিলেন, সন্ধ্যার পর এলাকার যুবকরা এখানে মাদকের আড্ডা বসান। পাশাপাশি মোবাইল ফোনে জুয়া খেলে নৈতিক অবক্ষয়ের দিকে যাচ্ছেন তারা।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. রাশিদুল কবির বলেন, দীর্ঘদিন সংস্কার, মেরামত ও সংরক্ষণের অভাবে কোয়ার্টারগুলো ব্যবহারের উপযোগী নেই। ব্যবহার এবং সংরক্ষণ না করলে যা হয়, এসবের ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। সরকারি নির্দেশনা পেলে এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
জানা গেছে, ১৫টি ইউনিয়নের মধ্যে ১০টির কোয়ার্টার পরিত্যক্ত রয়েছে। দহবন্দ ইউনিয়নে একজন উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা থাকেন। বাকিগুলো ব্যবহারের অনুপযোগী। চণ্ডিপুর ইউপি চেয়ারম্যান মেহেদী মোস্তফা মাসুম বলেন, ইউনিয়ন পরিষদসংলগ্ন কোয়ার্টার পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে। এর আগে স্থানীয় একটি প্রতিষ্ঠান এটি ব্যবহার করছিল। এখন স্থানীয় যুবকদের আড্ডাখানায় পরিণত হয়েছে। এগুলো সংরক্ষণ করা প্রয়োজন।
প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্সে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের জন্য একটি করে কক্ষ বরাদ্দ রয়েছে বলে জানান উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান। তিনি বলেন, কর্মকর্তারা অফিসে বসে দাপ্তরিক কার্যক্রম সারেন। কৃষকদের পরামর্শ দেন। এদিকে সরকারি সম্পদ রক্ষণাবেক্ষণের নিয়ম রয়েছে বলে জানিয়েছেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. মাসুদুর রহমান। তাঁর ভাষ্য, সরকারি পরিত্যক্ত ভবনে অসামাজিক কার্যকলাপ চললে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
একই ধরনের কথা বলেন থানার ওসি মো. আব্দুল হাকিম আজাদ। তাঁর ভাষ্য, মাদকসেবী যেই হোক না কেন, অবশ্যই তাদের ব্যাপারে পুলিশের শক্ত অবস্থান রয়েছে। ইউএনও মো. নাজির হোসেন বলেন, সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
- বিষয় :
- মাদকের অভিযোগ